সচেতনতা প্রচার সিঙ্গুর ব্লকের বিঘাটী পঞ্চায়েতের গৌরাঙ্গপুর এলাকার মাঠে। নিজস্ব চিত্র।
ধান কাটার মরসুম চলছে। হুগলি জেলায় চক্কর কাটলে ফি দিনই চোখে পড়বে ধানের অবশিষ্টাংশ বা নাড়া পোড়ানোর দৃশ্য। এ নিয়ে চাষিদের মধ্যে সচেতনতার অভাব বিস্তর। তবে, বৃহস্পতিবার সিঙ্গুর ব্লকের বিঘাটী পঞ্চায়েতের গৌরাঙ্গপুরের খেতে
নাড়া পোড়ানোর তোড়জোড় স্থানীয়দের চেষ্টায় বন্ধ হয়েছে বলে কৃষি দফতরের দাবি।
ওই দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালে এখানে খেতে প্রচুর নাড়া জড়ো করা হয়েছে দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের মারফত খবর যায় ব্লকের কৃষি দফতর এবং পঞ্চায়েতে। এর পরেই ব্লকের কৃষি আধিকারিকেরা এবং পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জগাই পাল সেখানে যান। তাঁর চাষিদের বোঝান, নাড়া পোড়ালে জমির উপরিভাগের মাটি শক্ত হয়ে যায়। কেঁচো, বন্ধু পোকা, উপকারী জীবাণু মরে যায়। ফলে, উর্বরতা নষ্ট হয়। সেই সঙ্গে ধোঁয়ায় দূষিত হয় পরিবেশ। মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে তা ক্ষতিকর। পশুপাখির পক্ষেও তা দুঃসহ।
চাষিরা জানান, বিষয়টি তাঁদের জানা ছিল না। এ নিয়ে প্রশাসনের তরফে সচেতনতা শিবিরও হয়নি। নাড়া জড়ো করা হয়েছিল, এমন একটি জমির মালিক দাবি করেন, স্থানীয় এক পশুপালক নিয়ে যাবেন বলে ওই খড় জড়ো করে রেখেছেন। একই সঙ্গে তিনি জানান, কয়েক জন কৃষক জমির সীমানার আলের ঘাস পরিষ্কার করে পোড়াচ্ছেন। কৃষি আধিকারিক এবং উপপ্রধান ওই এলাকা ছাড়ার পরেই অবশ্য কিছুটা দূরে নাড়া পুড়তে দেখা গেল। তাঁরা অবশ্য সেখানে যাননি।
পরে উপপ্রধান বলেন, ‘‘এলাকার কৃষকেরা এখনও নাড়া পোড়ানোর বিপদ সম্পর্কে সচেতন নন। এ নিয়ে তাঁদের সচেতন করতে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
নাড়া পোড়ানো বন্ধের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই সরব পরিবেশকর্মীরা। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় এখনও তা চলতে থাকায় তাঁরা উদ্বিগ্ন। চন্দননগরের পরিবেশ অ্যাকাডেমি এ ব্যাপারে সম্প্রতি রাজ্যের পরিবেশ, কৃষি, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে চিঠি দিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, নাড়া পোড়ানো সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধে জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু ওই নির্দেশ এ রাজ্যে আদপেই কার্যকর হয়নি।
ওই সংগঠনের সভাপতি বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, ২০১৮ সাল থেকে তাঁরা এ ব্যাপারে রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দফতরে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়ে এসেছেন। নাড়া পোড়ানোর জেরে সামগ্রিক সমস্যার কথা উল্লেখ করে ২০১৯ সালে রাজ্যের পরিবেশ দফতর তা বন্ধে এই সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা জারি করে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
কৃষি দফতরের অবশ্য দাবি, পরিবেশ এবং চাষি তথা সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে নাড়া পোড়ানো বন্ধে নিয়মিত প্রচার চালানো হয়। সচেতন করা হয় কৃষককে। কিন্তু সচেতনতা যে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছয়নি, সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা মানছেন। তাঁদের বক্তব্য, সচেতনতা বাড়ানোর কাজ চলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy