ছাই হাতড়ে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
আচমকাই ঝড় উঠেছিল রবিবার বিকেলে।
আর সেই ঝোড়ো হাওয়ার আধ ঘণ্টার তাণ্ডবে পুড়ে খাক হয়ে গেল চাপড়ার তালুকহুদা গ্রামের হাইস্কুল পাড়ার পাশাপাশি আটটি বাড়ি। সর্বস্ব হারালেন বেশ কিছু মানুষ।
ঠিক কী ঘটেছিল রবিবার? স্থানীয় সূত্রে খবর, উনুনে হাড়ি চাপানো হয়েছিল এক ঘরে। ঝোড়ো হাওয়ায় নিমেষে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে। টেরই পাননি গৃহকর্ত্রী। ক্রমে আগুন ছড়াতে থাকে চারপাশের বাড়িগুলিতে। আধ ঘণ্টা পরে যখন ঝড় থামল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এলাকার লোকজন খবর দেন কৃষ্ণনগরের দমকল কেন্দ্রে। কিন্তু দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছতে দেড় ঘণ্টা লেগে যায়। তাদের আসার আগেই গ্রামের লোকজনের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। কিন্তু তত ক্ষণে ছাই হয়ে গিয়েছে ওই আটটি বাড়ি।
চোখের জল মুছতে মুছতে গ্রামেরই বাসিন্দা কায়েম মণ্ডল বললেন, ‘‘এলাকারই একটি বাড়ির ছাদে কাঠের উনুনে রান্না চলছিল। সেই সময় হঠাৎ ঝড় ওঠে। উনুনের সেই আগুনই ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের বাড়িগুলিতে। সব শেষ হয়ে গেল চোখের পলকে।’’ আগুন গিলে খেয়েছে কায়েমের বাড়িও। গ্রামেরই এক মহিলা সুস্মিতা মণ্ডল জানান, উনুনের আগুন ছিটকে গিয়ে পড়েছিল খড়ের গাদায়। তার পর তা মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ‘‘কিচ্ছু বাঁচেনি। ঘরের আসবাবপত্র থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে সব’’, বললেন তিনি। পুড়ে গিয়েছে হায়দার শেখ ও মাদার শেখের পাকা বাড়ির একাংশ। বাড়ির খাট, চেয়ার-টেবিল-আলমারি সবই পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে। সব বাড়িতেই গবাদি পশু ছিল। আগুনে জখম হয়েছে তারাও।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আপাতত আশ্রয় দিয়েছেন পড়শিরা। হায়দার শেখের আকুতি, কয়েক মিনিটের ঝড়ে আস্ত সংসারটাই তছনছ হয়ে গেল। তাঁদের ক্ষোভ, প্রশাসনের কাছ থেকে কোনও সাহায্য মেলেনি। সব পরিবার পর্যাপ্ত ত্রিপলও পায়নি। ত্রিপল পেলে আপাতত ভাঙা সংসারটা সেখানেই পাতা যেত।
বৃত্তিহুদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের নুসরত জাহানের অবশ্য দাবি, ‘‘আমরা রাতেই তাদের ত্রিপলের ব্যবস্থা করেছি। আন্যান্য ত্রাণসামগ্রী যাতে দ্রুত মেলে, তার জন্য ব্লক অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy