Advertisement
২৭ মার্চ ২০২৩

টনক নড়েনি, দিঘায় বেপরোয়া পর্যটকেরা

কয়েক দিন আগেই ওল্ড দিঘায় সমুদ্র স্নানে নেমে উত্তর ২৪ পরগনার ইচ্ছাপুরের এক যুবকের ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তারপরই শনিবার সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার আগে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের চার কিশোরকে উদ্ধার করেছিলেন নুলিয়ারা।

সমুদ্রে নামতে পুলিশের নিষেধ না মানায় ধরে আনা হচ্ছে এক পর্যটককে। রবিবার ওল্ড দিঘার সমুদ্র সৈকতে। নিজস্ব চিত্র

সমুদ্রে নামতে পুলিশের নিষেধ না মানায় ধরে আনা হচ্ছে এক পর্যটককে। রবিবার ওল্ড দিঘার সমুদ্র সৈকতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দিঘা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:২৩
Share: Save:

পর্যটনকেন্দ্র দিঘায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সমুদ্র স্নান করতে নামার ঘটনা অব্যাহত। শনিবারের পর রবিবারও এই অভিযোগে মুর্শিদাবাদের দুই পর্যটককে গ্রেফতার করল দিঘা থানার পুলিশ।

Advertisement

কেন এমন ঘটনা বারবার ঘটছে ? কেন পর্যটকরা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা মানছেন না? এই নিয়ে কী বলছে পুলিশ? পর্যটকদের বক্তব্যই বা কী?

কয়েক দিন আগেই ওল্ড দিঘায় সমুদ্র স্নানে নেমে উত্তর ২৪ পরগনার ইচ্ছাপুরের এক যুবকের ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তারপরই শনিবার সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার আগে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের চার কিশোরকে উদ্ধার করেছিলেন নুলিয়ারা। নির্দেশ অমান্য করে সমুদ্রের বিপজ্জনক দূরত্বে যাওয়ার জন্য শনিবারই নদিয়ার সাত পর্যটককে গ্রেফতার করে দিঘা থানার পুলিশ। কিন্তু এতকিছুর পরেও পর্যটকদের হুঁশ ফিরছে না। সচেতনতা গড়ে উঠছে না। এর কারণ হিসেবে নদিয়ার কৃষ্ণনগর থেকে আসা ব্যবসায়ী তপন সরকারের দাবি, “ব্যবসার জন্য সময় পাই না। বছরে একবার দিঘায় আসি। এবার এসে শুনলাম ওল্ড দিঘায় সমুদ্রে নামতে দিচ্ছে না পুলিশ। নিউ দিঘার সৈকত দূরে। স্নান করার পর ফেরার ঝামেলা বিস্তর। তাই ওল্ড দিঘায় নেমে পড়েছেন আমার মতো বহু পর্যটক।’’ উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাত থেকে সপরিবার দিঘায় এসেছেন ব্যঙ্ককর্মী ভক্তি দে। তাঁর কথায়, “দিঘায় আসি সমুদ্রের টানে। তাই সমুদ্রে স্নান না করে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবতেই পারি না। তবে ঢেউ বড়। তাই ভয়ে ভয়ে স্নান করতে নামছিলাম। কিন্তু নুলিয়ারা নিষেধ করে নামতে দিল না।’’

কোচবিহারের ব্যবসায়ী তন্ময় লোহার অবশ্য সমুদ্রে নামতে না পারায় ক্ষুব্ধ। তাঁর কথায়, ‘‘সময়-অর্থ খরচ করে দিঘায় আসি। এসে যদি দেখি সমুদ্রে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। তা হলে রাগ হয় বই কী! সে ক্ষেত্রে স্নানের জন্য নির্দিষ্ট ঘাটের ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।’’ জামশেদপুরের তুলিকা গুপ্তর দাবি, ‘‘কটার সময় জোয়ার আর কখন ভাটা তা পর্যটকদের জানা সম্ভব নয়। তাই অনেকেই সমুদ্রে নেমে পড়ছেন। জোয়ার-ভাটার সময়ও মাইকে প্রচার করা উচিত।’’

Advertisement

দিঘা সৈকতের সবচেয়ে অভিজ্ঞ নুলিয়া রতন জানা মনে করেন, “বহু পর্যটক দিঘায় এসেই মদ্যপান করেন। সেই অবস্থাতেই সমুদ্রে স্নান করতে নামেন। ফলে তখন মাইকে প্রশাসন কী ঘোষণা করেছে কিংবা নুলিয়ারা কি বলছে তা তাঁদের মাথায় ঢোকে না। ফলে সমুদ্রে নেমে বিপদে পড়েন।’’

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “পুলিশের পক্ষ থেকে সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু পর্যটকেরা সচেতন না হওয়ায় কার্যত দুর্ঘটনায় লাগাম দেওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ ও নুলিয়ারা পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্যই কাজ করছেন এটা পর্যটকেরা না বুঝলে আইন করে এ সব আটকানো রীতিমত জটিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.