Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Anganwadi center

Anganwadi: কমছে শিশুদের ডিম-আলুর বরাদ্দ, অঙ্গনওয়াড়িতে প্রশ্ন

হুগলিতে মোট ৬৭০৮টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র আছে। উপভোক্তা শিশুর সংখ্যা প্রায় চার লক্ষ। গত শনিবার থেকেই নয়া কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

ফাইল চিত্র।

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২২ ০৭:১৭
Share: Save:

মাস চারেক ধরে সপ্তাহে ছ’দিনই গোটা ডিম পাচ্ছিল অঙ্গনওয়াড়ির শিশুরা। এ বার তিন দিন করে পাবে অর্ধেক ডিম। পাতে আলুও থাকবে না তিন দিন। সরকারি নয়া নির্দেশিকায় সুসংহত শিশু বিকাশ সেবা প্রকল্পটির পু্ষ্টিমান বজায় রাখা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হুগলির বহু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীরা। অশান্তিরও আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

হুগলিতে মোট ৬৭০৮টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র আছে। উপভোক্তা শিশুর সংখ্যা প্রায় চার লক্ষ। গত শনিবার থেকেই নয়া কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তা হয়নি। আজ, সোমবার থেকে সব কেন্দ্রে তা চালু করা হবে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সংগঠন নয়া নির্দেশিকার প্রতিবাদ জানিয়েছে। ‘ওয়েস্টবেঙ্গল অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার্স অ্যান্ড হেল্পার্স ইউনিয়ন’ নামে ওই সংগঠনের জেলা সম্পাদিকা রীতা মাইতি বলেন, ‘‘অন্তঃসত্ত্বা এবং সদ্য মা হয়েছেন, এমন মহিলাদের জন্য অঙ্গনওয়াড়িতে বরাদ্দ ঠিক রাখা হলেও শিশুদের পুষ্টি সরবরাহে এই অমনোযোগিতার বিরোধিতা করছি। বিভিন্ন এলাকার উপভোক্তা পরিবার আমাদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করছে।’’

নয়া নির্দেশিকায় শিশুদের পুষ্টির সমস্যা হতে পারে, এ কথা মানছে না জেলার নারী-শিশুকল্যাণ ও সমাজকল্যাণ দফতর। তিন দিন অর্ধেক ডিমে পুষ্টিতে কোনও ব্যাঘাত ঘটবে না দাবি করে দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “করোনা পর্বের আগে সপ্তাহে তিন দিন কেবল গোটা ডিমের ব্যবস্থাই ছিল। এ বার নতুন বরাদ্দে তিন দিন গোটা ডিম ছাড়াও বাকি তিন দিন অর্ধেক বরাদ্দ হয়েছে।” কেন বরাদ্দ ছাঁটা হল তা নির্দেশিকায় উল্লেখ নেই বলে তিনি জানিয়েছেন। তাঁর ধারণা, ডিম এবং আলুর বাজারদর বৃদ্ধিতেই এই ব্যবস্থা।

বিভিন্ন ব্লকের শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিকরাও (সিডিপিও) নয়া নির্দেশিকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অনেকেই জানিয়েছেন, ৬ মাস থেকে ৬ বছর পর্যন্ত শিশুদের ডিমের বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়ায় অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনার প্রক্রিয়া ধাক্কা খাবে। এমনিতেই সকালে ছাতু, পৌষ্টিক পোষ্টিক লাড্ডু এবং ২০১৮ সালে জেলায় চালু হওয়া সপ্তাহে তিন দিন কলা দেওয়ার ব্যবস্থা বন্ধ দীর্ঘদিন। গত মার্চ মাসে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি খোলার পর থেকে তার পরিপূরক হিসাবে সপ্তাহের ছ’দিনই গোটা ডিম দেওয়া শুরু হলে কিছুটা সুবিধা হয়েছিল।

অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের আশঙ্কা, দুই শ্রেণির উপভোক্তার মধ্যে একটি শ্রেণিকে গোটা এবং অন্য শ্রেণিকে অর্ধেক ডিম দেওয়ার বিষয়টি গ্রামবাসী মেনে নেবেন না। আবার শিশুদের ভাতের সঙ্গে তিন দিন ডিমের ঝোলের কথা বলা হলেও তাতে আলু বরা্দ্দ না থাকায় শিশুদের খেতে সমস্য়া হবে। রান্নার ক্ষেত্রেও অসুবিধা হবে বলে মনে করছেন অনেকে।

শিশুর ডিমের বরাদ্দ কমার খবরে আরামবাগের রঘুনাথপুর কেন্দ্রের উপভোক্তা একটি শিশুর মা রানু কাঁড়ি এবং গোঘাটের কামারপুকুর আদিবাসীপাড়া কেন্দ্রের কৃষ্ণ কোটালের মা টুম্পার প্রশ্ন, ‘‘এমনিতেই সকালের কলা, ছাতু বন্ধ। এখন ডিমও কমে গেলে ছেলেমেয়েগুলোর চেহারা ফিরবে কী করে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Anganwadi center Anganwadi Meal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE