নদীপাড়ের বাসিন্দাদের আশঙ্কা বাড়িয়ে বুধবার সকালে নবদ্বীপের স্বরূপগঞ্জে গঙ্গার জল বিপদ সীমা অতিক্রম করল। জেলা সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ জুলাই রাতে গঙ্গা এখানে সর্বোচ্চ বিপদসীমা ৮.৪৪ সেন্টিমিটার ছাড়িয়ে যায়। বুধবার সকালে গঙ্গার জলস্তর চরম বিপদসীমা ৯.০৫ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে। বুধবার বিকেল পাঁচটায় স্বরূপগঞ্জে গঙ্গার জলস্তর ছিল ৯.১১। যা চরম বিপদ সীমা থেকে ৬ সেন্টিমিটার উপরে।
অন্য দিকে, এ দিন সকালেও মাত্র তিন ফুট নীচে জল ছিল নদিয়ার কালীগঞ্জ ব্লকের গঙ্গা সংলগ্ন প্রায় ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ জগৎখালি বাঁধে। সেই জল একটু একটু করে বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রশাসনের উদ্বেগ। এই বাঁধের উপরেই নির্ভর করছে কালীগঞ্জ-সহ একাধিক ব্লকের ভাগ্য। প্রশাসনিক কর্তাদের কথায়, আর তিন ফুট উঠলেই বাঁধ উপচে জল ঢুকতে শুরু করবে। বিরামহীন বৃষ্টিপাতের কারণে এই জলস্ফীতি বলে মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৫৩.৪ মিলিমিটার। নদিয়া জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় গত এক সপ্তাহে বৃষ্টিপাত ৩০০ মিলিমিটার ছাড়িয়েছে।
অনেক বছর পর নবদ্বীপে এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গঙ্গার দু’পাড়ের বাসিন্দারা বৃষ্টি এবং তার জেরে ফুলেফেঁপে ওঠা নদীর জলের গতিপ্রকৃতি নিয়ে আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। ঘন ঘন গঙ্গার পারে গিয়ে জল কতটা বাড়ল, তা দেখার প্রবণতায় সেই উদ্বেগের ছবি ধরা পড়ছে। নবদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তাপস ঘোষ এ দিন জানান, নবদ্বীপ ব্লকের সবক’টি পঞ্চায়েত কার্যত জলবন্দি। ফকিরডাঙ্গা-ঘোলাপাড়ার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। মহিশুরা এবং মায়াপুর-বামুনপুকুর ২ নম্বর পঞ্চায়েতের অবস্থা শোচনীয়। তিনি বলেন, “যে ভাবে বৃষ্টি হয়ে চলেছে এবং পাল্লা দিয়ে নদীর জল বাড়ছে, তাতে নবদ্বীপে বন্যা এক সুতোর উপর দাঁড়িয়ে আছে। ইতিমধ্যে প্রতিটি পঞ্চায়েতের অধিকাংশ চাষের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। প্রায় ২০০ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে অস্থায়ী ভাবে সরানো হয়েছে।”