E-Paper

অভাবকে পিছনে ফেলে রাজ্য অ্যাথলেটিক্সে রুপো অন্বেষার

ট্রায়াথলনে ৬০ মিটার দৌড়, লং জাম্প এবং পিছনে বল ছোড়া ইভেন্টের পয়েন্ট একত্র করে তিন জন স্থানাধিকারী ঠিক করা হয়। রুপো পায় অন্বেষা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৪ ১০:১০
পদক হাতে অন্বেষা।

পদক হাতে অন্বেষা। ছবি: বিশ্বজিৎ মণ্ডল 

অনুশীলন চলে গ্রামের মাঠে। চলতি বছরে হুগলি জেলা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের ডাক আসে রাজ্য অ্যাথলেটিক্সের বাছাই পর্বে। সেখানে প্রথম হয়ে ওই প্রতিযোগিতায়
অনূর্ধ্ব ১৪ বিভাগে সুযোগ মেলে। সুযোগ হাতছাড়া করেনি বলাগড়ের অন্বেষা ঘোষ। রবিবার ওই প্রতিযোগিতায় রুপোর পদক উঠেছে তার হাতে।

জিরাটের পরানপুরে বাড়ি অন্বেষাদের। বাবা বিকাশ ঘোষ ফুলচাষি। বাড়িতে ছোট মুদিখানাও চালান। মা অনুশ্রী গৃহবধূ। দুই বোনের মধ্যে অন্বেষা ছোট। অভাবের সংসার। অন্বেষাকে ভাল জায়গায় তালিম দেওয়ার সামর্থ্য পরিবারের ছিল না। ২০২২ সালে জিরাটের বনশ্রী সঙ্ঘের মাঠে পবন পণ্ডিতের কাছে প্রশিক্ষণ শুরু মেয়েটির। এখনও তাঁর কাছেই প্রশিক্ষণ নেয় সে। পবন নিখরচাতেই শেখান।

শনি ও রবিবার সল্টলেকের সাই স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ৭২তম রাজ্য অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ হয়। সেখানে অনূর্ধ্ব ১৪ বিভাগের ‘বি’ গ্রুপে ট্রায়াথলনে দ্বিতীয় হয়েছে অন্বেষা। তার কাছে হেরে ব্রোঞ্জ পেয়েছে বাঁকুড়ার সৃজিতা বাউরি। প্রথম কলকাতার ঐশানিয়া প্রিয়দর্শিনী।

এই গ্রুপের ট্রায়াথলনে ৬০ মিটার দৌড়, লং জাম্প এবং পিছনে বল ছোড়া ইভেন্টের পয়েন্ট একত্র করে তিন জন স্থানাধিকারী ঠিক করা হয়। রুপো পায় অন্বেষা। জিরাটের আশুতোষ স্মৃতিমন্দির বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এই ছাত্রীর সাফল্যে খুশি পরিবার-পরিজন, পাড়া-পড়শিরা। এক গাল হেসে ৮৭ বছরের ঠাকুমা মেনকা ঘোষ বলেন, ‘‘খেলতে যাওয়ার দিন গালে চুমু খেয়ে বলেছিলাম, জয়ী হয়ে ফিরবি। সেটাই হল।’’

বিকাশের কথায়, ‘‘ফুলচাষ ও মুদিখানা মিলিয়ে দৈনিক আয় মেরেকেটে দু’আড়াইশো টাকা। তাতে সংসার চালিয়ে দুই মেয়ের পড়াশোনার খরচ সামলাতে হিমশিম খাই। তার উপরে ছোট মেয়ের খেলা! ওকে ভাল জুতো পর্যন্ত কিনে দিতে পারি না।’’ অনুশ্রীর কথায়, ‘‘পবনস্যর মাঝে মধ্যে মেয়েকে খেলার সরঞ্জাম দিয়ে
সাহায্য করেন। এই জয়ে তাঁরও
কৃতিত্ব।’’ অন্বেষাকে প্রয়োজনীয় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতি রঞ্জন ধারা।

ছাত্রীর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত পবন বলেন, ‘‘ওকে আরও এগিয়ে যেতে হবে। তার জন্য জান লগিয়ে দেব।’’ অন্বেষার চোখে স্বপ্ন, আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Balagarh Silver Medal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy