Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Midnapore Jail

Home Girls: হোমের মেয়েদের আলোর পরশ নাট্যমঞ্চে

উল্লেখ্য, বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের মনের বাড়তি যত্ন প্রয়োজন। খোলামেলা পরিবেশ, খেলাধুলো, সংস্কৃতিক চর্চা সেই আবহ গড়ে দেয়।

অমল ও দইওয়ালা নাটকের একটি মুহূর্ত। নিজস্ব চিত্র

অমল ও দইওয়ালা নাটকের একটি মুহূর্ত। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২২ ০৬:১৬
Share: Save:

নাটকের পর্দা তখন সবে পড়েছে। গোটা হলে পিন পতনের স্তব্ধতা। উপস্থিত কেউই বিশ্বাস করতে পারছেন না সরকারি হোমে বেড়ে ওঠা একরত্তি মেয়েগুলো এই নাটক মঞ্চস্থ করল!

ওদের প্রায় সকলেই অনাথ। বয়স পাঁচ-সাত, বড়জোর বারো-তেরো। কাউকে উদ্ধার করে আনা হয়েছিল, কেউ হারিয়ে গিয়েছিল, কাউকে আবার বাবা-মা নিতে চায়নি। মেদিনীপুরের সরকারি বালিকা হোমের আবাসিক এমনই একদল মেয়ে মন ছুঁয়ে যাওয়া অভিনয়ে চার-চারটে নাটক মঞ্চল করল বৃহস্পতিবার। মেদিনীপুর শহরের প্রদ্যোত স্মৃতি সদনে অভিনীত হল— অমল ও দইওয়ালা, অভিযান, যমালয়ে গোপাল ভাঁড় এবং আলিবাবা ও চল্লিশ চোর। ‘ভাল থাকা, ভাল রাখা’ শীর্ষক এই উপস্থাপনার আয়োজনে ছিল শিশু-কিশোর অ্যাকাডেমি এবং শিশু সুরক্ষা ও শিশুপাচার বিরোধী অধিকরণ। মেদিনীপুর শহরের রাঙামাটির সরকারি হোম ‘বিদ্যাসাগর বালিকা ভবনে’ বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া মেয়েদের শিশুকল্যাণ সমিতির নির্দেশে এখানে রাখা হয়। এই হোমেই নাটকের কর্মশালা হয়েছিল। কর্মশালা শেষে ছিল এ দিনের এই উপস্থাপনা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোর অ্যাকাডেমির প্রতিনিধি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হোমের বাচ্চাদের মানসিক বিকাশেই এই ভাবনা। কর্মশালা চলবে। এই মেয়েদের নিয়ে আরও অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা রয়েছে।’’ জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব অমিতাভ মুখোপাধ্যায় জুড়ছেন, ‘‘প্রত্যেকটা বাচ্চার মধ্যে অফুরন্ত ক্ষমতা রয়েছে। বাচ্চারা যাতে তাদের ক্ষমতা অনুযায়ী সর্বোচ্চ জায়গায় পৌঁছনোর পরিবেশটা যাতে পায়, সেটা তৈরি করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।’’ জেলার শিশু ও নারী কল্যাণ কর্মাধ্যক্ষ প্রতিভা মাইতির কথায়, ‘‘যখন আমরা নাচ, গান, খেলাধুলো, নাটক প্রভৃতিতে কিছুটা সময় কাটাই, তখন কাজ করারও বাড়তি প্রেরণা পাই।’’

উল্লেখ্য, বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের মনের বাড়তি যত্ন প্রয়োজন। খোলামেলা পরিবেশ, খেলাধুলো, সংস্কৃতিক চর্চা সেই আবহ গড়ে দেয়। এতে হোমছুটের ঘটনাও কমবে বলে আশা। ‘অমল ও দইওয়ালা’-র অমলও তো এমনই এক বন্দি জীবনে আটকে পড়েছিল। এমনই কঠিন তার অসুখ যে বাইরের আলো-বাতাস ছিল যমদূতের সমান! তবু মন যে উড়ে বেড়ায়, ঘুরে বেড়ায়, চলে যেতে চায় দূর দেশে।

এ দিনের প্রয়াস মুগ্ধ করেছে উপস্থিত সবাইকে। জেলার তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক বরুণ মণ্ডল, জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সন্দীপ দাস, অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) কেমপা হোন্নাইয়া সকলেই বলছেন, ‘‘নাটকগুলি দেখে মুগ্ধ হলাম। ওদের সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’’ দর্শকাসনে ছিল জেলার অন্যান্য হোমের আবাসিকেরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Midnapore Jail drama
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE