মায়ে ছায়ে গায়ে গায়ে।
প্রসবকালে এবং তার পরে পরে সদাসর্বদা মা ও শিশুর শারীরিক ও মানসিক ঘনিষ্ঠতা যাতে বজায় থাকে, সে-দিকে সব থেকে বেশি সতর্ক নজর রাখতে পারেন প্রসূতির স্বামী অথবা কোনও মাতৃসমা নিকটাত্মীয়া। এ বার সরকারি হাসপাতালে ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেই ব্যবস্থাই করছে রাজ্য সরকার। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে প্রসূতির জীবনসাথীই হতে পারেন ‘প্রসবসাথী’। সঙ্গে থাকতে পারেন কাছের কোনও আত্মীয়াও। বিদেশে তো বটেই, এ দেশেও বেসরকারি হাসপাতালে এই ব্যবস্থা চালু আছে।
শিশু-বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাতৃগর্ভের নিবিড় অন্তরঙ্গতা ধাক্কা খায় প্রবল ভাবে। তাই প্রসবের অব্যবহিত পরে বেশ কিছুটা সময় মায়ের শরীরের সঙ্গে নবজাতকের শারীরিক স্পর্শ ও সংলগ্নতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মায়ের বুকে মাথা দিয়েই মায়ের হৃৎস্পন্দন শোনে নবজাতক। গর্ভে থাকার সময়েও একমাত্র ওই শব্দটুকুই শুনতে পায় শিশু। কি গর্ভে আর কি গর্ভের বাইরে, সেই শব্দটাই শিশুর কাছে মায়ের আশ্রয়ের একমাত্র আশ্বাস। মা ও নবাগতের গায়ে গায়ে স্পর্শেযাতে কোনও রকম খামতি না-থাকে, সেটা সব থেকে বেশি নিশ্চিত করতে পারেন প্রসূতির স্বামী। আবার প্রসবের সময়ের বিভিন্ন ভীতির কারণে অন্তঃসত্ত্বার মানসিক স্বাস্থ্য বা স্বাচ্ছন্দ্য ব্যাহত হয়। হাসপাতালে একা থাকতে হলে সেই ভীতি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফলে অক্সিটোসিন হরমোন কম নিঃসৃত হয়ে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে বলে চিকিৎসকদের অভিমত। তাই ওই স্পর্শকাতর সময়ে নিঃসঙ্গতার উপশম হয়ে উঠতে পারে নিকটতম মানুষটির সঙ্গ। সেটা সম্ভব না-হলে সেই ভূমিকা নিতে পারেন অতিঘনিষ্ঠ কোনও আত্মীয়াও।