গত কয়েক বছর ধরে নেওয়া প্রকল্পগুলি যেমন চলছে তেমনই চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নিজস্ব আয় কমার ফলে বাজারি ঋণের উপর নির্ভরতা বেড়েছে রাজ্যের। তার পরেও উন্নয়নের খরচে আপাতত কোনও রাশ টানবে না নবান্ন। বরং, গত কয়েক বছর ধরে নেওয়া প্রকল্পগুলি যেমন চলছে তেমনই চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারের কামাখ্যাগুড়ির সভায় মুখ্যমন্ত্রী এ কথা আরও এক বার স্পষ্ট করেছেন।
মমতার মন্তব্য, ‘‘কেন্দ্র সমস্ত আয়ের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। নোটবন্দির নামে বিজেপি জুলুম করেছে। জিএসটির নামে ব্যবসা নষ্ট করে দিয়েছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আর্নিং হচ্ছে না, শুধু বার্নিং হচ্ছে। আমি তো বলতে পারি না গরিব লোককে চাল, বিনা পয়সার চিকিৎসা, স্কুলের অনুদান, শিক্ষাশ্রী, সবুজশ্রী বা কন্যাশ্রী দেব না?’’
মুখ্যমন্ত্রীর আরও দাবি, ‘‘দেশে কয়েক লক্ষ মানুষ নোটবন্দির জন্য চাকরি হারিয়েছেন। বেকার হয়েছেন। বাংলা একমাত্র জায়গা। এই বাধা সত্ত্বেও ৮০ লক্ষ চাকরি হয়েছে। সিপিএমের ৪০ হাজার কোটি টাকা দেনা থাকা সত্ত্বেও, কেন্দ্রের এত বঞ্চনা থাকা সত্ত্বেও বাংলায় আমরা কাজ করছি।’’
তাঁর অভিযোগ, ‘‘নোটবন্দি-জিএসটি করে ভারতবর্ষের অথনীতি ভেঙে দিয়েছে। রাজ্য গুলির অর্থনীতি ভেঙে দিয়েছে। এক বছর ধরে কোন কাজ হচ্ছে না। তাও লড়াই ছাড়ব না।’’
২০১৭-১৮ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত সরকারের আয়-ব্যয়ের যে হিসাব তৈরি হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে,আয় কমলেও সরকারি ব্যয় মোটেই কমানো যায়নি। তার ফলে সেই খরচের ধাক্কা সামলাতে প্রতি মাসে গড়ে ৩৭০০ কোটি টাকা করে ধার করতে হয়েছে রাজ্যকে। এমন পরিস্থিতি আগেও কখনও হয়নি।
কেন সরকারকে খরচের বোঝা বইতে হচ্ছে তা ব্যাখ্যা করে মুখ্যমন্ত্রী সভায় জানান, আশা, আইসিডিএস, সিভিক ভলেন্টিয়ার্স পঞ্চায়েত কর্মী, পুরসভা কর্মী— সবাইকে দেখতে হচ্ছে। এঁদের বেতন তো আছেই তার পরেও স্বাস্থ্যসাথীতে ঢুকিয়ে নেওয়া হয়েছে। সিভিক ভলেন্টিয়ার্সরা আগে সাড়ে তিন হাজার টাকা পেতেন। এখন সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা পান। পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন বেড়েছে। কন্যাশ্রী প্রকল্পে পঁয়তাল্লিশ লক্ষ মেয়ে রয়েছে। তাদের জন্য বছরে ৫০০০ কোটির বেশি খরচ হয়। আশা-র মেয়েরা আগে কেন্দ্রের থেকে ৮০০ টাকা পেতেন। সেটা এখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাও রাজ্য আশা কর্মীদের বেতন দিয়ে দু’হাজার করে যাচ্ছে মাথায় রাখবেন। আইসিডিএস-প্রকল্পের নব্বই শতাংশ দিত কেন্দ্র। এখন ষাট শতাংশ টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন,‘‘ কী করে চলবে? চলবে কী করে প্রজেক্টটা? আমি কি খরচ বন্ধ করে দেব।’’
অর্থ কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী আসলে বোঝাতে চেয়েছেন পরিকল্পনা বহির্ভূত খাতের মোটা অংশ ব্যয় হয় বেতন, পেনশন, ভাতা খাতে। সে সব বন্ধ করা মুশকিল। তাই নিজস্ব আয় না হলে ধার করা ছাড়া উপায় নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy