Advertisement
E-Paper

তা বলে প্রথম দশে! কাটছে না বিস্ময়

এ বছর মাধ্যমিকে কলকাতা পিছিয়ে ছিল। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম দশে আছেন মহানগরের ১৩ জন পরীক্ষার্থী! তাঁদের অনেকেই বলছেন, পরীক্ষা ভাল হলেও প্রথম দশে থাকবেন, তা প্রত্যাশা ছিল না।

দীক্ষা ভুঁইয়া ও তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৮ ০৩:৫১
অভ্রদীপ্তা ঘোষ, অরিত্র রায়, তন্নিষ্ঠা মণ্ডল এবং দিশা ঘোষ।

অভ্রদীপ্তা ঘোষ, অরিত্র রায়, তন্নিষ্ঠা মণ্ডল এবং দিশা ঘোষ।

সকালে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল শুনতে টিভি খুলে বসেছিল ঘোষ পরিবার। সে সময়েই পর্দায় ভেসে উঠল ছোট মেয়ে অভ্রদীপ্তার নাম। যাদবপুর
বিদ্যাপীঠের ছাত্রীটি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৯৭.২ শতাংশ নম্বর পেয়ে এ বার রাজ্যে পঞ্চম স্থানে! অভ্রদীপ্তা বলছেন, ‘‘পরীক্ষা দিয়ে মনে হয়েছিল স্ট্যান্ড করব। কিন্তু পঞ্চম হব ভাবিনি।’’ টেস্টের ফল অবশ্য তেমন ভাল হয়নি। তাই শেষ কয়েক মাস দিনে ১১-১২ ঘণ্টা পড়তে হয়েছে তাঁকে। ভবিষ্যতে রাশিবিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চান তিনি। পড়াতে চান কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর অবসরে? গল্পের বই। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় আর সিডনি শেলডন সবচেয়ে প্রিয়।

এ বছর মাধ্যমিকে কলকাতা পিছিয়ে ছিল। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম দশে আছেন মহানগরের ১৩ জন পরীক্ষার্থী! তাঁদের অনেকেই বলছেন, পরীক্ষা ভাল হলেও প্রথম দশে থাকবেন, তা প্রত্যাশা ছিল না।

যোধপুর পার্ক পাথফাইন্ডার স্কুলের অরিত্র রায় যেমন প্রথমে নিজের নাম শুনেও বিশ্বাস করতে পারেননি। স্কুলের নাম ঘোষণা হওয়ায় সম্বিত ফিরেছিল তাঁর। তিনিও এ বার রাজ্যে পঞ্চম স্থানে।
‘‘প্রথমে ভেবেছিলাম আমার নামে অন্য কেউ হবে। কিন্তু যখন স্কুলের নাম বলল, তখন বুঝলাম,’’ বলছেন তিনি। কোনও গৃহশিক্ষক ছিল না অরিত্রের। দিনে ৫-৬ ঘণ্টার বেশি বই নিয়েও বসতেন না। বরং অবসর পেলে গান ও গিটারে ডুবে থাকাই অভ্যাস তাঁর।

৯৭ শতাংশ নম্বর পেয়ে ষষ্ঠ স্থানে থাকা তন্নিষ্ঠা মণ্ডল অবশ্য অনেক আগে থেকেই পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন। দিনে সাত-আট ঘণ্টা করে পড়াশোনা করতেন। প্রতিটি বিষয়ে গৃহশিক্ষক ছিল তাঁর। তবে মায়ের অনুপ্রেরণাই তাঁকে এগিয়ে নিয়ে যায় বলে জানান এই কৃতী। অবসরে গান, আবৃত্তিই তাঁর নেশা। জমিয়ে আড্ডা দিতেও খুব ভালবাসেন।

৯৬.৮ শতাংশ নম্বর পেয়ে সপ্তম স্থানে এ বার বেথুন স্কুলের ছাত্রী দিশা ঘোষ। ফল প্রকাশের পরে স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মেতেছিলেন তিনি। ভবিষ্যৎ নিয়ে বললেন, ‘‘দেখা যাক! আপাতত তো অর্থনীতি নিয়ে পড়ার ইচ্ছে আছে।’’ দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই
অর্থনীতি, রাশিবিজ্ঞান ও অঙ্কের চর্চায় মন মজেছে তাঁর। ভাল লাগে সংস্কৃতও। অবসর বলতে শীর্ষেন্দু-সত্যজিৎ, সঙ্গে ‘পপ’ মিউজিক। ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি ঝোঁক ছিল দিশার। এই আগ্রহ তৈরির পিছনে অবশ্য মেয়ের স্কুলকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন তাঁর মা, পেশায় রসায়নের
শিক্ষিকা শর্মিষ্ঠা ঘোষ। বলছেন, ‘‘ছোট থেকে যে স্কুলে পড়েছে, সেখানেই ওর প়ড়ার প্রতি ভালবাসা তৈরি হয়েছে।’’

পাথফাইন্ডার স্কুল থেকে এ বার দশম স্থান পেয়েছেন সায়নী দত্ত। বন্ধু অরিত্রের মতোই গৃহশিক্ষকের বদলে ক্লাস ও স্কুলের প্রশিক্ষণই ছিল তাঁর ‘গাইড’। পরীক্ষা ভাল হলেও একেবারে মেধাতালিকায় ঠাঁই হবে, এতটা ভাবতে পারেননি তিনিও। ইচ্ছে আছে, আইআইটিতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার। অবসরে নাচ নিয়েই থাকতে ভালবাসেন তিনি।

এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে কৃতীদের তালিকায় রয়েছেন নব নালন্দা স্কুলের দুই পড়ুয়া। সাগ্নিক তালুকদার ৯৭ শতাংশ নম্বর পেয়ে ষষ্ঠ স্থানে। ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিং নয়, তিনি পড়বেন কল্যাণীর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্টিফিক এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ-এ। ইচ্ছে কেমিক্যাল সায়েন্স নিয়ে গবেষণা করার। নব নালন্দারই আর এক ছাত্র তীর্থশঙ্খ বাছার এ বার দশম স্থানে। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চান তিনি। নিট-এর ফলও ভাল হয়েছে। বিদ্যাভারতী স্কুল থেকে এ বার নবম স্থান পেয়েছেন শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়। ভবিষ্যতে অর্থনীতিতে উচ্চশিক্ষা শেষ করে গবেষণা করার ইচ্ছে তাঁর।

৯৬.৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে অষ্টম স্থানে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র শ্রেয়াংশ চট্টোপাধ্যায়। মাধ্যমিকেও প্রথম দশে ছিলেন তিনি। ফল শুনেই তিন বন্ধুকে নিয়ে সোজা সিনেমা হলে চলে যান। ভবিষ্যতে পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়তে চান এই কৃতী। তাঁর সহপাঠী অর্ঘ্য দে-ও অষ্টম স্থানে। স্কুলের আর এক সহপাঠী জয়েশ সাউ ৯৬.২ শতাংশ নম্বর পেয়ে রয়েছেন মেধাতালিকার দশম স্থানে।

Higher Secondary Results 2018 Kolkata Merit List Successful
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy