এপ্রিলের শুরু থেকেই গ্রীষ্মের তীব্র তাপে হাসফাঁস করতে শুরু করেছে দক্ষিণবঙ্গ। মাঝে দিন কয়েক বৃষ্টি হলেও আপাতত বৃষ্টির ছিটেফোঁটাও নেই। সঙ্গে বেলা বাড়তেই মাথার উপর চড়া রোদ। হাওয়া অফিসও জানিয়ে দিয়েছে, উত্তরে বৃষ্টি হলেও কলকাতা-সহ দক্ষিণের জেলাগুলিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা আপাতত ক্ষীণ। বরং আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা বাড়বে। চলবে তাপপ্রবাহও। শনিবার পর্যন্ত সাত জেলায় তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বাসিন্দাদের দেওয়া হয়েছে সতর্কবার্তাও।
গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গে এক ধাক্কায় পাঁচ থেকে ছ’ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। বুধবার ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বীরভূমে তাপপ্রবাহের সতর্কতা রয়েছে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার তাপপ্রবাহ চলবে পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও বাঁকুড়ায়। এই তিন জেলায় জারি হয়েছে লাল সতর্কতা। পাশাপাশি, তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি থাকবে পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ এবং পশ্চিম মেদিনীপুরেও। শনিবারও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং মুর্শিদাবাদে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি হয়েছে। আলিপুর জানিয়েছে, আগামী ২৬ তারিখের আগে আবহাওয়ার বিশেষ পরিবর্তন হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। আপাতত সর্বত্র আবহাওয়া থাকবে শুকনো। তবে রবিবার থেকে দু’-একটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে হালকা বৃষ্টি হতে পারে।
আরও পড়ুন:
বর্তমানে বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকার জন্যই পাল্লা দিয়ে গরম বাড়ছে দক্ষিণবঙ্গে। বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প রাজ্যে ঢুকলেও সেই জলীয় বাষ্পের বৃষ্টি ঝরানোর ক্ষমতা নেই। অথচ ওই বাষ্প ভূপৃষ্ঠের কাছে জমা হয়ে চাদরের মতো হয়ে থাকছে, ফলে তাপ নিঃসরণ হচ্ছে না। বৃষ্টিও হচ্ছে না দক্ষিণবঙ্গে। পাশাপাশি, ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে গরম হাওয়া পশ্চিমের জেলাগুলিতে ঢুকছে। এর জেরেও তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
সাধারণত কোনও স্থানের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত ৫ ডিগ্রি বেশি থাকলে এবং দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁলে, সেই পরিস্থিতিকে তাপপ্রবাহ বলে ঘোষণা করা হয়। এই আবহে দক্ষিণবঙ্গের জন্য বেশ কিছু সতর্কতাও জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের দীর্ঘ ক্ষণ বাইরে না থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পারতপক্ষে সকলকেই হালকা রঙের ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। সঙ্গে রাখতে হবে ছাতা কিংবা টুপি। পাশাপাশি, শরীরে জলশূন্যতা এড়াতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।