Advertisement
E-Paper

পার্থদের জামিন নিয়ে দুই বিচারপতির ভিন্ন মতের পর তৃতীয় বেঞ্চে শেষ হল শুনানি, রায়দান স্থগিত

নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের মামলায় জামিন চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ন’জন। ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতিরা পার্থ-সহ পাঁচ জনের জামিনের বিষয়ে একমত হতে পারেননি। মামলাটি যায় তৃতীয় বেঞ্চে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:২৯
কলকাতা হাই কোর্টের তৃতীয় বেঞ্চে পার্থ চট্টোপাধ্যায়দের মামলার শুনানি শেষ হয়েছে।

কলকাতা হাই কোর্টের তৃতীয় বেঞ্চে পার্থ চট্টোপাধ্যায়দের মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। —ফাইল চিত্র।

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ পাঁচ জনের জামিনের মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের তৃতীয় বেঞ্চে শুনানি শেষ হল। রায়দান আপাতত স্থগিত রাখলেন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই পাঁচ জনের জামিনের বিষয়ে একমত হতে পারেনি। তাই বিচারপতি চক্রবর্তীর বেঞ্চে মামলাটি পাঠানো হয়েছিল। শীঘ্রই এই মামলার রায়দানের সম্ভাবনা রয়েছে।

নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের করা মামলায় জামিন চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পার্থ-সহ ন’জন। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ গত ২০ নভেম্বর এই মামলার রায় দেয়। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় ন’জনেরই জামিন মঞ্জুর করেন। কিন্তু বিচারপতি সিংহ রায় তাঁর সঙ্গে একমত হতে পারেননি। তিনি কৌশিক ঘোষ, শেখ আলি ইমাম, সুব্রত সামন্ত রায় এবং চন্দন ওরফে রঞ্জন মণ্ডলের জামিন মঞ্জুর করলেও পার্থ, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, অশোক সাহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিংহের জামিনে ‘না’ করে দেন। ফলে এই পাঁচ জনের জামিন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল।

ডিভিশন বেঞ্চের কোনও মামলায় বিচারপতিরা একমত হতে না পারলে মামলাটি কোন বেঞ্চে যাবে, তা স্থির করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি তৃতীয় কোনও বেঞ্চে মামলাটি ফয়সালার জন্য পাঠান। এ ক্ষেত্রে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য পাঠিয়েছিলেন বিচারপতি চক্রবর্তীর একক বেঞ্চে। সেখানে মঙ্গলবার মামলার শুনানি শেষ হয়েছে।

বিচারপতি চক্রবর্তীর বেঞ্চে সিবিআইয়ের পক্ষে মামলাটির সওয়াল করেন আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী। তিনি জানান, নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত এখনও চলছে। কিন্তু এই পাঁচ জনের ক্ষেত্রে তদন্ত আপাতত শেষ হয়েছে। তাঁদের ‘প্রভাবশালী’ বলে উল্লেখ করেছে সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থার বক্তব্য, পার্থ-সহ ওই পাঁচ জন এখনও এতটাই প্রভাবশালী যে, তাঁদের বিরুদ্ধে ট্রায়াল শুরু করা যাচ্ছে না। রাজ্য সরকারের প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না।

বিচারপতি চক্রবর্তী জানতে চান, প্রায় আড়াই বছর জেলবন্দি থাকার পরেও কেন অভিযুক্তদের হেফাজতে প্রয়োজন সিবিআইয়ের? প্রভাবশালী তকমার বিষয়টিকে এ ক্ষেত্রে খুব একটা গুরুত্ব দিতে চায়নি আদালত। বিচারপতি এ-ও জানিয়েছেন, ট্রায়ালের সঙ্গে জামিনের কোনও সম্পর্ক নেই।

উল্লেখ্য, পার্থদের জামিনের বিরোধিতা করার ক্ষেত্রে বিচারপতি সিংহ রায়ের মোট চারটি পর্যবেক্ষণ ছিল। প্রথমত, এই সংক্রান্ত মামলার তথ্য দেখে বিচারপতির মনে হয়েছে, রাজ্য সরকারের একাংশ অভিযুক্তদের পরোক্ষ ভাবে বাঁচাতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা জামিন পেয়ে গেলে বিষয়টি দুর্ভাগ্যের হবে। দ্বিতীয়ত, বিচারপতি সিংহ রায় জানিয়েছেন, নিয়োগ মামলায় কেউ তাঁকে এমন কোনও তথ্য দেখাতে পারেননি, যাতে মনে হয়, সিবিআই ট্রায়াল শুরু করতে অযথা দেরি করছে। ফলে কেন্দ্রীয় সংস্থার দেরির কারণে পার্থেরা জেলে, তা মনে করছেন না বিচারপতি। তৃতীয়ত, বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, সমগ্র নিয়োগ দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড এই পাঁচ জন। তাঁদের দ্বারাই দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে। সাধারণ অভিযুক্তদের সঙ্গে পার্থদের তুলনা করলে চলবে না, জানিয়েছেন তিনি। চতুর্থত, পার্থ-সহ যে পাঁচ জনকে জামিন দেওয়া হয়নি, তাঁরা এখনও প্রভাবশালী। তাঁরা জামিন পেলে নিয়োগ মামলার তথ্যপ্রমাণ নষ্ট হতে পারে, মনে করেছেন বিচারপতি সিংহ রায়। আদালতে এই বিষয়গুলিরও উল্লেখ করা হয়েছে।

Partha Chatterjee Bail Plea Calcutta High Court CBI
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy