দ্বিতীয় ইনিংসেও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নির্বাচন এড়িয়ে গেল রাজ্য সরকার। আরও এক দফা অস্থায়ী ব্যবস্থা চালু থাকল রাজ্যের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার প্রধান প্রশাসক সংস্থায়।
একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য, সেনেট-সিন্ডিকেটেও অস্থায়ী ব্যবস্থা— সে সব দৃষ্টান্ত আগেই দেখা গিয়েছে। সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদে ‘অ্যাড হক’ কমিটি। শিক্ষক সংগঠনগুলির বেশির ভাগেরই বক্তব্য, বিধানসভা ভোটে বিপুল জয় পেলেও শিক্ষককুলের বড় অংশ এখনও বর্তমান শাসক দলের প্রতি বিমুখ। নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গড়তে গেলে সেখানে বিরোধীদেরই গরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। রাজ্য সরকার তাই সে পথ গেল না।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য সরকারের এমন সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আগে সুশাসন চাই, তার পরে নির্বাচন।’’
মধ্যশিক্ষা পর্ষদে শেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০০৭-এর জুলাইয়ে। সেই সমিতির মেয়াদ ফুরানোর কথা ছিল ২০১২-র জুলাইয়ে। কিন্তু তার আগেই কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে দু’বছরের জন্য প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করে তৃণমূল সরকার। ২০১৪ সালে তাঁর কার্যকালের মেয়াদ আবার এক বছর বাড়ানো হয়। ২০১৫ সালে সেই মেয়াদ শেষ হলে আইন সংশোধন করে আরও এক বছর তাঁকে প্রশাসক হিসেবে রাখা হয়। আজ, রবিবার ৩১ জুলাই সেই মেয়াদও শেষ হওয়ার কথা। তার আগে শনিবারই ২১ সদস্যের ‘অ্যাড হক’ কমিটি নিয়োগ করল রাজ্য সরকার। আবার কল্যাণময়বাবুকেই সেই কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলির অভিযোগ, এ ভাবে কমিটি গড়ে সরকার নির্বাচন তো এড়িয়ে গেলই, সেই সঙ্গে পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাও কল্যাণময়বাবুর হাতেই রাখল।
পর্ষদ সূত্রের খবর, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ১৯৬৩ সালের আইন অনুযায়ী পর্ষদের ওই কমিটিতে প্রায় ৬০ জন সদস্য থাকার কথা। এঁদের মধ্যে শিক্ষক প্রতিনিধিই বেশি। তাঁরা সদস্য পদ পান নির্বাচনের মাধ্যমে। এর বাইরে অবশ্য বেশ কিছু মনোনীত সদস্য থাকার সংস্থান রয়েছে।
স্বাভাবিক ভাবেই শিক্ষক সংগঠনগুলি সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য বা অল বেঙ্গল সেভ এডুকেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক কার্তিক সাহা— দু’জনেরই বক্তব্য, শিক্ষাক্ষেত্রে সমর্থন নেই বুঝেই সরকার এ ভাবে নির্বাচন এড়িয়ে গেল। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি-র রাজ্য সহ সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের কথায়, ‘‘এটা গণতন্ত্র হত্যার সামিল।’’
সরকার কেন পর্ষদে নির্বাচন এড়িয়ে যাচ্ছে? শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জবাব, ‘‘ছাত্রদের উন্নয়নের স্বার্থে পঠনপাঠনই আমাদের প্রথম লক্ষ্য। তার পরে নির্বাচন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy