Advertisement
E-Paper

ন্যাপকিন জরুরি, বোঝাবে প্রশাসন

ঋতুকালীন স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা মাথায় রেখে এক ‘পাইলট প্রোজেক্ট’ হাতে নিল রামপুরহাট মহকুমা প্রশাসন। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে শহরের বস্তি এবং রামপুরহাট ১ ব্লকের অধীন আদিবাসী গ্রামগুলি বেছে নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, স্যানিটারি ন্যাপকিনের উপকারিতা বুঝিয়ে বিনামূল্যে তা মহিলাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৬

ঋতুকালীন স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা মাথায় রেখে এক ‘পাইলট প্রোজেক্ট’ হাতে নিল রামপুরহাট মহকুমা প্রশাসন। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে শহরের বস্তি এবং রামপুরহাট ১ ব্লকের অধীন আদিবাসী গ্রামগুলি বেছে নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, স্যানিটারি ন্যাপকিনের উপকারিতা বুঝিয়ে বিনামূল্যে তা মহিলাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

কেন এমন উদ্যোগ?

স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতা মহিলাদের স্বাস্থ্য-পরিষেবার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই সময় অপরিচ্ছন্নতা থেকে যৌনাঙ্গে সংক্রমণ হতে পারে, পরবর্তীকালে সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় যার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে মা ও শিশু দু’জনের উপরেই। এক কর্তার কথায়, “গ্রামাঞ্চলে অর্থ ও সচেতনতার অভাবে অনেক কিশোরীই ন্যাপকিনের বদলে অপরিষ্কার কাপড় নেয়। সেটাই বারবার ধুয়ে ব্যবহার করে। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। সে কথা মাথায় রেখেই এমন উদ্যোগ।’’

ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় রামপুরহাট রক্তকরবী মঞ্চে স্থানীয় এক সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী আয়োজিত নাটকের অনুষ্ঠান থেকে সংগৃহীত অর্থ রামপুরহাট মহকুমাশাসকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বিধায়ক তহবিল থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মন্ত্রী তথা বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও। প্রশাসনের হিসেবে এই প্রকল্প শুরুর জন্যে লক্ষাধিক টাকা প্রয়োজন। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা অবশ্য জানাচ্ছেন, প্রকল্পটি জরুরি। এর জন্যে অর্থের অভাব হওয়ার কথা নয়।

কী ভাবে এগোনো হবে, তা জানিয়েছেন রামপুরহাট মহকুমাশাসক সুপ্রিয় দাস। তিনি বলেন, ‘‘প্রকল্পটি রূপায়নের জন্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির জন্যে একটি যন্ত্র কেনা হবে। সেখানে এলাকার মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের ন্যাপকিন তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। একই সঙ্গে এলাকার আশাকর্মী, আইসিডিএস কর্মীদের দিয়ে মহিলাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর কাজও চলবে।’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পর্যবেক্ষণ: শুধু গ্রামাঞ্চল নয়, শহরের বহু মহিলারও ঋতুকালীন স্বাস্থ্য সচেতনার বোধ নেই। অনেকেই অবৈজ্ঞানিক ও অস্বাস্থ্যকর ভাবে এখনও জীবনযাপন করে চলেছেন। এর ফলে তাঁরা যেমন জটিল রোগে ভুগছেন। তেমনই তা ছেলেমেয়েদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে। প্রশাসনের মত, জটিল রোগ থেকে বাঁচতে নিজেরাই যদি স্বাস্থ্য সচেতনতায় জোর দেন, তা হলে অনেক ক্ষেত্রে রোগের ক্ষেত্রে খরচ কমবে, তেমনই মহিলারাও অনেক সুস্থ থাকবেন।

কিন্তু, স্থানীয় ভাবে তৈরি ন্যাপকিন কতটা স্বাস্থ্যসম্মত?

মহকুমাশাসকের আশ্বাস, দেশের নামী ন্যাপকিন প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যসম্মত দিকগুলি দেখে তা তৈরি করা হবে। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন সুপ্রিয় দাস।

এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিশিষ্ট স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ তথা বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য অশোক চট্টোপাধ্যায়। সিউড়ির বিধায়ক বলছেন, ‘‘ঋতুকালীন সময়ে ন্যাপকিনের ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। ন্যাপকিনের বদলে নোংরা কাপড়ের ব্যবহারে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাল জীবাণু বাহিত রোগ হয়। সে দিক থেকে এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়।’’

sanitary napkin
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy