আমপানে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল হুগলিতে। সেই বিপর্যয়ের পরে নানা ক্ষেত্রেই পুনর্গঠন হয়েছে। কিন্তু, পাঁচ বছর পরেও ঘর-বাড়ি ভাঙার ক্ষতিপূরণ বা ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের এখনও নিষ্পত্তি হয়নি বলে নানা মহলের দাবি।
হুগলিতে ১৪১৮ জন ‘ভুয়ো উপভোক্তা’ রয়ে গিয়েছেন জানিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবরে ক্ষতিপূরণের টাকা উদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। কিন্তু ওই পর্যন্তই! সরকারি নির্দেশ সত্ত্বেও অনেকেই টাকা ফেরতের রাস্তায় হাঁটেননি বলে মানছেন প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ। তাঁরা জানান, ব্লক এবং জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তরফে কয়েক দফা সমন পাঠিয়েও তা উদ্ধার করা যায়নি।
আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মেরামতের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের পাঁচ হাজার টাকা প্রশাসনিক ভুলের কারণে অনেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দু’বার ঢুকেছিল। প্রশাসন সূত্রে খবর, ব্লকপিছু এই সংখ্যা প্রায় ৬০-৮০টি করে। সেই টাকাও উদ্ধার হয়নি।
কেন?
সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের ব্যাখ্যা, উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে গেলে তা আদায় করা মুশকিল। তার উপরে তাঁদের শাস্তির ভয় দেখানো যাবে না বলে রাজ্য স্তরের নির্দেশ ছিল। তবে জেলা প্রশসানের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘প্রশাসনের চেষ্টায় ব্লকপিছু গড়ে ৫-৬ লক্ষ টাকা ফেরত হয়েছে। অনেকে নিজেরাও ট্রেজারিতে টাকা ফেরত দিয়েছেন বা দিচ্ছেন। সব টাকাই উদ্ধার হবে।’’
বিরোধী দলগুলি অবশ্য সুর চড়াচ্ছে। তাদের অভিযোগ, আমপানে দুর্নীতি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন তৃণমূলের নেতারা। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।
বন দফতর সূত্রে খবর, আমপানে প্রায় ৬৫ হাজার গাছ পড়ে গিয়েছিল। অধিকাংশই সরকারি জমিতে। দরপত্র ডেকে ওই সব গাছ বেচে টাকা সরকারি কোষাগারে জমার নির্দেশ দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। বিরোধীদের অভিযোগ, তা হয়নি। ওই সব গাছ বেচে টাকা লুটে নেন শাসক দলের নেতারা। নতুন গাছ লাগাতে সরকারি ভাবে বনসৃজন প্রকল্পও হয়নি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)