Advertisement
E-Paper

বোনকে বলুন না, ভালবাসার চাপে অশোক

একেই বোধহয় বলে ভালবাসার অত্যাচার! নিজের জন্মদিনে শুভেচ্ছা পাওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে বসিয়ে ‘ছোট বোনে’র আসন দিয়েছিলেন তিনিই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৫ ০৩:২৮

একেই বোধহয় বলে ভালবাসার অত্যাচার!

নিজের জন্মদিনে শুভেচ্ছা পাওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে বসিয়ে ‘ছোট বোনে’র আসন দিয়েছিলেন তিনিই। নবতিপর নেতাকে সম্মান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আবার পাল্টা বলেছিলেন, সরকার চালাতে গিয়ে তাঁদের ভুল-ভ্রান্তি হচ্ছে দেখলে দাদা যেন ধরিয়ে দেন। দুই যুযুধান শিবিরে থেকে, তা-ও নিবার্চনের কাছাকাছি সময়ে, এমন পারস্পরিক সৌহার্দ্যের চাপ কেমন বিষম হতে পারে, এখন টের পাচ্ছেন বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ! চাপ আসছে দলের ভিতরে-বাইরে।

রাজ্য জুড়ে বাম কর্মীরা যখন শাসক দলের হাতে আক্রান্ত, সেই সময়ে তৃণমূল নেত্রীর সৌজন্য-বার্তায় ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক এত উচ্ছ্বাস দেখাতে গেলেন কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছিল তখনই। তার পরে ফ ব-র তরফে বিবৃতি, পাল্টা বিবৃতিতে সমস্যা আরও জটিল হয়েছে। কিন্তু বাম নেতাদেরই একাংশ বিবৃতি দিয়ে গোল না পাকিয়ে রীতিমতো ‘গাঁধীগিরি’র পথ বেছে নিয়েছেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতিষ্ঠিত দলের সর্বময় নেতাকে চাপে ফেলার জন্য। স্থানীয় স্তরে সভা বা দলীয় কোনও কর্মসূচি করতে গিয়ে যেখানেই বাধা পাচ্ছেন তাঁরা, সরাসরি যোগাযোগ করছেন অশোকবাবুর সঙ্গে। অনুরোধ একটাই— ছোট বোনকে একটু বলুন না এ সব অন্যায় বন্ধ করার নির্দেশ দিতে! আর্জি খারিজ করতে পারছেন না ফ ব নেতা। আবার অনুরোধ পালন করতেও নামতে পারছেন না!

শুরুটা হয়েছিল ‘আক্রান্ত আমরা’র তরফে অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রকে দিয়ে। তিনি ফ ব দফতরে গিয়ে অশোকবাবুর হাতে চিঠি দিয়ে বলে এসেছিলেন, বারবার চেষ্টা করেও মুখ্যসচিবের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় পাওয়া যাচ্ছে না। অশোকবাবু যদি একটু সহযোগিতা করেন! এর পরে ব-রই অন্তত তিন জন নেতা-বিধায়ক নিজেদের এলাকায় তৃণমূলের তৈরি করা সমস্যার মুখে পড়ে রাজ্য সম্পাদকের দ্বারস্থ হয়েছেন। কোচবিহারের দিনহাটা এবং সিতাইয়ে ফ ব-র কর্মিসভা বানচাল করার চেষ্টা করেছিল তৃণমূল। যুব লিগের রাজ্য সম্পাদক, অশোকবাবুরই ঘনিষ্ঠ নেতা আব্দুর রউফও সভা করতে গিয়ে দেখেন তৃণমূল পাল্টা মিছিল করে এসে হুমকি দিচ্ছে। প্রতি ক্ষেত্রেই পুলিশকে বলে তাৎক্ষণিক ভাবে সমস্যা মেটানো হয়েছে ঠিকই। কিন্তু বিধায়কেরা অশোকবাবুকে ঘটনা জানিয়ে অনুরোধ করেছেন, তাঁর ‘ছোট বোন’কে বলে এমন জিনিস বন্ধ করাতে তিনি যেন উদ্যোগী হন! আর্জি আসছে দক্ষিণবঙ্গ থেকেও।

দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘নেতা-কর্মীদের অনেকেই আসলে ভাবছেন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের একটা রাস্তা যখন পাওয়া গিয়েছে, তা হলে আর রাস্তায় দাঁড়িয়ে মার খাব কেন? তাঁদের প্রত্যাশাকে তো দোষ দেওয়া যায় না!’’ গাঁধীগিরির এই চাপের মধ্যেই অশোকবাবুদের বিপত্তি আরও বেড়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার জন্য তাঁদের সিদ্ধান্তকে ঘিরে। আড়াই মাস আগে জেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে একটি অ্যাড হক কমিটি করা হয়েছিল রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর দুই সদস্যকে আহ্বায়ক করে। এখন আবার সেই কমিটি ভেঙে নতুন অ্যা়ড হক কমিটি গড়া হয়েছে একদা বহিষ্কৃত নেতা সরল দেবকে আহ্বায়ক করে! প্রতিবাদে কমিটি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন হরিপদ বিশ্বাস, মোর্তাজা হোসেন, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়-সহ জেলার ক্ষমতাসীন শিবিরের নেতারা। সব মিলে বিধানসভার প্রস্তুতি শুরুর সময়ে যাকে বলে ল্যাজে-গোবরে দশা ফ ব-র!

ashok ghosh forward bloc ashok ghosh sister mamata ashok ghosh stop violence mamata violence ashok ghosh mamata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy