দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
দেশের নাম ‘ভারত ’ যাঁদের পছন্দ হবে না, তাঁরা বাইরে চলে যেতে পারেন! ‘ভারত’ নামের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে এমনই হুঙ্কার দিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি ও সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তাঁর আরও হুঁশিয়ারি, ‘সাম্রাজ্যবাদের সব চিহ্ন’ বিজেপি ক্ষমতায় এলে (এ রাজ্যে) উপড়ে ফেলা হবে। তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএম ও কংগ্রেস অবশ্য দিলীপের এমন হুঙ্কারকে ‘ইন্ডিয়া’ জোটে ভয় এবং নজর ঘোরানোর চেষ্টা বলে অভিহিত করেছে।
খড়্গপুরে রবিবার ‘চায়ে পে চর্চা’য় গিয়ে দিলীপ বলেছেন, ‘‘ইন্ডিয়া পাল্টে ভারত হবে। কোনও বাপের ব্যাটার হিম্মত নেই আটকে রাখার! যার পছন্দ হবে না, বাইরে যাবে। যে ‘ইন্ডিয়া’ খুঁজবে, ব্রিটেনে গিয়ে খোঁজো!’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘যারা দেশকে পরাধীন করেছিল, তাদের কোনও স্মৃতিচিহ্ন দেশে থাকবে না। এই ভারত, নতুন ভারত।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘বিদেশিরা বলার সুবিধার জন্য বিভিন্ন শহরের নাম পাল্টেছিল। কলকাতার বহু রাস্তাঘাটে ব্রিটিশদের বহু মূর্তি ছিল। এখন ক’টা আছে? একটা-দু’টো আছে। সব উপড়ে ফেলা হবে, খালি বিজেপি ক্ষমতায় আসুক।’’ দিলীপের সংযোজন, ‘‘ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে রাখা থাকবে ও সব। রাস্তাঘাটে থাকবে না। সকালে উঠে আমাদের ছেলেপুলেরা বিদেশিদের মুখ দেখবে না!”
বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘এ সব কথার কোনও মানে আছে? ইন্ডিয়া এবং ভারত, দুই নামেই দেশ পরিচিত। একটা কেটে অন্যটা রাখতে হবে, এগুলো অর্থহীন। বিরোধী জোটের নাম ‘ইন্ডিয়া’ হয়েছে, তাই ভয়ে এখন ভারত, ভারত করছে!’’
দিলীপকে কটাক্ষ করে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘সংবিধান এখনও পাল্টায়নি অথচ প্রেসিডেন্ট অফ ভারত, প্রাইম মিনিস্টার অফ ভারত লেখা হচ্ছে, এটা বেআইনি। ভারত এবং ইন্ডিয়ার মধ্যে কোনও বিভেদ নেই। দলের মধ্যে কল্কে না পেয়ে দিলীপবাবু বলছেন, যাঁদের পছন্দ হবে না ইংল্যান্ডে চলে যাক! ইংল্যান্ডের বাহিনীকে ভারতে রাখার জন্য ওঁর পূর্বপুরুষেরা সব রকম চেষ্টা করেছেন, নানা মুচলেকা দিয়েছেন। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি এই অশ্রদ্ধা নিয়েই আরএসএস, বিজেপি চলে। দেশের মানুষ অপেক্ষায় রয়েছেন, এঁদের উৎপাটন করবেন!’’ প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায়ের মন্তব্য, ‘‘আইনস্টাইনের নাম যদি দিলীপ ঘোষ হয়, তা হলে উনি নিশ্চয়ই গরুর দুধে সোনা খুঁজবেন না! আসলে ‘ইন্ডিয়া’ জোট হয়েছে বলে দিলীপবাবুরা ভয় পেয়েছেন। মূল সমস্যাগুলো থেকে নজর ঘোরানোর জন্য নাম নিয়ে বিতর্ক তোলা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy