Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

শিক্ষকের বৌভাত! ছুটি দেওয়া হল মাদ্রাসায়

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝুন‌কা হাই মাদ্রাসার আরবির শিক্ষক কামাল শেখের বিয়ে হয়েছে সোমবার। মঙ্গলবার ছিল বৌভাত। ওই শিক্ষকের বাড়ি শমসেরগঞ্জের রঘুনন্দনপুরে। বৌভাত উপলক্ষে এ দিন শিক্ষকদের একাংশ গিয়েছিলেন সেই নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে।

মাদ্রাসার সামনে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অমৃতা বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র

মাদ্রাসার সামনে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অমৃতা বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়
বেলডাঙা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯ ০৩:৩৬
Share: Save:

শিক্ষকের বৌভাত বলে কথা! মঙ্গলবার সেই সহকর্মীর বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য ‘ছুটি’ রইল স্কুলে। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে বেলডাঙার সারগাছি চক্রের ঝুন‌কা হাইমাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারেন সারগাছি চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অমৃতা বিশ্বাস। তালা ঝুলতে দেখে স্কুলের গেটে দাঁড়িয়েই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক জাকিরুল ইসলামকে ফোন করেন তিনি।

স্কুল বন্ধ রাখার জন্য স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষককে শো-কজ করা হবে বলে জানান অমৃতা। তিনি বলছেন, ‘‘শো-কজের পাশাপাশি তাঁকে দফতরে দেখা করার নির্দেশ দিয়েছি। কোনও কারণ ছাড়াই স্কুল বন্ধ রাখা কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকেও জানাব।’’

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝুন‌কা হাই মাদ্রাসার আরবির শিক্ষক কামাল শেখের বিয়ে হয়েছে সোমবার। মঙ্গলবার ছিল বৌভাত। ওই শিক্ষকের বাড়ি শমসেরগঞ্জের রঘুনন্দনপুরে। বৌভাত উপলক্ষে এ দিন শিক্ষকদের একাংশ গিয়েছিলেন সেই নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে। ফলে বন্ধ ছিল স্কুল। সেই সময়ে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অমৃতা বিশ্বাস পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন, স্কুলের গেটে তালা ঝুলছে। অমৃতা বিশ্বাস বলছেন, ‘‘আমি রুটিন পরিদর্শনে এসে দেখলাম, স্কুলে তালা ঝুলছে। স্কুল বন্ধ রাখার জন্য কোনও অনুমতিও কেউ নেননি। গোটা ঘটনা জানতে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে তলব করেছি।’’

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক জাকিরুল ইসলামের দাবি, ‘‘স্কুল বন্ধ ছিল না। দিবা বিভাগের বদলে প্রাতঃবিভাগে স্কুল হয়েছে।’’ কিন্তু আচমকা কেন প্রাতঃবিভাগে স্কুল হয়েছে? তার অবশ্য সদুত্তর দেননি জাকিরুল। স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি ওবাইদুর রহমা‌ন জানান, মাদ্রাসার এক শিক্ষকের বিয়ের প্রীতিভোজ ছিল। সেখানে অনেক শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির সদস্যেরা গিয়েছিলেন। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের স্কুলে আসার কথা জানা ছিল না।’’

অভিভাবকেরা জানাচ্ছেন, বেশিরভাগ পড়ুয়া প্রাতঃবিভাগে স্কুলের কথা জানত না। ফলে অনেকেই অনুপস্থিত ছিল। তবে যারা গিয়েছিল তারাও ফিরে এসেছে কিছুক্ষণ পরেই। অভিভাবক রন্টু শেখ বলছেন, ‘‘এ দিন সকালে ছেলে স্কুলে গিয়েছিল। কেন সকালে স্কুল জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ছেলে তা জানাতে পারেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE