Advertisement
E-Paper

শিক্ষায় নৈরাজ্য চলছে: রাজ্যপাল

বিকেলে রাজভবনের সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার ‘দুরবস্থা’ বর্ণনা করেন ধনখড়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৩১
জগদীপ ধনখড়। ছবি: পিটিআই।

জগদীপ ধনখড়। ছবি: পিটিআই।

যথারীতি তিনি গেলেন। বিক্ষোভের জেরে দেড় ঘণ্টা বসে রইলেন গাড়িতে। তার পরে তাঁকে ছাড়াই হয়ে গেল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন। তার অনুপস্থিতিতে মঙ্গলবার হয়ে গেল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট-বৈঠকও।

ফলে আচার্য-রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের ক্ষোভ আরও বাড়ল। যাদবপুর থেকে রাজভবনে ফিরেই বিকেলে সাংবাদিকদের ডাকলেন তিনি। জানালেন, তাঁকে ‘অন্ধকারে’ রেখেই সেনেট-বৈঠক হয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ওই বৈঠকও ছিল সমাবর্তন নিয়ে। সেখানে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাম্মানিক ডিলিট অর্পণের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।

বিকেলে রাজভবনের সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার ‘দুরবস্থা’ বর্ণনা করেন ধনখড়। তাঁর অভিযোগ, আচার্য হিসেবে তিনি তাঁর ভূমিকা পালন করতে পারছেন না। তিনি অসহায় বোধ করছেন। তাই ১৩ জানুয়ারি রাজভবনে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উনি যদি মনে করেন উপাচার্য ওঁর অধস্তন কর্মী, তা হলে তিনি ভুল করছেন। প্রত্যেকের পদমর্যাদা ও সম্মানবোধ রয়েছে।’’

শুধু উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠক নয়, ১৫ দিনের মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রের নানা বিষয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করতে চান বলে জানান ধনখড়।

এ দিন সকালে যাদবপুরে গিয়েও তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির সদস্যদের বাধায় রাজ্যপালের সমাবর্তনে যোগ দেওয়া হয়নি। আর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেনেট-বৈঠকের আমন্ত্রণই পৌঁছয়নি তাঁর কাছে। তিনি বলেন, ‘‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। অথচ আমাকে কিছু জানানো হচ্ছে না। শিক্ষা ক্ষেত্রের সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় আমি ব্যথিত, অসহায় বোধ করছি।’’ যাদবপুরে ঘেরাও থাকা অবস্থায় শিক্ষা ক্ষেত্রে রাজ্যে নৈরাজ্য চলছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ধনখড়। বিকেলে রাজভবনে একই অভিযোগ করেন তিনি।

নতুন উচ্চশিক্ষা বিধিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে সব বিষয় সরাসরি জানাতে হবে উচ্চশিক্ষা দফতরকে। উচ্চশিক্ষা দফতর মনে করলে রাজ্যপালকে জানাবে। ধনখড় বলেন, ‘‘এই আইন লজ্জার। কোনও কিছু জানতে হবে শিক্ষা দফতরের প্রধান সচিবের কাছ থেকে! উপাচার্য আমাকে জানাবেন না কেন?’’

ধনখড়ের মন্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয় এখন রাজনীতির আখড়া। কোর্ট-বৈঠকে গিয়ে ছাত্র-বিক্ষোভ এবং সমাবর্তনে গিয়ে তাঁর তৃণমূলের কর্মী সংগঠনের বিক্ষোভের মুখে পড়াটাকে বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতা বলে চিহ্নিত করেছেন আচার্য। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে বার বার বলেছি, শিক্ষা ক্ষেত্রে এই নৈরাজ্যের বিষয়টি আপনি দেখুন।’’

জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘যাঁরা মনে করেন পশ্চিমবঙ্গের নৈরাজ্য চলছে, তাঁদের মস্তিস্কের স্বাভাবিকতা নিয়ে সন্দেহ জাগে। পশ্চিমবঙ্গের অতীত ইতিহাস উনি জানেন না। শিক্ষা ক্ষেত্রে কী নৈরাজ্য ছিল, সেটা ওঁকে জানতে হবে। এখন পরিস্থিতি কত ভাল, সেটা ওঁকে বুঝতে হবে।’’

রাজ্যপাল অবশ্য জানান, এই ভাবে আইন ভেঙে পড়তে কখনও দেখেননি তিনি। তবে তিনিও নীরব দর্শক হয়ে বসে থাকবেন না।

Jagdeep Dhankhar Convocation Jadavpur University
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy