চন্দননগরের আলোকোজ্জ্বল বৃত্ত থেকে অনেকটা দূরে বলাগড়ের সোমরাবাজার। এখানে ১১৭২ বঙ্গাব্দে (১৭৬৫ সাল) রায় পরিবারের প্রাচীন মন্দিরে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সিংহবাহিনী জগদ্ধাত্রীর মূর্তি। এলাকার এটিই একমাত্র মন্দির যেখানে জগদ্ধাত্রীর নিত্যপুজো হয়। ২৫৮ বছর ধরে সেই আরাধনায় দাঁড়ি পড়েনি। এ বারে পুজোর প্রস্ততি যথারীতি শুরু হয়ে গিয়েছে।
পরিবারটি এলাকায় ‘দেওয়ানজি পরিবার’ নামে পরিচিত। পরিবারের সদস্য পার্থসারথি রায় জানান, তাঁদের পূর্বপুরুষ রামশঙ্কর রায় শেষ মোঘল সম্রাট শাহ আলমের দেওয়ান ছিলেন। সেই সূত্রেই পরিবারের ওই নাম। রামশঙ্করই দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে মন্দির প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন। ১৯৬১ সাল নাগাদ মন্দিরের দরজা ভেঙে অষ্টধাতুর জগদ্ধাত্রীর মূর্তি চুরি হয়ে যায়। তারপর পারিবারিক ঐতিহ্য বজায় রেখে সকলে মিলে নতুন একটি ধাতুর মূর্তি ফের মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। জগদ্ধাত্রী মন্দিরে পঞ্চানন ও শিবের মূর্তি রয়েছে। এখানে শিবের কোলে লক্ষ্মী ও গণেশ এবং মাথার কাছে সরস্বতী ও কার্তিকের মূর্তি রয়েছে।
প্রাচীন এই পুজো ও মূর্তি প্রসঙ্গে বলাগড় হেরিটেজ কমিটির চেয়ারপার্সন পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নবরত্ন বিশিষ্ট মন্দিরে জগদ্ধাত্রীর মূর্তিটি স্বতন্ত্র। ওই মূর্তির এক পাশে বাবা পঞ্চানন, অন্য পাশে বাবা বুড়োশিব। শিবের কোলে লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিক রয়েছে। স্বামী শিশুদের যত্ন করছেন আর স্ত্রী নিচ্ছেন পুজো। জগতের কল্যাণ করছেন জগদ্ধাত্রী। আর যোগ্য স্বামী হিসেবে শিব সহযোগিতা করছেন। কী সুন্দর ভাবনা!’’
বাড়ির সদস্য ললিকা গুপ্ত জানান, সপ্তমী থেকে তিন দিনের পুজো নিয়ম মেনে নবমীর দিনেই সারা হয়। মন্দিরের বাইরে যজ্ঞ করা হয়। বর্তমানে পরিবারের সদস্যেরা কর্মসূত্রে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকলেও পুজোয় তাঁরা বাড়ি ফেরে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)