Advertisement
E-Paper

শ্লীলতাহানির নালিশ করায় প্রহৃত স্বাস্থ্যকর্তা

রাতে হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে নার্সের হাত ধরে টানাটানি, অভব্য আচরণ ও তাঁদের শ্লীলতাহানির অভিযোগে জড়িত স্থানীয় কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে থানার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ব্লক মেডিক্যাল অফিসার (বিএমওএইচ)।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৪৬

রাতে হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে নার্সের হাত ধরে টানাটানি, অভব্য আচরণ ও তাঁদের শ্লীলতাহানির অভিযোগে জড়িত স্থানীয় কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে থানার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ব্লক মেডিক্যাল অফিসার (বিএমওএইচ)। জানা গিয়েছে, এরপরই অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য ওই যুবকেরা বিএমওএইচকে হুমকি দিতে থাকে। কিন্তু, তাতে কাজ না হওয়ায় অভিযুক্তরা দল বেঁধে হাসপাতাল কোয়ার্টারে চড়াও হয়ে গ্রিলের তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে বিএমওএইচ ঋষিকেশ মিত্রকে বেধড়ক মারধর করে। রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারি ব্লকের রসিদপুর ব্লক হাসপাতাল চত্বরে ঘটনাটি ঘটে।

সোমবার বিএমওএইচ ঋষিকেশবাবু, রাকেশ সরকার, সৌম্যজিত তালুকদার, সঞ্জয় সাহা সহ পাঁচজন ও অপরিচিত আরও পাঁচ-ছয় জনের বিরুদ্ধে বংশীহারি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার পর প্রায় ২৪ ঘন্টা কেটে গেলেও পুলিশ কাউকে ধরতে না পারায় ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।

দক্ষিণ দিনাজপুরের মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে জানিয়ে অবিলম্বে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। ওই দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে হাসপাতালের কর্মীরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করে পরিষেবা বন্ধের কথা ভাবছেন। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে নার্স ও চিকিতসকদের আস্থা ফেরাতে না পারলে ওই হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হয়ে পড়বে বলে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক আশঙ্কা করছেন। জেলা পুলিশ সুপার রসিদ মুনির খান বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। শীঘ্রই অভিযুক্তরা ধরা পড়বে।’’

বংশীহারির রসিদপুর এলাকায় ওই ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শয্যা সংখ্যা ৩০টি হলেও সবসময় ৫০ জনের উপর রোগী ভর্তি থাকেন। গত ৫ এপ্রিল এলাকার এক বধূ ওই হাসপাতালে ভর্তি হন। অভিযোগ, ওই মহিলার স্বামীর বন্ধু বলে পরিচয় দিয়ে ওই যুবকরা ওইদিন রাতে তাঁকে দেখতে ওই হাসপাতালে যায়। অভিযোগ, তারা মদ্যপ অবস্থায় ছিল। চিকিৎসা ঠিক মতো হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলে দলটি নার্স ও আয়াদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করে। প্রতিবাদ করলে এক নার্সের হাত ধরে টানাটানি করে ও তাঁর শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ।

পরদিন ওই নার্সের লিখিত অভিযোগ পেয়ে বিএমওএইচ ঋষিকেশবাবু থানায় রাকেশ, সৌম্যজিতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। ঋষিকেশবাবু বলেন, ‘‘এরপরই অভিযুক্তরা থানা থেকে ওই অভিযোগ তুলে নিতে হুমকি দিতে থাকে। ব্যাপারটি আমল দিইনি। কিন্তু রাতে গ্রিলের তালা ভেঙে ১০-১২ জনের দল আচমকা ঘরে ঢুকে আমাকে ঘুম থেকে তুলে ঘুষি চড় মারতে থাকে। মাটিতে ফেলে লাথিও মারে।’’ তাঁর চিৎকারে হাসপাতালের কর্মীরা ছুটে এলে অভিযুক্তরা
পালিয়ে যায়।

অভিযুক্তরা বুনিয়াদপুর এলাকার এক তৃণমূল নেতা তথা আইনজীবীর ছত্রছায়ায় থাকে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিন তাঁকে ফোন করা হলেও ওই নেতা ফোন ধরেননি। তবে বংশীহারির বাসিন্দা তথা তৃণমূল জেলা সাধারণ সম্পাদক অখিল বর্মন বলেন, ‘‘অভিযুক্তরা কেউ দলের সক্রিয় কর্মী নয়। এখন তো সবাই তৃণমূল। অপকর্ম করার পর নিজেদের বাঁচাতে তৃণমূল সমর্থক বলে দাবি করে। অভিযুক্তরা যে দলের সমর্থক হোক, রং না দেখে পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।’’

molestation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy