Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সেল বদলানোয় গৌতমের গোসা, খাবারে অরুচি

অন্তর্বর্তী জামিনের পরে নতুন জামিনের আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ায় জেল-হাজতে ফিরতে হয়েছে। কিন্তু জেলে আগের জায়গাটা ফেরত পাওয়া যায়নি। তাই মন ভাল নেই বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থা রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর। বুধবার রাতে তিনি কালো কফি ছাড়া আর কিছুই মুখে তোলেননি বলে জেল সূত্রের খবর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:১৭
Share: Save:

অন্তর্বর্তী জামিনের পরে নতুন জামিনের আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ায় জেল-হাজতে ফিরতে হয়েছে। কিন্তু জেলে আগের জায়গাটা ফেরত পাওয়া যায়নি। তাই মন ভাল নেই বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থা রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর। বুধবার রাতে তিনি কালো কফি ছাড়া আর কিছুই মুখে তোলেননি বলে জেল সূত্রের খবর।

বুধবার আদালত গৌতমের জামিনের আবেদন খারিজ করে তাঁকে জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। তার পরে তাঁকে ফের প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন পনেরো আগে প্রথম সেখানে যাওয়ার পরে গৌতমকে মনীষী ওয়ার্ডের অরবিন্দ সেলে রাখা হয়েছিল। তখন তাঁর সঙ্গে প্রায় ৩০ জন বন্দি ছিলেন। বন্দিদের একাংশ তাঁর কাছে এসে রোজ ভ্যালিতে তাঁদের জমা রাখা টাকা ফেরতও চেয়েছিলেন। পরে জেল-কর্তৃপক্ষ ফাই-ফরমাশ খাটার জন্য দুই শাস্তিপ্রাপ্ত বন্দিকেও গৌতমের কাছে রাখেন। অন্যদের সঙ্গে বিশেষ কথা না-বললেও ওই দু’জনের সঙ্গে টুকটাক কথা বলছিলেন গৌতম। তার পরে বাবার শেষকৃত্যে হাজির থাকার জন্য কলকাতা হাইকোর্ট থেকে কয়েক দিনের শর্তাধীন জামিনে মুক্তি পান তিনি। শর্তাধীন জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তিনি আদালতে ফের জামিনের আবেদন করেন। তবে তা নাকচ হয়ে যায়।

ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ আদালত থেকে গৌতমকে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আগের ওয়ার্ডে রাখা হবে না শুনেই বেঁকে বসেন তিনি। আগের ওয়ার্ডেই তাঁকে রাখতে অনুনয় করতে থাকেন। জেলের খবর, গৌতমের আবদারে কান না দেননি জেল-কর্তৃপক্ষ। প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে কে-বি সেলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। গরাদের সামনে গিয়েই দাঁড়িয়ে পড়েন গৌতম। জেলকর্তাদের বলেন, ‘‘আমি এখানে থাকব না।’’ পরে অবশ্য তাঁকে সেখানেই ঢুকিয়ে দেন জেল-কর্তৃপক্ষ। ওই সেলে ১৬ জন বিচারাধীন বন্দি আছেন। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতিবন্ধী কোরপান শাহকে খুনের অভিযোগে ধৃতেরাও রয়েছেন ওই সেলেই।

অনিচ্ছা সত্ত্বেও ওই সেলে ঢুকতে বাধ্য হওয়ায় গোসা হয় গৌতমের। জেল সূত্রের খবর, রাতের খাবার ছুঁয়েও দেখেননি তিনি। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত শুধু কালো কফি খেয়েছেন পাঁচ কাপ। বৃহস্পতিবার সকালেও চার কাপ কফি ছাড়া আর কিছুই মুখে তোলেননি। দুপুরে অনেক অনুরোধের পরে সামান্য দুধ আর কনফ্লেক্স খেয়েছেন। এক জেলকর্মীর কথায়, চার-পাঁচ চামচ খাওয়ার পরে বাকিটা সরিয়ে রাখেন তিনি। মাথা পিছনে হেলিয়ে দিয়ে ঠায় বসে থাকেন।

প্রেসিডেন্সি জেলেই আছেন সারদা গোষ্ঠীর অর্থিক কেলেঙ্কারিতে ধৃত কুণাল ঘোষ। গৌতমের গোসার কথা শুনে তিনি জেলকর্মীদের বলেছেন, ‘‘সব কিছুই মানিয়ে নিতে হয়! এটা কি বাড়ি যে, যা চাইব, তা-ই পাব!’’

নিজের সংস্থায় আমানতকারীদের টাকা ফেরত না-দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন গৌতম। কুণালের পরামর্শ কখন তাঁর মর্মে পৌঁছয়, আপাতত সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE