Advertisement
E-Paper

এসএসসির নিয়োগপ্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি নিয়ে মামলার শুনানি শেষ ডিভিশন বেঞ্চে, রাজ্যের আইনজীবী কী যুক্তি দিলেন?

শুনানিপর্বে এজি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট পুরনো নিয়োগ বাতিল করে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে বলেছে। শীর্ষ আদালত কোথাও বলে দেয়নি ২০১৬ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়া নতুন করে করতে হবে।’’

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৫ ১৭:৪৯
Hearing before Calcutta High Court on West Bengal SSC Recruitment Case

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি নিয়ে মামলার শুনানি সোমবার শেষ হল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ রায় ঘোষণা স্থগিত রাখল। সোমবারের শুনানিপর্বে রাজ্যের হয়ে সওয়াল করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত। এসএসসি কর্তৃপক্ষের হয়ে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে, বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী হিসেবে ছিলেন অনিন্দ্য মিত্র এবং বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।

অ্যাডভোকেট জেনারেলের সওয়াল

শুনানিপর্বে এজি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট পুরনো নিয়োগ বাতিল করে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে বলেছে। শীর্ষ আদালত কোথাও বলে দেয়নি ২০১৬ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়া নতুন করে করতে হবে। হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট শুধু শূন্যপদ পূরণ করতে বলেছে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে এসএসসি নতুন বিধি তৈরি করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করছে। যদি মামলাকারীদের মনে হয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করা হয়েছে তারা সেখানে গিয়ে বলুন। যদি ভুল থাকে, শীর্ষ আদালত তা বলে দেবে। ইতিমধ্যে এসএসসির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়েছে শীর্ষ আদালতে। সেখানে প্রায় ১৮০টি রিভিউ পিটিশন করা হয়েছে।’’

প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিলের মামলায় শীর্ষ আদালতে এসএসসি যে হলফনামা দিয়েছিল, গত সপ্তাহের শুনানিতে তা দেখতে চেয়েছে বিচারপতি সেন এবং বিচারপতি দাসের ডিভিশন বেঞ্চ। এজি সওয়াল করতে গিয়ে বলেন, ‘‘চাকরিতে অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কোনও নিয়োগপ্রক্রিয়ায় প্রার্থীদের যোগ্যতামান কী হবে, নিয়োগকারী নির্ধারণ করে। এসএসসি সিদ্ধান্ত নিতে পারে কোন কোন যোগ্যতা থাকা প্রার্থীদের আবেদন গ্রহণ করা হবে। যোগ্যতামান নিয়ে রায়ে সুপ্রিম কোর্ট কোনও নির্দেশ দেয়নি। এসএসসি নিজের ক্ষমতাবলে প্রার্থীদের যোগ্যতামান নির্ধারণ করেছে।’’

এজি তাঁর সওয়ালে আরও বলেন, ‘‘২০১৬ সালের নিয়োগবিধির পরে ২০১৯ সালের নিয়োগবিধি তৈরি করা হয়েছিল। এখন ২০২৫ সালের নিয়োগবিধি। কেউ এসএসসির নিয়োগবিধিকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে না। ২৬ হাজার চাকরি বাতিল ২০১৯ সালের নিয়োগবিধির পরে এসেছিল। কিন্তু সেই বিধিকে কেউ চ্যালেঞ্জ করেনি।’’ সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, প্রতিটি নিয়োগপ্রক্রিয়াতেই সম্ভাব্য শূন্যপদের পার্থক্য থাকে।

এসএসসির আইনজীবী কল্যাণের যুক্তি

এসএসসির হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে আইনজীবী কল্যাণ বলেন, ‘‘কী ভাবে কমিশনের আইনকে চ্যালেঞ্জ করা যায়? হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে বলেছে। কিন্তু কোন বিধি মেনে হবে তা উল্লেখ করেনি। শুধু বলেছে ঘোষিত শূন্যপদে নিয়োগ করতে হবে। এটা ২০১৯ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়াও হতে পারে। আবার নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়াও হতে পারে। ফলে কোথাও বলে দেওয়া নেই ২০১৬ সালের বিধি মেনেই নিয়োগ করতে হবে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর যুক্তি, ‘‘গত ন’বছর ধরে নতুনেরা সুযোগ পাননি। আপনার যদি যোগ্যতা থাকে কেন মামলা করছেন? নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যোগ দিন। উত্তীর্ণ হয়ে চাকরি করুন। আসল সমস্যায় ১৫০০ দিন ধরে ময়দানে বসে ছিলেন। এখন এটা চাই-ওটা চাই বলছেন।’’

কল্যাণের দাবি, ২০১৬ সালের বিধি মেনে বয়সে ছাড় দেওয়া সম্ভব ছিল না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মান্যতা দিয়ে ওই বিধি সংশোধন করতে হত। বয়সে ছাড় দিতে হলে ২০১৬ সালের বিধি সংশোধন অথবা নতুন বিধি তৈরির প্রয়োজনীয়তা ছিল। আবার আদালত যদি নতুন বিধি খারিজ করে দেয় তবে ২০১৬ সালের বিধিতে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তিনি বলেন, ‘‘একটি নিয়োগপ্রক্রিয়ায় সবচেয়ে ভাল প্রার্থীকেই বাছাই করাই লক্ষ্য হয়ে থাকে। ভাল প্রার্থী কারা বাছাই করার অধিকার আমার রয়েছে। কেউ ৪০ শতাংশ, আর কেউ ৭০ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। ৭০ শতাংশ যিনি পেয়েছেন সেই প্রার্থীকে সুযোগ দেওয়া উচিত।’’

বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের তরফে অনিন্দ্য ও বিকাশ

ডিভিশন বেঞ্চে সওয়াল করতে গিয়ে অনিন্দ্য বলেন, ‘‘বিধি সংশোধন করবে কি না, সেটা এসএসসির বিষয়। তাদের ভুলে এমন পরিস্থিতি হয়েছে। এখন ইচ্ছাকৃত ভাবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করছে এসএসসি। সুপ্রিম কোর্ট নিয়োগ বাতিল করেছে। কোনও প্যানেল বাতিল করেনি। সুপ্রিম কোর্ট কোথাও বলে দেয়নি নতুন নিয়োগ শুরু হলে যোগ্যতামান বদল করতে পারবে এসএসসি।’’ অন্য দিকে আইনজীবী বিকাশ বলেন, ‘‘দুর্নীতির কারণে আগের নিয়োগ বাতিল হয়েছে। সেখানে ঘোষিত শূন্যপদে নতুন করে নিয়োগ করতে হবে বলে রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। ২০১৯ সালের বিধি মেনে নিয়োগ হয়নি।’’

Bengal SSC Recruitment Case SSC Recruitment Case Calcutta High Court SSC SSC Recruitment Bengal SSC Recruitment Verdict
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy