মোটা হয়ে যাচ্ছেন কিনা, তাই নিয়ে বড়দের কত চিন্তা। কিন্তু বাচ্চার ওজন বাড়লে তাঁরাই মাথা ঘামান না। বরং বাচ্চা ঠিক নাদুসনুদুস না হলে অনেক বাবা-মায়ের মন ভরে না। অথচ শিশু মোটা হওয়ার মানেই নানা অসুখকে নেমন্তন্ন করা। ডায়টেশিয়ান অর্পিতা ঘোষ দেব জানাচ্ছেন, ওজন বাড়লে খুব কম বয়সেই ‘মেটাবলিক ডিসঅর্ডার’ হয়। ফলে হাই ব্লাড প্রেসার, ডায়বেটিস বা গ্যাসট্রাইটিসের মতো সমস্যাগুলো ধরে ফেলবে। লিভারে চাপ পড়বে, হার্টের সমস্যাও হতে পারে। বাচ্চাকে প্রোটিন বেশি খাওয়ালে কিডনির সমস্যা হতে পারে। এগুলি মোটা হওয়া আর বেশি বেশি খাওয়ানোর পরিণাম। মাথায় রাখতে হবে, বাচ্চাদের পাকস্থলীর আয়তন কম। দৌঁড়ঝাপ করে খেলার সুযোগ কমছে। সুতরাং ক্যালোরির চাহিদাও কমেছে।
উচ্চতা অনুযায়ী বাচ্চার ওজন কী হতে পারে, সেই ‘গ্রোথ চার্ট’ মেনে, ক্যালোরি প্রয়োজন বুঝে বাচ্চাদের খাওয়াতে হবে। নিয়মিত বাচ্চার ওজন নিন।
বাইরের ফাস্টফুড ও প্যাকেটের খাবার যতটা কম দেওযার চেষ্টা করবেন। কেক, মিষ্টি, ভাজাভুজি বাদ দিন দ্রুত ওজন বাড়াতে এগুলোর জুড়ি নেই। যতটা সম্ভব বাড়ির তৈরি খাবার দিন।
ব্রেকফাস্ট, টিফিন, বিকেলের জলখাবারে রাখুন ফল, বাদাম, সব্জি। বিশেষ করে নানা ধরনের ফল যত বেশি খেতে দেবেন, বাড়বে পুষ্টি, শিশুরা খেতে ভালও বাসবে। পায়েস, কাস্টার্ড বা ওটস তৈরি করলে দুধের সঙ্গে অনেকটা চিনি না দিয়ে মিষ্টি ফল দিন।
অনেক সময় ছোটরা খেতে চায় না। পেছনে ছুটে মা খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। খিদে না থাকলে জোর করবেন না। খাওয়ার প্রতি আগ্রহ কমে যাবে। কতটা খাওয়া প্রয়োজন, তা বাচ্চারা নিজেরাই বুঝতে পারে।
ঠিক সময়ে খাওয়া অভ্যাস করান। টিভির সামনে বসে না খাওয়ানোই ভাল। সবাই একসঙ্গে বসে খেলে খাওয়ার অভ্যাস ভাল হবে। দৌড়ঝাঁপ করে খেলা করলে বাচ্চাদের খিদে বাড়বে, ওদের স্বাস্থ্যও ভাল হবে।
দেবাঞ্জনা ভট্টাচার্য