Advertisement
০৭ মে ২০২৪

দম্পতির ঝগড়াতেও ভরসা ‘মামলাবাজ’

ঠাট্টা করে নিজেদের কাজকে তাঁরা বলেন, ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো! তাতেও এমন খ্যাতির বিড়ম্বনা আসবে, কে জানতো!একের পর এক দুর্নীতির মামলা করে আইনি লড়াইয়ে রাজ্য সরকারকে প্যাঁচে ফেলেছেন কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৭ ০২:৪৯
Share: Save:

ঠাট্টা করে নিজেদের কাজকে তাঁরা বলেন, ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো! তাতেও এমন খ্যাতির বিড়ম্বনা আসবে, কে জানতো!

একের পর এক দুর্নীতির মামলা করে আইনি লড়াইয়ে রাজ্য সরকারকে প্যাঁচে ফেলেছেন কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। সিপিএমের আইনজীবী-নেতা বিকাশ ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাঁর জুটিকে ‘জগাই-মাধাই’ বলে বিঁধেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শাসক শিবির মান্নানকে ‘মামলাবাজ’ বলছে আড়ালে। আদালতে তাঁদের সাফল্যের খবর চাউর হয়ে যেতেই এ বার বিচিত্র সব আর্জি আসতে শুরু করেছে বিরোধী দলনেতার কাছে। অচেনা, আধা-চেনা লোকজন নম্বর জোগাড় করে ফোন করে বলছে— মান্নানদা, একটু মামলাটা ধরুন না! বিব্রত মান্নান ঘরোয়া আলাপে বলছেন, ‘‘কী যে বিড়ম্বনা হয়েছে! স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া। আমাকে ফোন করে বলছে, মামলাটা দেখুন!’’ সম্পত্তির কাজিয়া থেকে রাজনৈতিক বিবাদ, সব ধরনের মামলার আর্জিই আসছে সারদা ও নারদ-খ্যাত মান্নানের কাছে।

আরও পড়ুন: মাথায় হেলমেট নেই? শুভ হোক বাস-যাত্রা

বেশ কয়েক বছরের বিরতির পরে আবার চাঁপদানি থেকে বিধায়ক হতেই মান্নানের কাছে দরবার হতো মেয়ের বিয়ের জন্য টাকার ব্যবস্থার আর্জি নিয়ে। তিনি অপারগ জানাতেই পাল্টা প্রশ্ন আসতো, টাকা দিতে পারবেন না তো বিধায়ক হয়েছেন কেন? সে ছিল অন্য বিড়ম্বনা। এখন মাথাব্যথা হয়েছে মামলার খ্যাতি! এমনিতেই নারদ মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ করে দেওয়ার পরে রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে ভিড় জমে গিয়েছিল মান্নান-বিকাশের জন্য। দু’জনের নামেই জয়ধ্বনি উঠেছে বিস্তর। কিন্তু ‘মান্নানদাকে চাই আর বিকাশদাকে চাই’-এর দাবি যে এমন পর্যায়ে চলে যাবে, তাঁরা ভাবেননি!

বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এক বার বিরোধী দলনেতাকে ঘরোয়া কথায় বলেছিলেন, মান্নান তো মামলা করে পশ্চিমবঙ্গের সুব্রহ্মণ্যম স্বামী হয়ে যাচ্ছেন! স্পিকার-মান্নানের ব্যক্তিগত সম্পর্কে কোনও খাদ নেই। ঘরোয়া আসরে মান্নানকে নিয়ে নির্মল হাসিই হাসছেন স্পিকার। সহাস্যই আশঙ্কা, মান্নানের পরের ‘টার্গেট’ (দলত্যাগের মামলা) না স্পিকারই হয়ে যান! যা শুনে মান্নান আবার ঘনিষ্ঠ মহলের আড্ডায় বলে রাখছেন, ‘‘বিধানসভায় আপনি শিবের মতো। গলায় জড়িয়ে থাকা বিষাক্ত সাপটাকে মারতে গিয়ে শিবের গায়ে লেগে গেলে অপরাধ নেবেন না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Abdul Mannan Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE