Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

৪০ টাকাতেই মাংস-ভাত যাদবপুরে

দীর্ঘকালের পড়ুয়া-প্রিয় এবং তুলনামূলক ভাবে সস্তার ক্যান্টিন তুলে দিয়ে ফুড কোর্ট খোলার উদ্যোগ চলছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এবং নতুন ব্যবস্থায় বাঙালির খাবার ঠাঁই পাবে না বলেই শোনা যাচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৬
Share: Save:

মহানগরী কলকাতার দু’প্রান্তের দুই বিশ্ববিদ্যালয় খিদে মেটাতে পুরোপুরি আলাদা দুই রাস্তা ধরেছে।

দীর্ঘকালের পড়ুয়া-প্রিয় এবং তুলনামূলক ভাবে সস্তার ক্যান্টিন তুলে দিয়ে ফুড কোর্ট খোলার উদ্যোগ চলছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এবং নতুন ব্যবস্থায় বাঙালির খাবার ঠাঁই পাবে না বলেই শোনা যাচ্ছে।

কিন্তু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় হাঁটছে একেবারে ভিন্ন পথে। এবং সেই পথ বাংলা আর বাঙালিরই পথ। সেখানে গাঁধী ভবনের পাশের ক্যান্টিনে ২০-৪০ টাকা ফেললেই মিলছে ভাত, তরকারি, মাছ, মাংস। খাওয়া যাচ্ছে ভরপেট। ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-কর্মী ছাড়াও প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা কাজে আসেন বহু মানুষ। তাঁদের সকলের কথা ভেবেই যাদবপুরে ভর্তুকির ক্যান্টিনে চালু করা হয়েছে সস্তায় ভরপেট ভাত-মাছ খাওয়ার তৃপ্তিদায়ক ব্যবস্থা।

প্রতিদিন গড়ে ৩৫০ জন খাচ্ছেন ওই ক্যান্টিনে।

সত্তরের দশকে চালু হয়েছিল ওই ক্যান্টিন। আগে পাওয়া যেত নানা ধরনের স্ন্যাক্স। এখন পাওয়া যাচ্ছে ভাত, তরকারি, মাছ, মাংস। ক্যান্টিন পরিচালনার মূল দায়িত্বে থাকা ডিন অব স্টুডেন্টস রজত রায় জানালেন, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তুকি দেয় বলেই এই দামে খাবার দেওয়া যাচ্ছে। ভর্তি চলাকালীন দূরদূরান্ত থেকে বহু পড়ুয়া অভিভাবকদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। এই সস্তার ক্যান্টিন থাকায় তাঁদেরও খুব সুবিধে হয়েছে। এ বার ভর্তি পর্বে নবাগত এবং অভিভাবকের খুব ভিড় হয়েছিল ওই ক্যান্টিনে।

ডিন অব স্টুডেন্টস জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পড়ুয়া বেশ দূর থেকে আসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে মেসেও থাকেন অনেকে। তাঁরা দুপুরে এই ক্যান্টিনে খান। কর্মচারীরা খান। এ ছাড়াও বিভিন্ন কাজে যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন, তাঁরাও এখানে কম দামে পেট ভরে খেতে পারেন। তিনি বলেন, ‘‘অল্প খরচে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে যে-সব খাওয়ার জায়গা রয়েছে, সেগুলোর পরিবেশ খুব স্বাস্থ্যকর নয়। তাই সকলে যাতে সস্তায় স্বাস্থ্যকর খাবার পেতে পারেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

হৃদয়ের সম্পর্কের শুরু উদর থেকে— যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যে এই আপ্তবাক্যে আস্থাশীল, উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের বক্তব্যে সেটা স্পষ্ট। দেশের প্রাদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে প্রথম স্থানে থাকা যাদবপুরে ভর্তুকি-ক্যান্টিন চালু করার এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য যে উদরপূর্তি ছাড়াও বাড়তি কিছু, সেটা জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে সঙ্গে বাইরে থেকে বিভিন্ন কাজে যাঁরা আমাদের এখানে আসেন, তাঁরাও যাতে স্বল্প মূল্যে খাবার পান, আমরা সেই চেষ্টাই করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরের সঙ্গে যখন বাইরের জগতের মেলবন্ধন ঘটে, তখনই শিক্ষা ও সমাজের অগ্রগতি হয়,’’ বলছেন উপাচার্য। তিনি জানান, ওখানকার অন্য ক্যান্টিনগুলোতেও দাম তুলনায় কম রাখারই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE