Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ফের আগুন, পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু

বুধবার, বেলা পৌনে ১১টা নাগাদ হাসপাতালের পাঁচ তলায় মনস্তত্ত্ব বিভাগের করিডরে দেওয়াল-ফ্যানের কয়েল পুড়ে গল-গল করে ধোঁয়া বেরোতে থাকে। নিমেষে আতঙ্ক ছড়ায়। ধোঁয়ার কুণ্ডলি জানলা গলে ছড়িয়ে পড়তেই, শুধু পাঁচতলা নয়, হাসপাতালের আনাচকানাচে চিকিৎসকের অপেক্ষায় বসে থাকা রোগী আর তাঁদের বাড়ির লোকজন হুড়মুড়িয়ে নামতে থাকেন সিঁড়ি দিয়ে। 

রোগীকে নিয়ে হুড়োহুড়ি। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

রোগীকে নিয়ে হুড়োহুড়ি। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৯ ০৩:১৪
Share: Save:

আবার আগুন এবং আড়াই বছর আগের স্মৃতি ফিরিয়ে, পদপিষ্ট হয়ে ফের মৃত্যু হল এক রোগীর। ঘটনাস্থল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ-হাসপাতাল।

বুধবার, বেলা পৌনে ১১টা নাগাদ হাসপাতালের পাঁচ তলায় মনস্তত্ত্ব বিভাগের করিডরে দেওয়াল-ফ্যানের কয়েল পুড়ে গল-গল করে ধোঁয়া বেরোতে থাকে। নিমেষে আতঙ্ক ছড়ায়। ধোঁয়ার কুণ্ডলি জানলা গলে ছড়িয়ে পড়তেই, শুধু পাঁচতলা নয়, হাসপাতালের আনাচকানাচে চিকিৎসকের অপেক্ষায় বসে থাকা রোগী আর তাঁদের বাড়ির লোকজন হুড়মুড়িয়ে নামতে থাকেন সিঁড়ি দিয়ে।

ফল যা হওয়ার তা-ই হয়েছিল। বুধবার সকালে, ২০১৬ সালের ২৭ অগস্ট, যেন অবিকল জলছবি হয়ে নেমে এসেছিল মেডিক্যাল কলেজের অপরিসর সিঁড়িতে— জনস্রোতের ধাক্কায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একের পর এক মানুষ পড়ে যাচ্ছেন, আর তাঁদের উপর দিয়ে প্রাণ ভয়ে ছুটে চলেছেন বাকিরা।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ঘটনাস্থলেই পদপিষ্ট হয়ে মারা যান অণিমা মণ্ডল নামে মধ্য চল্লিশের এক মহিলা। কোমরে ব্যথার চিকিৎসা করাতে বেলডাঙার মাড্ডা গ্রাম থেকে আসা তাঁর পরিবারের এমনই দাবি। গভীর রাত পর্যন্ত খোঁজ নেই এক শিশুরও। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশু-নিখোঁজের ঘটনা মানতে চাননি।

অণিমার মৃত্যুও যে পদপিষ্ট হয়েই, হাসপাতাল কর্তারা তা-ও অস্বীকার করেছেন। ওই মহিলার পরিবারের দাবি, মৃতদেহটি লাশকাটা ঘরে চালান করে দিয়ে তাঁদের জানানো হয়েছিল, অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ওই মহিলার।

মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সপুার দেবদাস সাহার দাবি, ‘‘হাসপাতালে আগুন লাগেনি। শর্টসার্কিট থেকে আগুনের স্ফুলিঙ্গ দেখা গিয়েছিল মাত্র। তাতেই অনেকে আতঙ্কিত হয়ে নীচে নামতে গিয়েছিলেন। সেই ঘটনায় পদপিষ্ট হয়ে ৬৫ জন জখম হয়েছেন। ২৭ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে এই ঘটনায় এখনও আমাদের কাছে কারও মৃত্যুর খবর নেই।’’ তা হলে অণিমা মারা গেলেন কী করে?

সুপারের নির্বিকার জবাব, ‘‘তাঁকে কারা, কোথা থেকে এনেছিলেন, কি ভাবে মৃত্যু তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’

অণিমার মেয়ে শেফালি, এ দিন মা এবং দুই কন্যাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। হাসপাতালের টিকিট দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘‘মায়ের কোমরে ব্যাথা। এক তলার বর্হিবিভাগে তাঁকে বসিয়ে দুই মেয়েকে নিয়ে ওপরে এসেছিলাম শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে।’’ আতঙ্ক ছড়ায় তখনই। তিনি জানান, মা’কে খুঁজেই পাচ্ছিলেন না। পরে লাশকাটা ঘরে মায়ের থ্যাঁৎলানো দেহ খুঁজে পান। এর পরেই ওই মহিলার পরিবারের লোকজন উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালের সহকারী সুপার’কে মারধর করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Murshidabad Medical College
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE