স্বাস্থ্য দফতরের দল নিয়মিত ওই হাসপাতালের চিকিৎসা এবং বিলের উপরে নজরদারি করত। প্রতীকী ছবি।
কোভিড অতিমারি পরিস্থিতিতে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতাল অধিগ্রহণ করেছিল রাজ্য সরকার। বলা হয়েছিল, রাজ্য সরকারের পাঠানো কোভিড রোগী ছাড়া অন্য কোনও রোগী ভর্তি করা যাবে না ওই হাসপাতালে। রোগীদের কাছ থেকে কোনও টাকা নেওয়া চলবে না। তার বিনিময়ে রাজ্যই সব বিল মেটাবে। ওই হাসপাতালের অভিযোগ, প্রথম দফাতেই প্রায় ১৩০ কোটি টাকা বিল হয়েছিল। তার মধ্যে ৫৯ কোটি টাকা নানা ছুতোয় দিতে চাইছে না সরকার। ওই টাকা আদায় করতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে হাওড়ার ফুলেশ্বরের হাসপাতালটি।
আদালত সূত্রের খবর, ২০২০ সালের ৩১ মার্চ বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালটি সাময়িক অধিগ্রহণ করে রাজ্য। সঙ্কটজনক রোগীদের চিকিৎসা করানোর জন্য ওই হাসপাতালটিকে নির্দিষ্ট করা হয়। কিন্তু রোগীর চিকিৎসা হলেও টাকা দেওয়া হচ্ছিল না। হাসপাতালটি অলাভজনক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় তাঁদের আর্থিক সঙ্কট দেখা দেয়। হাসপাতালের দাবি, তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের অনুরোধে অতিমারি সামলাতে আরও ২০০ শয্যা বৃদ্ধি করে তারা। সব মিলিয়ে প্রায় ১৩০ কোটি টাকা বিল হয়েছিল। নানা অনুরোধ-উপরোধের পর রাজ্য প্রায় ৬০ কোটি টাকা দিয়েছিল বলে হাসপাতালটি আদালতে জানিয়েছে।
সূত্রের খবর, অতিমারির সময় স্বাস্থ্য দফতরের দল নিয়মিত ওই হাসপাতালের চিকিৎসা এবং বিলের উপরে নজরদারি করত। তা সত্ত্বেও পরবর্তী কালে হাসপাতালটি টাকার দাবি করলে সরকার অডিটর নিয়োগ করে। সেই রিপোর্টেও ন্যায্য বিল হয়েছে বলে জানানো হয়। গত জানুয়ারি মাসে হাসপাতালটিকে বন্ধনমুক্ত করে রাজ্য। তবে বকেয়ার ভারে হাসপাতালটি রীতিমতো ধুঁকছে বলেও সূত্রের দাবি। অনেকেই বলছেন, কোনও হাসপাতাল আর্থিক সঙ্কটে পড়লে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হয়। তার ফল ভুগতে হয় আমজনতাকেই।
ওই হাসপাতালের অভিযোগ, নবান্নের কর্তারা ন্যায্য বিল মেনে নিয়ে টাকা ফেরত দেওয়ার পদ্ধতি বিচারে একটি কমিটি নিয়োগ করার কথা বলেছিলেন। তার পরেও টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। শেষমেশ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলে রাজ্য এসে আদালতে পাল্টা দাবি করে, তারা বেশি টাকা দিয়েছে। তাই নতুন একটি কমিটি তা খতিয়ে দেখবে। আদালতের নির্দেশে ওই হাসপাতালের আইনজীবী দীপন সরকার-সহ অন্যান্য কর্তা কমিটির কাছে যান। কিন্তু সেখানেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে সরকারি সূত্রের দাবি।
আদালত সূত্রের দাবি, এ ভাবেই টালবাহানা চলছিল। প্রথমে বিচারপতি দেবাংশু বসাক এই মামলাটির বিচার করছিলেন। তিনি রাজ্যের কাছে রিপোর্টও চেয়েছিলেন। পুজোর ছুটির আগে মামলাটি বিচারপতি শিবকান্ত প্রসাদের এজলাসে স্থানান্তরিত হয়। তিনি শুনানির পর রাজ্যের কাছে হলফনামা চেয়েছেন। পুজোর ছুটির মধ্যে তা জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে এখনও তা জমা পড়েনি বলেই আদালতের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy