জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত চারশো ছাপিয়েছে। আবর্জনা সাফাই, জমা জল পরিষ্কারের পাশাপাশি সচেতনতা প্রচারেও জোর দিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রশাসন। ব্যানার, হোর্ডিং লাগানো, স্কুল-কলেজে সচেতনতা শিবিরের মতো নানা কর্মসূচি হচ্ছে। সেই প্রচারে আরও গতি আনতে এ বার লোকশিল্পীদেরও মাঠে নামাচ্ছে জেলা প্রশাসন।
ঠিক হয়েছে ডেঙ্গি সচেতনতায় জেলায় শুরু হবে ট্যাবলো প্রচার। জেলার তিনটি মহকুমায় একটি করে ট্যাবলো বের করানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেই ট্যাবলোতেই নাচ-গান করবেন লোকশিল্পীরা। তাতে থাকবে সচেতনতার বার্তা। ট্যাবলো থেকে লিফলেটও বিলি হবে। তাতে জানানো হবে, ডেঙ্গির উপসর্গ কী, কী ভাবে এই রোগ এড়ানো যেতে পারে প্রভৃতি। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “গ্রামগঞ্জের আরও বেশি মানুষকে সচেতন করতে লোকশিল্পীদের মাধ্যমে প্রচার হবে। আমরা তথ্য-সংস্কৃতি দফতরে লিফলেট পাঠিয়ে দিয়েছি। ব্যানার-ফেস্টুনও পাঠানো হয়েছে।”
বাউল, ঝুমুর, পটের গান থেকে ধামসা-মাদলের তালে আদিবাসী নাচ— জঙ্গলমহলের এই জেলায় লোকশিল্পের নানা রূপ। এ সবের একটা সহজাত আবেদন রয়েছে জেলার প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কাছে। সে কথা মাথায় রেখেই সরকারি প্রকল্পের প্রচারে লোকশিল্পীদের ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। লোকপ্রসার প্রকল্পে নথিভুক্ত লোকশিল্পীরা মাসে এক হাজার টাকা করে ভাতাও পান। তার বাইরে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিলে মেলে এক হাজার টাকা। এর আগে সহায়কমূল্যে ধান বিক্রি, ম্যালেরিয়া নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে লোকশিল্পীরা প্রচার করেছেন। প্রশাসনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, এতে সুফলও মিলছে। তাই ডেঙ্গি রুখতেও এই পন্থা কাজে আসবে বলেই প্রশাসনের আশা।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তার মতে, “লোকশিল্পের প্রতি অনেকের একটা টান রয়েছে। বাউল, ঝুমুর গান শুনতে অনেকে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে পড়েন। তাই ডেঙ্গি সচেতনতার ট্যাবলো যেখানে দাঁড়াবে, সেখানে ভিড় হবেই। তখনই ডেঙ্গি মোকাবিলার নানা দিক সম্পর্কে মানুষ জানতে পারবেন। সচেতন হতে পারবেন।” জেলার তথ্য-সংস্কৃতি আধিকারিক অনন্যা মজুমদারেরও বক্তব্য, “আগেও লোকশিল্পীরা সচেতনতামূলক প্রচার করেছেন। ফের করবেন।”
সরকারি ভাবে জেলায় এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৪২৩। খড়্গপুরে আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি। ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে থাকায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সচেতনতা প্রচারকেই হাতিয়ার করছে প্রশাসন।
ডেঙ্গি রোধে আগেই গানের সিডি তৈরি করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। লোকশিল্পীদের ট্যাবলোয় সেই গানও বাজবে। শোনা যাবে, ‘জ্বর আসিলে পরে, রক্ত পরীক্ষা করে, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চলে যাও রে/ চারপাশে আগাছা হলে, কিংবা জল জমলে, তাড়াতাড়ি পরিষ্কার করাও রে।’ জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘গানের কথাগুলো খুব সহজ। আশা করি মানুষের মনে জায়গা করে নেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy