E-Paper

ইউটিউবে তালিম নিয়ে জাতীয় স্তরের দাবায় কিশোর

১৪-১৬ সেপ্টেম্বর ডায়মন্ড হারবারে আয়োজিত ৬৮ তম রাজ্য বিদ্যালয় দাবা প্রতিযোগিতায় অনূর্ধ্ব ১৯ বিভাগে ৬টির মধ্যে ৫টি সেট জিতে ওই সুযোগ পেয়েছে অনীক।

সুদীপ দাস

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ১০:১২
দাবায় মগ্ন অনীক।

দাবায় মগ্ন অনীক। নিজস্ব চিত্র।

পাড়ার এক জামাইবাবুর কাছে বছর দেড়েক আগে সে দাবা খেলায় হেরেছিল। সেই লজ্জাই দাবা শেখার প্রেরণা জোগায়। জেতার জেদ তখন থেকেই মাথায় চাপে চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগর পশ্চিমপাড়ার কিশোর অনীক বৈরাগীর। বাবা দিনমজুর। সংসারে অনটন। কোথায় শিখবে দাবা খেলা! অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে ইউটিউব দেখে খেলার কৌশল শিখে নিয়েছে বছর সতেরোর ওই কিশোর। জাতীয় স্তরের স্কুল-দাবায় যোগ দেওয়ার সুযোগও ছিনিয়ে নিয়েছে!

১৪-১৬ সেপ্টেম্বর ডায়মন্ড হারবারে আয়োজিত ৬৮ তম রাজ্য বিদ্যালয় দাবা প্রতিযোগিতায় অনূর্ধ্ব ১৯ বিভাগে ৬টির মধ্যে ৫টি সেট জিতে ওই সুযোগ পেয়েছে অনীক। জাতীয় স্কুল ক্রীড়ার দাবা প্রতিযোগিতায় অনূর্ধ্ব-১৯ বিভাগে এ রাজ্য থেকে সুযোগ পাওয়া মাত্র চার জনের মধ্যে সে-ও রয়েছে।

সামনে উচ্চ মাধ্যমিক। জাতীয় স্তরের খেলার সূচি এখনও ঘোষণা হয়নি। টেস্টের মধ্যে যেন খেলা না পড়ে, এখন শুধু এটাই চাইছে সুকান্তনগর অনুকূলচন্দ্র শিক্ষাশ্রমের বরাবর প্রথম হওয়া ছাত্রটি। পড়াশোনার ফাঁকে বন্ধু সায়ন সরকারের সঙ্গে দাবা খেলতে বসে নতুন নতুন চাল আবিষ্কারের চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে সে। অনীকের কণ্ঠে প্রত্যয়, ‘‘ভবিষ্যতে কোন দিকে যাব ভাবিনি। আপাতত জাতীয় স্তরে ভাল করার চেষ্টা চালাচ্ছি। সঙ্গে পড়াশোনাও চলবে। বাবা-মা অনেক কষ্ট করে। সুদিন আমি আনবই।’’

অনীকের বাবা রতন রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করেন। সব সময়ে কাজ থাকে না। তাঁর তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে অনীক ছোট। ছেলের দাবায় পারদর্শিতা নিয়ে তিনি খুব একটা ওয়াকিবহাল নন। তবে চান, ছেলে বড় হোক। তাঁর কথায়, ‘‘ও যা চাইছে করুক। আমি আর কী করতে পারি! কিছুতেই বাধা দেব না।’’

অনীককে নিয়ে গর্বের অন্ত নেই তার স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। প্রধান শিক্ষক হাসমত আলি জানান, শহরঘেঁষা এই স্কুলটি কোদালিয়া ১ পঞ্চায়েতে। পড়ুয়াদের বড় অংশই নিম্নবিত্ত পরিবারের। তিনি বলেন, ‘‘অনীক যে দাবায় স্কুলের নাম উজ্বল করবে, তা ভাবিনি। ওর জন্য স্কুলে দাবার ক্লাস চালু করতে পারলে ভাল হত।’’

স্কুলে নিয়মিত খোখো-সহ বিভিন্ন ধরনের খেলার ক্লাস হয়। রয়েছে
জিম। খেলার শিক্ষক বিক্রম ঘোষ জানান, তিনি ক্লাসের ফাঁকে অনীকের সঙ্গে দাবা নিয়ে বসেন। বেশিরভাগ সময়ে ছাত্রের কাছে হেরে যান! ইউটিউব ঘেঁটে মাত্র দেড় বছরে কারও এত উন্নতি, অকল্পনীয় বলেই মনে করেন তিনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Chinsurah

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy