E-Paper

গাড়ি থেকে সেতুতে নেমে গঙ্গায় ‘ঝাঁপ’

এ দিন দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ ভাড়া করা গাড়িতে চেপে বালির দিক থেকে দক্ষিণেশ্বরের দিকে যাচ্ছিলেন তাপস।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৫ ০৮:৪৭
তাপসরঞ্জন চক্রবর্তী।

তাপসরঞ্জন চক্রবর্তী।

‘আমি চলে যাচ্ছি’— আচমকাই স্বামীর ফোন থেকে এমন মেসেজ পেয়ে চমকে উঠেছিলেন স্ত্রী। কিছু বুঝে উঠতে না পেরে তড়িঘড়ি স্বামীকে ফোন করলেও তিনি ধরছিলেন না। কিছু ক্ষণ পরেই পরিচিত গাড়িচালক ফোন করে জানান, সেতু থেকে মোবাইল ছুড়ে ফেলে দেওয়ার পরেই রেলিং টপকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়েছেন বছর পঞ্চান্নের ওই প্রৌঢ়!

সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বালি সেতুতে। পুলিশ জানায়, গঙ্গায় ঝাঁপ দেওয়া ওই প্রৌঢ়ের নাম তাপসরঞ্জন চক্রবর্তী। তিনি বাগুইআটির নারায়ণতলার বাসিন্দা। সোমবার রাত পর্যন্ত রিভার ট্র্যাফিক পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ডুবুরিরা গঙ্গায় তল্লাশি চালালেও প্রৌঢ়ের কোনও খোঁজ মেলেনি। সূত্রের খবর, এ দিন দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ ভাড়া করা গাড়িতে চেপে বালির দিক থেকে দক্ষিণেশ্বরের দিকে যাচ্ছিলেন তাপস। আচমকাই তিনি চালককে গাড়ি থামাতে বলেন। গাড়ি থামলে তাপস নেমে যান। চালক ভাবেন, ফুটপাত থেকে গঙ্গার ছবি তোলার জন্যই হয়তো নেমেছেন প্রৌঢ়। কিন্তু পরক্ষণেই দেখেন, কিছুটা দূরে গিয়ে তিনি সেতুর রেলিংয়ের
ধারে দাঁড়িয়ে মোবাইল দু’টি গঙ্গায় ফেলে দিলেন। মুহূর্তের মধ্যে রেলিংয়ের উপরে উঠে নীচে ঝাঁপ দিলেন। ওই দৃশ্য দেখে হকচকিয়ে যান চালক। গাড়ি থেকে নেমে রেলিংয়ের ধারে এলেও নীচে দেখতে পাননি প্রৌঢ়কে। এর পরে ওই চালকই ফোনে তাপসের স্ত্রী নীপা চক্রবর্তীকে বিষয়টি জানান।

খবর পেয়ে সেতুতে চলে আসে বালি থানার পুলিশ। কিছু ক্ষণের মধ্যে এসে পৌঁছন নীপাও। তিনি পুলিশকে জানান, সাড়ে তিনটের কিছু আগেই ‘আমি চলে যাচ্ছি’ লেখা মেসেজটি পাঠান তাপস। যা দেখে চিন্তায় পড়ে যান পরিজনেরা। স্ত্রী-সহ অন্যেরা বার বার ফোন করলেও যোগাযোগ করা যায়নি। প্রৌঢ়ের পরিবার সূত্রে পুলিশ জেনেছে, গত দু’মাস ধরে তাপসের ব্যবসায় মন্দা চলছে। তা নিয়ে মানসিক ভাবে খানিকটা বিপর্যস্ত তিনি। তবে, পরিস্থিতি যে এ দিকে গড়াবে, তা কেউ আন্দাজ করতে পারেননি। এ দিন সকালেও প্রতিবেশীদের সঙ্গে স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলেন তিনি। উত্তরপাড়ার একটি অফিসে যাবেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন।

পুলিশ জেনেছে, মাঝেমধ্যেই একটি গাড়ি ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যেতেন তাপস। এ দিনও সেই গাড়িতে ওই চালকের সঙ্গেই বেরোন। বাগুইআটি থেকে প্রথমে উত্তরপাড়ার একটি অফিসে এসেছিলেন। কিন্তু সেটি বন্ধ থাকায় ফিরতি পথ ধরেন। সেই সময়ে বালি সেতুর দক্ষিণেশ্বরমুখী রাস্তায় ওঠার পরেই তাপস গাড়ি থামাতে বলেন। হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনি যে দাবি করেছেন, তা নিয়ে আপত্তি করেনি প্রৌঢ়ের পরিবার। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করেনি তারা। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

bali

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy