আগেও বিবাহ-বিচ্ছিন্না কন্যা পেনশন পেতেন। কিন্তু, ২০১৩-য় কেন্দ্র নির্দেশ দেয়, ডিভোর্স যদি বাবা-মা দু’জনেই মারা যাওয়ার পরে হয়, তা হলে আর কন্যা পারিবারিক পেনশন পাবেন না। কিন্তু সম্প্রতি ২০১৭-র এক নির্দেশে বলা হয়েছে, বাবা অথবা মা বেঁচে থাকতে থাকতেই ডিভোর্স মামলা শুরু হলে পেনশন পাওয়া যাবে। তবে পেনশনের যে অর্থমূল্য, মেয়ের রোজগার তার থেকে কম হতে হবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের পেনশনভোগী, টালিগঞ্জের জ্যোতিষ চন্দ্র সরকারের মৃত্যুর পরে তাঁর বড় মেয়ে অনিতা সরকার এই পেনশনের জন্য বহু দৌড়ঝাঁপ করেন। ১৯৯৪-য় মারা যান জ্যোতিষবাবু। তার ২২ বছর পরে সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (ক্যাট) ৬৩ বছরের অনিতাদেবীকে পেনশন দিতে বলেছে। এমনকী, ২২ বছর ধরে বকেয়া পেনশনও তাঁকে দিতে হবে বলে ক্যাটের দুই বিচারক বিদিশা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নন্দিতা চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন।
জ্যুলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ায় চাকরি করতেন জ্যোতিষবাবু। ১৯৭৪ সালে অবসর নেন। অনিতাদেবীর মা বীণাদেবী মারা যান ১৯৯২-এ। তার ২ বছর পরে জ্যোতিষবাবু মারা গেলে অনিতাদেবী পেনশনের জন্য আবেদন করেন। তা নাকচ হয়ে যায়। অনিতাদেবীর বিয়ে হয় ১৯৭৭-এ। ১৯৮৬ সালে তিনি ফিরে যান বাপের বাড়ি। ১৯৮৯ সালে ডিভোর্সের মামলা শুরু হয়। জিএসআই থেকে বলা হয়, অনিতাদেবী যেহেতু জ্যোতিষবাবু মারা যাওয়ার পরের বছর, ১৯৯৫ সালে আদালত থেকে ডিভোর্সের ডিক্রি পান, তাই তিনি আর পেনশন পাবেন না। ক্যাট-এ অনিতাদেবীর আইনজীবী কল্যাণ সরকার জানিয়েছেন, আগে ডিভোর্সি কন্যাদের পেনশন পাওয়া নিয়ে কড়াকড়ি ছিল না। ২০১৩ সালে কেন্দ্র নিয়ম করে দেয়, পেনশনভোগী বাবা-মা মারা যাওয়ার পরে যদি কন্যার ডিভোর্স হয়, তা হলে আর পারিবারিক পেনশন পাবেন না। ২০১৬ সালে ক্যাট-এ অনিতাদেবী মামলা করার পরে কল্যাণবাবুর চোখে পড়ে ২০১৭ সালের ১৯ জুলাই কেন্দ্রের নতুন বিজ্ঞপ্তি। সেই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ডিভোর্সের মামলা যদি বাবা-মায়ের যে কোনও এক জনের জীবিতকালে শুরু হয়, তা হলেও ডিভোর্সের পরে পারিবারিক পেনশন পাবেন কন্যা।
রাজ্য সরকারের পারিবারিক পেনশনের ক্ষেত্রে অবশ্য বিবাহ-বিচ্ছিন্না কন্যা পারিবারিক পেনশন পেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের মৃত্যুর পরে ডিভোর্স হলেও অসুবিধা নেই। শর্ত, সেই কন্যার রোজগার মাসে ২৬০০ টাকার কম হতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy