Advertisement
E-Paper

Vaccination: স্কুল-পরিচয়ই নেই, ওরা টিকা পাবে কী ভাবে

বালক বয়স পেরিয়ে আসা ওদের কেউ কেউ শহরের ফুটপাতবাসী, কেউ বা পরিযায়ী শ্রমিকের সন্তান। স্কুলের পরিচয়পত্র বা আধার কার্ড কিছুই নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:৫৪
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

স্কুলের পাট দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে কার্যত বন্ধই। তবে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের করোনা টিকাকরণে ভরসা সেই স্কুলতুতো পরিচয়। তাই বিস্তর টানাপড়েনের পরে কেন্দ্রীয় নির্দেশে রাজ্যে রাজ্যে নতুন বছরে কিশোর-কিশোরীদের টিকা কর্মসূচি শুরু হলেও ওই বয়সিদের একটা বড় অংশই বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। কেননা তাদের যে স্কুল-পরিচয় নেই।

বালক বয়স পেরিয়ে আসা ওদের কেউ কেউ শহরের ফুটপাতবাসী, কেউ বা পরিযায়ী শ্রমিকের সন্তান। স্কুলের পরিচয়পত্র বা আধার কার্ড কিছুই নেই। তাদের বা তাদের মা-বাবারও কোউইন অ্যাপে নাম নথিভুক্ত করার সাধ্য নেই। ছোটদের এমন একটা বড় অংশকেই ঠিক কী ভাবে টিকা দেওয়া হবে, কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের এই প্রবল ধাক্কার দুঃসময়েও তার স্পষ্ট রূপরেখা নেই। প্রবীণ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অপূর্ব ঘোষ বলছেন, “এটা অনেকটাই রান্নার সব সরঞ্জাম ফেলে পিকনিক করতে চলে যাওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ ভুল। ছোটদের মধ্যে যারা স্কুলে যায় না, যাদের পরিচয়ের নথি বলতে কিছুই নেই, তারা কী ভাবে টিকা পাবে— এই বিষয়টিই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশে স্পষ্ট নয়। কিন্তু কাজটা করতে হবে। এবং সদিচ্ছা থাকলে উপায়ও বেরোবে।”

অত্যন্ত গুরুতর এই কাজটা কী ভাবে সারা যায়, তা নিয়ে সদ্য বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে নিয়ে বৈঠকে বসেছেন শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী। আজ, বুধবার জাতীয় যুব দিবসে কলকাতার হেস্টিংস উড়ালপুল এবং দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াকের নীচের বাসিন্দা কয়েকটি

কিশোর-কিশোরীকে নিয়ে টিকা কর্মসূচির আয়োজন করেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাদের তরফে বাপ্পাদিত্য মুখোপাধ্যায় বলছেন, “১০০ জন শিশুকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ধাপে ধাপে ইএম বাইপাসের ধারে পঞ্চসায়রের একটি হাসপাতালে তাদের টিকা দেওয়া হবে।” অপূর্ববাবুর কথায়, “এই সপ্তাহের শেষেই ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেল্থেও ছোটদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু করব। স্কুলে স্কুলে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা হলেও ছোটদের হাসপাতালে এমন উদ্যোগ চালু করা জরুরি। তাতে ভ্যাকসিন নিয়ে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লেও তখনই তার পরিচর্যা করা যাবে।”

তবে সার্বিক ভাবে ১৫-১৮ বছর বয়সিদের মধ্যে প্রান্তিকতমদের টিকার আয়োজনের নিরিখে কিছু বিক্ষিপ্ত উদ্যোগ যে যথেষ্ট নয়, তা মেনে নিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারাও। এ কাজে বিশেষ পরিকল্পনা থাকা উচিত বলেই তাঁদের অভিমত। এ রাজ্যে সার্বিক ভাবে ভ্যাকসিন কর্মসূচির দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্তা অসীম দাস মালাকারের কথায়, “এটা ধরেই নিতে হবে যে, পথশিশুরা নিজে ভ্যাকসিন নিতে যাবে না।

তাদের স্কুলের পরিচয়পত্র বা আধার কার্ড, কিছুই হয়তো নেই। ফোনও ব্যবহার করতে পারে না। বিশেষ অভিযান ছাড়া এই ছোটদের টিকা কর্মসূচি ধাক্কা খাবে। তবে আগে ছোটদের না-হলেও শহরের পথবাসী বড়দের ভ্যাকসিনের বন্দোবস্ত হয়েছে রাজ্যে। আশা করি, এ বার প্রান্তিক শিশুদের ক্ষেত্রেও কাজটা করা যাবে।”

রাজ্যে সমাজকল্যাণ দফতর এবং বিভিন্ন পুর-প্রশাসনের সহায়তায় এ কাজটা করতে হবে বলে মনে করেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তবে খাস কলকাতাতেই পুরকর্তাদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ধন্দ রয়েছে। কলকাতার শীর্ষ স্তরের এক পুরকর্তা বলেন, “ছোটদের টিকার জন্য আপাতত আমরা স্কুলগুলির উপরেই নির্ভর করছি। হয়তো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যে পথশিশুদের টিকা দেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে এখনই পুরসভার তেমন ভূমিকা নেই।” বাস্তবিকই, হেস্টিংসের জাহানারা বা দক্ষিণেশ্বরের রূপসাকেই টিকা পেতে বাইপাসের হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। সমাজকল্যাণ দফতরের সচিব সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ অবশ্য বলছেন, “কয়েকটি হোমের আবাসিকদের টিকা দিতে আমরা উদ্যোগী হয়েছি। দরকারমতো পথশিশুদের জন্যও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

Vaccination Street Children
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy