—ফাইল চিত্র।
পুজোর মরসুমে বন্ধ ডাকা নিয়ে টানাপড়েন রয়েছে দলের অন্দরে। তবু ভেঙেও মচকালেন না মোর্চা সুপ্রিমো। রবিবার কালিম্পঙের ডেলোতে মহিলা মোর্চার সভায় গুরুঙ্গ বললেন, ‘‘বন্ধের দিন সরকারের চাপ মানব না। তেমন হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হবে।’’ বন্ধে সাড়া মিলবে না আশঙ্কাতেই গুরুঙ্গ হুমকি দিতে শুরু করেছেন বলে দাবি মোর্চা বিরোধী দলগুলির।
বনধ নিয়ে দলের অন্দরে সংশয়। মোর্চার একপক্ষ চাইছেন সরকারি ভাবে কোনও অনুরোধ এলে আপাতত বন্ধ থেকে সরে আসার ঘোষণা করা হোক। অন্যপক্ষ অবশ্য অনড়। কিন্তু তাঁরা বনধের পক্ষে কোথাও প্রচার শুরু করেননি। ব্যবসায়ী ও পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত সংগঠনগুলির খবর, বনধ ‘সফল’ করতে মোর্চার তরফে কোনও ফতোয়া এখনও দেওয়া হয়নি তাঁদের। কিন্তু শাসক দল এবং সরকারের তরফে বনধ ‘কিছুতেই হবে না’ বলে ক্রমাগত দাবি ওঠায় ব্যবসায়ী এবং সাধারণ বাসিন্দারা জনজীবন স্বাভাবিক থাকবে বলেই আশা করছেন।
আর এই পরিস্থিতিতেই এ দিন ডেলোতে মহিলা মোর্চার সভা থেকে অনির্দিষ্টকালের বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গুরুঙ্গ। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের পরের দিনই নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির প্রমাণ দিতে কালিম্পঙে সভা ডেকেছিল মোর্চা। তবে যাই দাবি করুন না কেন, বন্ধ সফল হবে কিনা তা নিয়ে গুরুঙ্গ যে উদ্বেগে, তা-ও এ দিন তাঁর বক্তব্যে বহু বার ধরা পড়েছে বলে দাবি বিরোধীদের। বন্ধ সফল করার জন্য গুরুঙ্গ বারবার আবেদন করেছেন। সাম্প্রতিক অতীতে মোর্চার ডাকা বন্ধ সফল করতে মোর্চা সভাপতি কেন, অন্য নেতাদেরও খুব বেশি আবেদন-নিবেদন করতে হয়নি। এ দিন সুর নামিয়েই গুরুঙ্গ বলেন, ‘‘আমার অনুরোধ বন্ধে সাইকেলও বের করবেন না, চলতে দেবেন না।’’
বৃহস্পতিবার কালিম্পঙের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, গত চার বছরে পরিকল্পনা এবং পরিকল্পনা বর্হিভূত খাতে চার হাজার কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ জিটিএকে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অসঙ্গতিপূর্ণ দাবি করে মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে ২৮ সেপ্টেম্বর বন্ধ ডাকে মোর্চা। শনিবার কালিম্পঙের সভা করে হিসেব প্রসঙ্গ টেনে গুরুঙ্গের বাড়ি ঘেরাওয়ের হুমকি দেন পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। কিছুদিন আগে অরূপবাবুর কুশপুতুল পুড়িয়েছিল মোর্চা। এ দিন গুরুঙ্গের হুমকি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন কুশপুতুল পোড়ানোয় কোনও প্রভাব পড়বে না। উনি আগামী দিনে অনেক কিছু পুড়তে দেখবেন। আমার সঙ্গে রসিকতা করবেন না।’’ তৃণমূলের পাহাড় কমিটির মুখপাত্র বিন্নি শর্মার দাবি, ‘‘গুরুঙ্গের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে। ওঁরা মোর্চা বুঝেছে যে বন্ধ হচ্ছে না, তাই নানা শর্ত-হুমকি দিচ্ছে। এতটুকু বলতে পারি, পাহাড় বন্ধে সাড়া দেবে না।’’
এ দিকে অক্টোবরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কথা মোর্চা নেতৃত্বের। সেখানে কেন্দ্রীয় পদক্ষেপের আগাম আশ্বাস মিললে বন্ধ থেকে পিছু হঠার সিদ্ধান্ত হতে পারে মোর্চা অন্দরের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy