রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ (বাঁ দিকে)। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহকে রাজভবনে ডেকে পাঠালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, দুপুরেই রাজভবনে যেতে পারেন রাজীব। কমিশন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করতেই রাজভবনে তলব করা হয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে। শুক্রবারই রাজনৈতিক হিংসায় উত্তপ্ত ভাঙড় পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল আনন্দ বোস। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পেশ করাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল এবং আইএসএফ-এর মধ্যে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে ভাঙড়ে। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, কমিশন ‘নিষ্ক্রিয়’ ভূমিকা পালন করছে। এই আবহেই রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ হতে চলেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের।
উল্লেখ্য যে, পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যের সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে বলে কলকাতা হাই কোর্টের যে নির্দেশ, তাকে চ্যালেঞ্জ করে শনিবারই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য সরকার এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন। শনিবার শীর্ষ আদালত বন্ধ থাকায় ‘ই-ফাইলিং’এর মাধ্যমে আবেদন জানানো হয়েছে।
শুক্রবার ভাঙড়ে বিজয়গঞ্জ বাজার ঘুরে দেখেন রাজ্যপাল। তার পর যান ভাঙড় ১ এবং ২ নম্বর ব্লক অফিসে। সেখানে কথা বলেন আধিকারিকদের সঙ্গে। তার আগে স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। ভাঙড়ে দাঁড়িয়েই হিংসার বিরুদ্ধে বার্তা দিয়ে রাজ্যপাল বলেন, “গণতন্ত্রের স্বার্থে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে হবে। সাংবিধানিক ভাবে হিংসাকে নির্মূল করতে হবে। হিংসা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।’’
প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের ওই রায়ের পর বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ জানিয়েছিলেন, চ্যালেঞ্জ নয়, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনেই চলবেন তিনি। বলেছিলেন, ‘‘হাই কোর্ট যা নির্দেশ দিয়েছে, তা কার্যকর করব।’’ শুক্রবার রাজীব জানান, সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি তিনি। যদিও বিরোধী নেতৃত্বের একাংশ গোড়া থেকেই মনে করছিলেন, হাই কোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে রাজ্য সরকার। ঘটনাচক্রে, সেই ‘পূর্বাভাস’ মিলে গিয়েছে।
শনিবার দুপুরে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন বিজেপি সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। পরে রাজভবনের বাইরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন বিজেপি সভাপতি। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, রাজ্যপালের সঙ্গে আপনার সাক্ষাতের পরেই রাজভবনে ডেকে পাঠানো হল নির্বাচন কমিশনারকে, কারণ কী? জবাবে সুকান্ত বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচন অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ করতে বদ্ধপরিকর রাজ্যপাল। তিনি আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন, যে ভাবে সন্ত্রাস আটকানো সম্ভব, তা তিনি করবেন। নিজে কাল ভাঙড়ে গিয়ে সন্ত্রাসের পরিস্থিতি দেখে এসেছেন।” তাঁর সংযোজন, “রাজ্যপাল তো আর সরাসরি মাঠে নেমে যুদ্ধ করতে পারেন না। তাঁকে যে ভাবে কাজ করতে হয়, সে ভাবেই তিনি করবেন। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজিকে তিনি ডেকে পাঠাতে পারেন। এখন যেহেতু নির্বাচন চলছে, তাই তিনি নির্বাচন কমিশনকে ডেকে পদক্ষেপ করবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy