Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Manish Shukla

মণীশ খুনে FIR টিটাগড়-ব্যারাকপুর বিদায়ী পুরপ্রধানদের বিরুদ্ধে

এলাকার বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, পরিকল্পনা করে তাঁকে খুন করিয়েছেন শাসক দলের নেতারা।

মণীশের বাবার করা এফআইআরে নাম রয়েছে প্রশান্ত চৌধুরী (বাঁ দিকে) এবং উত্তম দাসের।—নিজস্ব চিত্র।

মণীশের বাবার করা এফআইআরে নাম রয়েছে প্রশান্ত চৌধুরী (বাঁ দিকে) এবং উত্তম দাসের।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২০ ১৪:৩৯
Share: Save:

ব্যারাকপুর এবং টিটাগড় পুরসভার প্রশাসক (তৃণমূল কংগ্রেসের দুই বিদায়ী পুরপ্রধান) সহ সাত জনের বিরুদ্ধে ছেলেকে খুনের অভিযোগ এনে এফআইআর করলেন বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লের বাবা চন্দ্রমনি শুক্ল।

টিটাগড় থানায় করা লিখিত অভিযোগে চন্দ্রমনি জানিয়েছেন, টিটাগড় পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রশান্ত চৌধুরী, ব্যারাকপুর পুরসভার বিদায়ী পুরপ্রধান উত্তম দাস এই খুনের ‘মাস্টারমাইন্ড’। লিখিত অভিযোগে মণীশের বাবা জানিয়েছেন, উত্তম দাস এবং প্রশান্ত চৌধুরীই এলাকার মহম্মদ খুররম খান, রঞ্জিৎ পাল ওরফে রুনু, বাঁটুল, আরমান মণ্ডল, ভোলা প্রসাদ-এর মতো কুখ্যাত দুষ্কৃতীদের দিয়ে খুন করিয়েছে। অভিযোগ, গোটা পরিকল্পনায় ছিল টিটাগড় এলাকার আরও দুই তৃণমূল নেতা রাজেন্দ্র যাদব এবং নাজির খান।

প্রশান্ত চৌধুরীকে যদিও এ দিন দাবি করেন, ‘‘খুররমের পক্ষে এ রকম পরিকল্পনা করে খুন করা অসম্ভব। এ আরও অনেক বড় কোনও পেশাদার অপরাধীর কাজ।” তিনি নিজের সম্পর্কে অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন,‘‘শুনেছি আমার বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। দলের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করছি। দল নির্দেশ দিলে আদালতে জামিনের আবেদন জানাব।”

মণীশ খুনে এফআইআর।

আরও পড়ুন: আততায়ী দাঁড়িয়ে ছিল মণীশের গা ঘেঁষেই, সামনে এল হত্যাকাণ্ডের ফুটেজ​

টিটাগড় থানা ইতিমধ্যেই এই আটজন এবং অজ্ঞাতপরিচয় অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধিকর ৩০২ (খুন) ৩৪ (একসঙ্গে অপরাধ করা) এবং ১২০ বি (ষড়যন্ত্র)-র ধারায় মামলা শুরু করেছে।

চন্দ্রমণির অভিযোগ, রাজনৈতিক স্বার্থেই শাসক দলের এই নেতারা তাঁর ছেলেকে খুন করেছে। যদিও মঙ্গলবার সকালেও তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, ব্যাক্তিগত আক্রোশ থেকেই খুন করা হয়েছে মণীশকে। এখনও রাজনৈতিক কোনও কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাঁদের দাবি, ২০১৫ সালে টিটাগড়ের এজে রোডের বাসিন্দা মহম্মদ ইসমাইল টিটাগড় স্টেশন রোডে খুন হন। ওই ঘটনায় এফআইআরে মণীশ অভিযুক্ত না হলেও পরবর্তীতে মণীশের নাম উঠে আসে তদন্তে। ওই মহম্মদ ইসমাইলের ছেলে খুররম খান। স্থানীয় বাসিন্দাদের একটা অংশও এ দিন স্বীকার করেন খুররমের সঙ্গে মণীশের দীর্ঘদিনের সঙ্ঘাত ছিল। এর আগে ২০১৩ সালে টিটাগড়ে মণীশের ওপর একটি হামলা হয়। সেই ঘটনাতেও উঠে আসে খুররমের নাম।

আরও পড়ুন: মেয়ের জন্য নিজের ভাবমূর্তি বদলাতে চেয়েছিলেন মণীশ​

তবে খুনের সঙ্গে খুররমের যোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তাঁর কাকা রাজু খান। তিনি বলেন,‘‘সঙ্ঘাত ছিল। কিন্তু তার মানে এই নয় যে খুররম খুন করবে বা করাবে।” গত কয়েক বছরে খুররম অপরাধ থেকে সরে এসে ব্যাবসায় মন দিয়েছিলেন বলেও দাবি রাজুর। তিনি বলেন, খুররমের সঙ্গে যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই গুলাব শেখ খুররমের কাপড়ের ব্যাবসার কর্মী। যদিও পুলিশ এখনও স্পষ্ট করেনি খুররমের এই খুনের সঙ্গে ঠিক কী যোগ। খুররম নিজে ঘটনাস্থলে ছিলেন, না অন্য কাউকে দিয়ে খুন করিয়েছে তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি সিআইডি বা ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা। এফআইআরে নাম থাকা তৃণমূলের দুই বিদায়ী পুরপ্রধান এবং স্থানীয় নেতদের পুলিশ গ্রেফতার করবে কি না, তা নিয়েও কোনও মন্তব্য করেননি পুলিশ কর্তারা। ব্যারাকপুর পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘তদন্ত গোটাটাই তদারক করা হচ্ছে নবান্ন থেকে। প্রতিটি অগ্রগতি জানানো হচ্ছে সেখানে। নবান্ন যে রকম নির্দেশ দেবে সেই অনুসারেই পদক্ষেপ করা হবে।”

এলাকার বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, বিধানসভা ভোটে নিজেদের রাস্তা মসৃণ করতেই পরিকল্পনা করে তাঁকে খুন করিয়েছেন শাসক দলের নেতারা। মণীশ যখন তৃণমূলেও ছিলেন তখনও তৃণমূলের দলীয় সমীকরণে উত্তম দাস পরিচিত ছিলেন মণীশ বিরোধী গোষ্ঠীর বলেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Manish Shukla BJP Crime Murder TMC Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE