খুব নরম ও সাদা তুলোর মতো ছোট ডিম্বাকৃতির এই পোকা চাষিরা চিনতে পারেন না বলে মুশকিল হয়। এরা বিভিন্ন বাগিচা ফসল থেকে ধান, পাট ও সব্জিতে আক্রমণ করে। তখন গাছের বৃদ্ধি কমে যায় ও আক্রান্ত স্থান অনেক সময় ফুলে গিয়ে বিকৃত আকার নেয়। খুব বেশি আক্রমণ হলে পাতার নীচে সাদা আস্তরণ তৈরি হয়। অতিরিক্ত মধু-রস নিঃসরণের ফলে এক ধরনের পিঁপড়ে আসে। দ্বিতীয় ধাপে এক ধরনের ছত্রাকের আক্রমণ হয়। ফলে গাছ তার প্রয়োজনীয় খাবার তৈরি করতে পারে না। নিম্ফ ও পূর্ণাঙ্গ পোকা রস চুষে খায়। যার ফলে পাতা ফিকে হলুদ হয়ে যায়, ফল ঝরে পড়ে। বেশি আক্রমণ হলে গাছের মুকুলও ঝরে পড়ে। অনেক সময় গাছ মরে যায়। ফলে আক্রমণ হলে বোঁটাতে সাদা আস্তরণ পড়ে, ফল ঝরে যায়। আক্রান্ত ফল শুকিয়ে যায়, ঠিক মতো পুষ্ট হতে পারে না।
প্রতিরোধ/প্রতিকার
• শুরুতেই হাতে তুলে নষ্ট করে দিলে আক্রমণ অনেক কমে যায়।
• গাছের অাশপাশে ঝোপঝাড় পরিষ্কার রাখতে হবে।
• অক্টোবর মাসে বাগানে ভাসিয়ে জলসেচ করলে ডিম নষ্ট হয়ে যায় ও আক্রমণ অনেকটা কমে যায়।
• অক্টোবরে বাগানে ভাল করে চাষ দিলে সূর্যালোকে ডিম নষ্ট হবে।
• লেডি বার্ড বিটল জাতীয় পোকা ছেড়ে দিলে এর আক্রমণ অনেক কমে যায়।
• দয়ে পোকা নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে প্রথমেই পিঁপড়ের আক্রমণ কমাতে হবে। কারণ পিঁপড়ে এদের সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া চাষের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি পরিষ্কার করে ব্যবহার করতে হবে।
• ৪০০ গজের এলকাথেন সিট ২৫ সেমি চওড়া করে গাছের গোড়ায় ভাল ভাবে পেঁচিয়ে চারিদিকে মাটি তুলে দিতে হবে।
• গাছের গোড়ায় ২৫০ গ্রাম ক্লোরোপাইরিফস মিশিয়ে দিলে এই পোকা আক্রমণ করতে পারে না।
• বিউভেরিয়া বেসসিয়ানা প্রজাতির ছত্রাকের স্পোর মাটিতে ছড়িয়ে দিলে আক্রমণ অনেক কমে।
• কেরোসিন তেল তুলোর মধ্যে দিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগালে আক্রমণ রোধ করা যায়।
• ক্লোরোপাইরিফস ২০ এসি ২.৫ মিলি প্রতি লিটার জল ও মনোক্রোটোফস ৩৬ ডব্লুএসসি ১.৫ মিলি প্রতি লিটার জলে ও ইমিডাক্লোরোপিড ১ মিলি প্রতি লিটার জলে গুলে ১৫ দিন অন্তর করে আক্রান্ত স্থানে ভাল ভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।
• জমি তৈরির সময় ম্যালাথিয়ন পাউডার ২৫ কেজি প্রতি হেক্টর মাটিতে ছড়িয়ে দিলে মিলিবাগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
লেখক দক্ষিণ দিনাজপুর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের শস্য সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy