জমি আন্দোলনে নিহত নিশিকান্ত মণ্ডলের স্মরণ সভায় শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামে। —নিজস্ব চিত্র।
‘অতীত ভুলে গেলে ভবিষ্যৎ কখনওই উজ্জ্বল হতে পারে না’। যে নন্দীগ্রাম থেকে তাঁর রাজনৈতিক জয়যাত্রার সূচনা, সেই খাসতালুকে দাঁড়িয়েই মঙ্গলবার এই বার্তা দিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলন পর্বে নিহত তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান নিশিকান্ত মণ্ডলের স্মরণসভা ছিল এ দিন। গত ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবসের পরে এ দিনই ফের প্রকাশ্য অনুষ্ঠান মঞ্চে নন্দীগ্রামে দেখা গেল শুভেন্দুকে। তবে তৃণমূলের দলীয় উদ্যোগে নয়, সোনাচূড়ায় ‘ভূমি রক্ষা কমিটি’ই নিশিকান্তের স্মরণসভার আয়োজন করেছিল। সেই মঞ্চে শুভেন্দু মনে করিয়ে দেন, ২০০৬ সালের ৩ নভেম্বর তেখালির ভাঙা সেতু দিয়ে তাঁকে সোনাচূড়া হাইস্কুলের মাঠে নিয়ে এসেছিলেন নিশিকান্তই। সেখানে প্রথম জমি আন্দোলনে বীজ বপন হয়েছিল। নিশিকান্ত না-থাকলে তাঁরা ওই আন্দোলন জিততে পারতেন না মনে করিয়ে দিয়ে এর পরেই শুভেন্দুর মন্তব্য, ‘‘অনেকেই অতীত ভুলে যান। আমি শুভেন্দু অধিকারী, সব সময় আমি বলি, যেটা দিয়ে শুরু করেছিলাম, সেটা দিয়ে শেষ করব। অতীত যাঁরা ভুলে যান, তাঁদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হতে পারে না। তাঁদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হবে। এটাই চিরন্তন সত্য।’’
বস্তুত, তৃণমূলে সাম্প্রতিক রদবদলের পরে শুভেন্দুর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। শুভেন্দুও দলীয় অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলছেন। তবে সমান্তরাল জনসংযোগের মঞ্চে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। তমলুকে ক’দিন আগেই প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের স্মরণসভায় হাজির ছিলেন শুভেন্দু। সেখানে তাঁর রাজনৈতিক উত্থানের পিছনে প্রণববাবুর অবদান স্মরণ করলেও তৃণমূলের নামোচ্চারণ করেননি তিনি। তা ছাড়া, গত কয়েক মাসে নন্দীগ্রামে তৃণমূলের পঞ্চায়েতস্তরের একাধিক জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে আমপানের ক্ষতিপূরণে দুর্নীতির লাগাতার অভিযোগ উঠেছে, হয়েছে বিক্ষোভ। তবে শুভেন্দুকে এলাকায় আসতে দেখা যায়নি। এ দিন শুভেন্দু নিজেও বলেন, ‘‘যতটা সম্ভব সবাই মিলে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের চেষ্টা করেছি। বিধায়ক কার্যালয় থেকে প্রতিনিধি পাঠিয়ে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি।’’
আরও পড়ুন: সংসদে কেন আমরা এই পথ নিতে বাধ্য হলাম
আরও পড়ুন: অনুব্রতকে খুনের ‘হুমকি’, গুসকরায় গ্রেফতার নিতাই
শুভেন্দুর এ দিনের মন্তব্য ভোটের আগে নন্দীগ্রামের অতীত উস্কে দেওয়ার কৌশল বলেই বিঁধছে বিরোধীরা। বিজেপির জেলা (তমলুক) সহ-সভাপতি প্রলয় পালের কথায়, ‘‘দলে কোণঠাসা হয়ে এখন উনি দলীয় নেতৃত্বকে নিজের গুরুত্ব মনে করিয়ে দিতে চাইছেন। যদি নন্দীগ্রামবাসীকে সত্যিই না ভুলে থাকেন, তা হলে আমপান-দুর্নীতি আর বিক্ষোভের সময় কী করছিলেন। এখন সবই করছেন বিধানসভা ভোটকে মাথায় রেখে।’’ তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি
শিশির অধিকারী অবশ্য বলছেন, ‘‘বিজেপির অভিযোগের কোনও গুরুত্ব নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy