ধর্মতলার অনশনমঞ্চে অনশনরত চিকিৎসকদের মঙ্গলবারের স্বাস্থ্য রিপোর্ট। —নিজস্ব চিত্র।
ডাক্তারদের ‘আমরণ অনশন’-এর ২৩১ ঘণ্টারও বেশি অতিক্রান্ত। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রয়েছেন অনশনরত অনিকেত মাহাতো, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, পুলস্ত্য আচার্য এবং তনয়া পাঁজা। উত্তরবঙ্গে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অলোক বর্মাও। তবু ধর্মতলার অনশনমঞ্চে এখনও অনড় পাঁচ আন্দোলনকারী। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে। কেমন আছেন অনশনকারীরা?
আপাতত দিনে দু’বার স্বাস্থ্যপরীক্ষা হচ্ছে তাঁদের। সে সব পরীক্ষার রিপোর্ট বলছে, সকলেরই শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। মাথা ঘুরছে, কমছে রক্তে শর্করার মাত্রা। রক্তচাপ, পাল্স রেট ওঠানামা করছে। দেখা দিচ্ছে কিডনির সমস্যাও। ফলে অনশনকারীদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন সকলেই।
১০ দফা দাবিতে গত ৫ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টা থেকে ধর্মতলায় আমরণ অনশন শুরু করেছেন কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের ছয় জুনিয়র ডাক্তার। তাঁরা হলেন তনয়া পাঁজা, স্নিগ্ধা হাজরা, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, অর্ণব মুখোপাধ্যায় এবং পুলস্ত্য আচার্য। গত রবিবার অনশনে যোগ দেন আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোও। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের দুই ডাক্তার সৌভিক এবং অলোক বর্মাও অনশন শুরু করেছিলেন। শুক্রবার অসুস্থ হয়ে পড়েন অলোক। তাঁকেও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শনিবার রাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কলকাতা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয় অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়কে। পেটে যন্ত্রণা হচ্ছিল তাঁর। রবিবার অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন হন পুলস্ত্য। সোমবার তনয়াকেও হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। এর মাঝে শুক্রবার রাতে নতুন করে অনশনে যোগ দিয়েছেন আরও দু’জন। তাঁরা হলেন পরিচয় পণ্ডা এবং আলোলিকা ঘোড়ুই। উত্তরবঙ্গেও অলোকের জায়গায় নতুন করে অনশনে বসেছেন সন্দীপ মণ্ডল।
অনশনকারী ডাক্তারেরা মূলত জল খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। বেড়েছে দুর্বলতা। সকলেই অনশনকারীদের রক্তে সিবিজির মাত্রা নিয়ে উদ্বিগ্ন। গ্যাস্ট্রো সংক্রান্ত নানা সমস্যা বাড়ছে স্নিগ্ধার। রবিবার রাত জল খেয়েও বমি করেছেন। সেই সঙ্গে মাথা ধরা এবং দুর্বলতা রয়েছে সকলেরই। শরীরে জলশূন্যতার কারণে পেশিতে টান ধরার মতো সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। আপাতত দিনে দু’বার করে তাঁদের রক্তচাপ, নাড়ির গতি, ক্যাপিলারি ব্লাড গ্লুকোজ (সিবিজি) মাপা হচ্ছে। রোজকার মতো মঙ্গলবার সকালেও অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়েছে। অনশনমঞ্চে টাঙানো বোর্ডে লেখা হয়েছে তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার সেই রিপোর্ট।
কেমন আছেন ধর্মতলার বাকি পাঁচ অনশনকারী? উত্তরবঙ্গে সৌভিক, সন্দীপদেরই বা শারীরিক অবস্থা কেমন?
একনজরে একাদশ দিনের রিপোর্ট:
অর্ণব মুখোপাধ্যায়, পিডিটি প্রথম বর্ষ, এসএসকেএম
রক্তচাপ ১১২/৯০
নাড়ির গতি ৯৬
রক্তে শর্করার মাত্রা (সিবিজি) ৬৯
সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, পিজিটি তৃতীয় বর্ষ, কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ
রক্তচাপ ১০২/৭৬
নাড়ির গতি ৮০
রক্তে শর্করার মাত্রা (সিবিজি) ৬৮
স্নিগ্ধা হাজরা, সিনিয়র রেসিডেন্ট, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ
রক্তচাপ ১০০/৭৪
নাড়ির গতি ৭৬
রক্তে শর্করার মাত্রা (সিবিজি) ৬৬
পরিচয় পণ্ডা, পিজিটি দ্বিতীয় বর্ষ, শিশুমঙ্গল হাসপাতাল
রক্তচাপ ১৩৬/৮৪
নাড়ির গতি ৮৬
রক্তে শর্করার মাত্রা (সিবিজি) ৭১
আলোলিকা ঘোড়ুই, পিজিটি প্রথম বর্ষ, কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ
রক্তচাপ ১০৪/৮৬
নাড়ির গতি ৯২
রক্তে শর্করার মাত্রা (সিবিজি) ৬৬
সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ
রক্তচাপ ১০৪/৬৬
নাড়ির গতি ৬৮
রক্তে শর্করার মাত্রা (সিবিজি) ৯২
সন্দীপ মণ্ডল, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ
রক্তচাপ ১৫০/৯০
নাড়ির গতি ৯২
রক্তে শর্করার মাত্রা (সিবিজি) ১২০
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy