Advertisement
E-Paper

দিয়ে কেড়ে নেওয়া? ক্ষুব্ধ পার্শ্বশিক্ষকেরা

বেতন বৃদ্ধি শিক্ষকদের অধিকারের মধ্যেই পড়ে। সেটা বাড়িয়ে সরকার জনসমর্থন আদায় করল। তখন সকলেই ভেবেছিল, বর্ধিত বেতনের পাঁচ শতাংশ হারেই ইনক্রিমেন্ট হবে। কিন্তু সেই সম্ভাবনা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিল সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৮ ০৪:৪৮
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

প্রাপ্তিসুখের মধ্যেও না-পাওয়ার বেদনা বিঁধছে পার্শ্বশিক্ষকদের! কারণ, এক দফায় বেতন বাড়ানো হলেও পরবর্তী যাবতীয় ‘ইনক্রিমেন্ট’ বা বৃদ্ধির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে রাজ্যের ৪৮ হাজার পার্শ্বশিক্ষককে। স্কুলশিক্ষা দফতর সম্প্রতি এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।

এই নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শাসক দলের পার্শ্বশিক্ষক সংগঠনও। তারা এটাকে এক হাতে দিয়ে অন্য হাতে কেড়ে নেওয়া হিসেবেই দেখছে। কেননা প্রায় সব ধরনের চাকরিতেই প্রতি বছর বা দু’-তিন বছর অন্তর ইনক্রিমেন্ট বা বৃদ্ধিটাই রেওয়াজ। পার্শ্বশিক্ষকদের আশা ছিল, সেই রেওয়াজ মেনেই বর্ধিত বেতনের উপরে তিন বছর অন্তর পাঁচ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট হবে। কিন্তু সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে সেই সম্ভাবনা নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে।

স্কুলশিক্ষা দফতরের সচিব মণীশ জৈন সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রাথমিকের ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরের পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির কথা জানান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মার্চেই সেই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে জানিয়েছিলেন, বর্ধিত বেতন কার্যকর হবে ১ মার্চ থেকেই। সচিবের বিজ্ঞপ্তিতে তার উল্লেখ করে জানানো হয়েছে, পার্শ্বশিক্ষকেরা আর কোনও ধরনের ইনক্রিমেন্টের জন্য তালিকাভুক্ত নন। তার পরেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পার্শ্বশিক্ষকেরা।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেস পার্শ্বশিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক গোপাল দেবনাথ জানান, নিয়ম অনুযায়ী তিন বছর অন্তর বেতনের পাঁচ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট বা বৃদ্ধি হয়। ‘‘সরকারের কাছে তিন বছরের বদলে প্রতি বছর বৃদ্ধির আবেদন দাবি জানানো হয়েছিল। সেটা তো হলই না, উল্টে ইনক্রিমেন্ট বন্ধ করে দেওয়া হল! নিয়ম অনুসারে ২০১৫ সালের পরে এ বছরেই ইনক্রিমেন্টের কথা ছিল,’’ বলেন গোপালবাবু।

প্রাথমিকের পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন ৫৯৫৪ থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার এবং উচ্চ প্রাথমিকে ৮১৮৬ থেকে বাড়িয়ে ১৩ হাজার টাকা করা হয়েছে। পার্শ্বশিক্ষক ঐক্য মঞ্চের তরফে ভগীরথ ঘোষ জানান, সরকার মাছের তেলে মাছ ভাজল। বেতন বৃদ্ধি শিক্ষকদের অধিকারের মধ্যেই পড়ে। সেটা বাড়িয়ে সরকার জনসমর্থন আদায় করল। তখন সকলেই ভেবেছিল, বর্ধিত বেতনের পাঁচ শতাংশ হারেই ইনক্রিমেন্ট হবে। কিন্তু সেই সম্ভাবনা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিল সরকার। অন্য রাজ্যে পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন অনেকটাই বেশি। এই রাজ্যে বেতন বাড়লেও ইনক্রিমেন্ট বন্ধের সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে
করেন তিনি। বর্ধিত বেতনের উপরে পাঁচ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট হলে প্রাথমিকের ক্ষেত্রে তা হয় ৫০০ টাকা এবং উচ্চ প্রাথমিকের ক্ষেত্রে ৬৫০ টাকা। পার্শ্বশিক্ষকেরা আর সেটা পাবেন না। ভগীরথবাবু বলেন, ‘‘ইনক্রিমেন্ট আমাদের অধিকার। সরকার এটা কোনও ভাবেই বন্ধ করতে পারে না।’’

প্রশ্ন উঠেছে, শিক্ষামন্ত্রী পার্শ্বশিক্ষকদের সঙ্গে সম্মেলনে যোগ দেন ৯ জুলাই। আর স্কুলশিক্ষা দফতরের নির্দেশ বেরিয়েছে ২ জুলাই। তা হলে ওই সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে কিছু বললেন না কেন? বক্তব্য জানতে শিক্ষামন্ত্রীকে ফোন করা হয়েছিল। তাঁকে পাওয়া যায়নি। মেসেজেরও জবাব দেননি তিনি।

শিক্ষক-নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘সরকারের এই পদক্ষেপে আইনি জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।’’

Wage Para teacher Increment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy