সম্পর্ক ভেঙে দিয়েছেন প্রেমিকা। দেখাসাক্ষাৎ তো দূরের কথা, ফোনেও যোগাযোগ রাখেন না। প্রেমিকার সঙ্গে কিছু ক্ষণ কথা বলতে চেয়ে তাঁর বাড়ির সামনে বোমা ছুড়ে দিলেন যুবক! আশা করেছিলেন, যদি বোমার তীব্র আওয়াজে ভয় পেয়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন প্রেমিকা, তা হলে কিছু ক্ষণ কথা বলা যাবে। কিন্তু বাস্তবে তা তো হলই না। উল্টে এখন জেলের ঘানি টানার পরিস্থিতি তৈরি হল।
হুগলির বৈদ্যবাটির ঘটনা। গত ২৮ অক্টোবর ছটপুজোর রাতে বৈদ্যবাটির ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মালিকবাগান খামারডাঙা এলাকায় বোমা ছোড়ার অভিযোগে সেই প্রেমিক এবং তাঁর তিন বন্ধুকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সাগর মালিক, প্রিন্স যাদব, প্রণীত পাল এবং আয়ুষ যাদব। সাগরই সেই প্রেমিক। চার জনেরই বয়স ১৮-২০ বছর। শুক্রবার তাঁদের শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মালিক বাগানের একটি বাড়ির দেওয়ালে বোমা ছোড়া হয়েছিল। বোমার অভিঘাতে বাড়ির জানলার কাচও ভেঙে যায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ। ওই বাড়ির কর্তাকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু কোনও সূত্র মেলেনি। এর পর এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। তাতে একটি বাইক তদন্তকারীদের নজরে আসে। সেটির সন্ধান শুরু হয়। ওই বাইকটির সূত্র ধরেই সাগরের খোঁজ পায় পুলিশ।
স্থানীয় এবং তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মালিক বাগান এলাকার এক তরুণীর সঙ্গে চাঁপদানির বাসিন্দা সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি দু’জনের সম্পর্কে চিড় ধরে। সাগর জানতে পারেন, তাঁর প্রেমিকা অন্য এক যুবকের সঙ্গে মেলামেশা করছেন। এর পর তরুণীকে একাধিক ফোনও করেছিলেন সাগর। কিন্তু তরুণী জবাব দেননি। আর যোগাযোগও করেননি। এই পরিস্থিতিতে বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রেমিকার বাড়ির সামনে বোমা ছোড়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। ইউটিউব দেখে নিজের হাতেই সেই বোমা বানিয়েছিলেন বাজি তৈরির মশলা দিয়ে।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, পরিকল্পনামতোই ছটপুজোর রাতে তিন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে মালিকবাগান এলাকায় গিয়েছিলেন সাগর। একটি বাড়ির দেওয়ালে বোমাও ছুড়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু এত জোরে শব্দ হয় যে, তাঁরা নিজেরাই ভয় পেয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন সেখান থেকে। ঘটনার পর তদন্তে নেমে সাগরের বাড়িতে গিয়েও তাঁর খোঁজ পাননি তদন্তকারীরা। তাঁরা জানতে পারেন, ঘটনার পর থেকে বাড়িই ফেরেননি সাগর। এর পর তাঁর মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে তাঁকে ব্যারাকপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়।