Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Sagardighi By Election

রাজ্যপালকে অধীরের ফোন, কাটল শপথের জট

নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে জয়ীর শংসাপত্র পেয়ে গেলেও বাইরনের শপথ আটকে থাকায় রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অধীর। রাজ্যের পরিষদীয় দফতর জানিয়েছিল, এই সংক্রান্ত চিঠি রাজভবনে পাঠানো আছে।

CV Ananda Bose and Adhir chowdhury

রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৩ ০৬:২৪
Share: Save:

সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয়ী কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের বিধায়ক-পদে শপথের প্রক্রিয়া শেষ পর্যন্ত শুরু হল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর ফোন পেয়ে বাইরনের শপথ সংক্রান্ত ফাইলে সই করে দিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। নতুন বিধায়ককে শপথ গ্রহণ করানোর জন্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে আনুষ্ঠানিক ভাবে দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। বিধানসভা সূত্রের খবর, স্পিকারের কাছে সরকারি নথি এলে সম্ভবত কাল, বুধবার শপথের ব্যবস্থা হবে।

নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে জয়ীর শংসাপত্র পেয়ে গেলেও বাইরনের শপথ আটকে থাকায় রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। রাজ্যের পরিষদীয় দফতর জানিয়েছিল, এই সংক্রান্ত চিঠি রাজভবনে পাঠানো আছে। রাজ্যপাল বোস সেই সময়ে অধীরকে বলেন, তিনি বিষয়টির খোঁজ নেবেন। কিন্তু তার পরেও কিছু হয়নি। এর মধ্যে মুর্শিদাবাদের তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে রবিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাইরন সম্পর্কে মন্তব্য করেন, ‘‘লোকটা বিজেপির, প্রার্থী করেছে কংগ্রেস। সমর্থন করেছে সিপিএম।’’ মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্য নিয়ে বিরোধীরা সরব হওয়ার পাশাপাশিই সোমবার রাজ্যপাল বোসকে দিল্লি থেকে ফোন করেন অধীর। প্রদেশ সভাপতিকে রাজ্যপাল বলেন, তিনি অবিলম্বে বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছেন। সূত্রের খবর, ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই রাজভবন থেকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে জানিয়ে দেওয়া হয়, রাজ্যপাল ওই সংক্রান্ত ফাইলে সই করে দিয়েছেন। সন্ধ্যায় রাজ্যপাল নিজেও টুইট করে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি আইন মোতাবেক স্পিকারকে ভার দিয়েছেন শপথ নেওয়ানোর।

অধীর এ দিন বলেন, ‘‘লোকসভায় উপনির্বাচনে কেউ জিতে এলে তাঁর শপথ গ্রহণ দ্রুত হয়ে যায়। এখানে রাজভবনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে যে কাজটা বিধানসভার আগেই করা উচিত ছিল, তা করা হয়নি। যে ভাবে সাগরদিঘির জয়ী কংগ্রেস বিধায়ককে কখনও তৃণমূলের, কখনও বিজেপির বলে চিহ্নিত করে দেওয়া হচ্ছে, তাতে মনে হয়, তাঁকে স্বীকৃতি দিতেই অনীহা ছিল! একটা উপনির্বাচন নিয়ে ঘৃণ্য রাজনীতি হচ্ছে।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীরও বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, বিজেপির লোককে কংগ্রেস প্রার্থী করেছে। সিপিএম তাঁকে সমর্থন করেছে। সুস্থ মস্তিষ্কে কেউ এমন কথা বলতে পারেন? সাগরদিঘিতে তৃণমূলের ভোট ২০২১ সালের তুলনায় কমেছে প্রায় ৩১ হাজার। তারা হেরেছে প্রায় ২৩ হাজার ভোটে। নিজেদের ভোট কমার কারণ না খুঁজে শাসক দল অনর্থক চক্রান্তের তত্ত্ব ছড়াচ্ছে। তৃণমূল এবং বিজেপির ভোট কমেছে, কংগ্রেস ও বামের সমর্থন ওখানে বেড়েছে, এটাই বাস্তব।’’

স্পিকার বিমানবাবু বলেছেন, ‘‘রাজভবন থেকে ফাইল অনুমোদন করা হয়েছে, খবর পেয়েছি। আনুষ্ঠানিক ভাবে চিঠি আমার দফতরে এলেই শপথের ব্যবস্থা করা হবে।’’ প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, অধিবেশন কক্ষে কংগ্রেসের বাইরনের আসন হবে আইএসএফের নওসাদ সিদ্দিকী এবং কালিম্পংয়ের নির্দল বিধায়ক রুদেন লেপচার সারিতে। শপথ নিয়ে ঢুকলে বাইরনই হবেন এই বিধানসভায় বিজেপি ও তৃণমূলের বাইরে প্রথাগত বিরোধী দলের প্রথম বিধায়ক। দু’বছর আগে বিধানসভা ভোটে বাম ও কংগ্রেসের আসন শূন্য ছিল, বাম-সমর্থিত আইএসএফ প্রার্থী নওসাদ শিধু জিতেছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE