প্রতীকী ছবি।
ভোটে বিজেপির পক্ষে ভোট দেওয়ার ‘শাস্তি’ হিসাবে কল্যাণী শহরঘেঁষা চর যাত্রাসিদ্ধিতে যাতায়াতের প্রধান অবলম্বন কাঠের সেতুটি তৃণমূল মাঝখান থেকে ভেঙে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মূল ভূখণ্ড থেকে যাত্রাসিদ্ধিতে পৌঁছতে হলে ওই কাঠের সেতু পেরোতে হবে। বাইরের জগতের সঙ্গে চরের যোগাযোগের এটাই প্রধান মাধ্যম। সেতু অকেজো হয়ে গেলে কল্যাণীর কাঁঠাতলা থেকে চর বীরপাড়া-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ভাঙা রাস্তা উজিয়ে তবেই চর যাত্রাসিদ্ধি যাওয়া যায়। কিন্তু সেই রাস্তা কার্যত অগম্য এবং তাতে বিপুল সময় ব্যয় হয়। তাই টোটো, আটো, গাড়ি, সাইকেল—সবই যাতায়াত করে সেতু দিয়ে।
শুক্রবার ভোরে গ্রামের লোক ঘুম থেকে উঠে দেখেন, ওই সেতুটির মাঝখান থেকে বেশ কয়েকটি কাঠের পাটাতন উধাও। তার পর থেকেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ভোটের আগে থেকেই নিজেদের একাধিক অপ্রাপ্তি নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছিলেন যাত্রাসিদ্ধির মানুষ। খারাপ রাস্তা, এলাকায় অসামাজিক কাজকর্ম, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মতো একাধিক বিষয় নিয়ে সরাসরি শাসক দলের সমালোচনাও করেন তাঁরা। ভোটের ফল বেরোনোর পর দেখা যায়, যাত্রাসিদ্ধি থেকে তৃণমূল লিড পায়নি। তার পরের দিনই রাতারাতি গ্রামে যাতায়াতের প্রধান সেতুর পাঠাতন উধাও হয়ে যায়। একে তৃণমূলের চক্রান্ত বলে উল্লেখ করেছে বিজেপি।
বিজেপির তরফে চরের গ্রামগুলির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কৃষ্ণ মাহাতো অভিযোগ করেছেন, ‘‘লিড না-পেয়ে রাগে চর যাত্রাসিদ্ধিকে শহরাঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে তৃণমূল। এখানকার মানুষকে বিপদে ফেলে প্রতিশোধ নিতে চাইছে।’’ চরের ওই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ জানাচ্ছেন, ভুট্টাবাজারের পাশে রয়েছে চর যদুবাটি। ওই গ্রামের তৃণমূলের কিছু নেতা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের দাবি, ‘‘এর আগেও এক বার ওরা ওই ব্রিজ ভেঙেছিল।’’ স্থানীয় কাঁচরাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের পঙ্কজ সিংহও স্বীকার করছেন, ‘‘এর আগেও যদুবাটির কিছু লোক ওই ব্রিজ ভেঙেছিলেন। তবে এ বার কারা ভেঙেছে তা বলতে পারব না। তবে যাঁরাই ভেঙে থাকুন ঠিক করেনি। আমি নিজে কয়েকটা পাটাতন কিনে দিয়েছি।’’
এ দিন সকাল থেকেই চর যাত্রাসিদ্ধির বহু টোটো চালক সেতুর উপরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন। মোটরবাইক ও সাইকেল নিয়েও লোকজন গ্রাম থেকে শহরে আসতে পারেননি। এরই মধ্যে গ্রামের কয়েক জন চওড়া কাঠ নিয়ে আসেন। সেই কাঠ সেতুর মাঝে পেতে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কিছু মোটরবাইকআরোহী সারা দিনে যাতায়াত করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy