E-Paper

নেপালের জল ঢুকে বন্যা বাধাবে: মমতা

উত্তরবঙ্গে যাওয়ার জন্য রবিবার দুপুরে বিমান ধরার আগে কেন্দ্রীয় সরকারকে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে নিশানা করে মমতা বলেন, “একটা টাকাও কেউ দেয়নি। কেউ খোঁজ নেয়নি।”

কৌশিক চৌধুরী , সৌমিত্র কুণ্ডু

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৫
গজলডোবা এলাকায় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত পরিবারের এক মহিলা মুখ্যমন্ত্রী ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন, উত্তরকন্যায় তোলা। ছবি: বিনোদ দাস।

গজলডোবা এলাকায় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত পরিবারের এক মহিলা মুখ্যমন্ত্রী ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন, উত্তরকন্যায় তোলা। ছবি: বিনোদ দাস।

নেপালে কোশী নদী থেকে জল ছাড়ায় এ রাজ্যের একাধিক জেলায় বন্যার আশঙ্কা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্র সরকার ফরাক্কা ব্যারাজে দুই দশক ড্রেজিং না করায়, বিহার হয়ে গঙ্গা দিয়ে সে জল বাংলায় এলে বিপত্তি বাধাতে পারে বলে অনুমান তাঁর। সে সূত্রেই রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রের তরফে আর্থিক সহযোগিতা বা সাহায্য মেলেনি বলেও অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

উত্তরবঙ্গে যাওয়ার জন্য রবিবার দুপুরে বিমান ধরার আগে কেন্দ্রীয় সরকারকে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে নিশানা করে মমতা বলেন, “একটা টাকাও কেউ দেয়নি। কেউ খোঁজ নেয়নি।” মমতার বক্তব্য, “দু’দফায় চিঠি লিখেছি। উত্তরও দেয়নি। কেন্দ্রের প্রতিমন্ত্রীরা জবাব পাঠান। তবে আবার চিঠি লিখব।” কেন্দ্রের প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের পাল্টা মন্তব্য, “নিজে কিছু করবেন না। খালি অন্যের ঘাড়ে দায় চাপাবেন! কখনও ঝাড়খণ্ড, কখনও বিহারের উপরে দোষ চাপাচ্ছেন।”

রবিবার শিলিগুড়ির ‘উত্তরকন্যা’য় উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির সঙ্গে মুর্শিদাবাদের একাংশের প্রশাসন, পুলিশ এবং বিভিন্ন বিভাগগুলোকে নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ ছাড়া আরও ১০ জন সচিব ছিলেন বৈঠকে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ছ’লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে নেপালের কোশী নদী থেকে। এই জল বিহারের গঙ্গা হয়ে ফরাক্কায় ঢুকবে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বোর্ড কেন্দ্রের অধীনে। ফরাক্কা ব্যারাজে ড্রেজিং করে না। না হলে, ফরাক্কায় আরও জল জমা রাখতে পারত। যার জন্য বিহারও ডোবে, বাংলাও ডোবে।” তাঁর দাবি, “ড্রেজিং হলে (ফরাক্কা) অন্তত চার লক্ষ কিউসেক জল ধরতে পারত।”

কোশী নদী বিহারের ভাগলপুরের কাছে গঙ্গায় মিশেছে। সেচ দফতর সূত্রের দাবি, গঙ্গায় জল বাড়লে, তা ফরাক্কায় এসে ধাক্কা খাবে। মালদহের ভূতনির চর ও মুর্শিদাবাদে শমসেরগঞ্জে বড় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ভূতনি ছাড়াও, উত্তর মালদহের গাজল, রতুয়া, হরিশ্চন্দ্রপুর, ফরাক্কার সুতি, ভগবানগোলা, লালগোলা-সহ আরও কিছু এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহারের একাধিক এলাকায় বিভিন্ন নদীর জল বাড়ায় পরিস্থিতি নজরে রাখতে বলা হয়েছে। যতক্ষণ জলস্ফীতি না কমছে এবং আবহাওয়া দফতর সবুজ সঙ্কেত না দিচ্ছে, ততক্ষণ বাসিন্দাদের ত্রাণ শিবিরে থাকতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, কৃষিজীবীদের জন্য শস্যবিমায় নাম নথিভুক্তির মেয়াদ সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে বাড়িয়ে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রবিবার সকালেই উত্তরবঙ্গে পৌঁছন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তিনি ঘুরে দেখেন গজলডোবা ব্যারাজের পরিস্থিতি। মমতা বলেন, “মুখ্য সচিবকে বলেছি, যত দিন জলস্ফীতি না কমে, দু’জন করে সচিব, আধিকারিকেরা উত্তরের ছটি জেলায় দায়িত্বে থাকবেন। জেলাশাসকদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mamata Banerjee Nepal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy