খানাকুলের ঘোষপুর পঞ্চায়েত ভবনে জ্বলছে সৌর বিদ্যুতের আলো। ছাদে বসানো হয়েছে প্যানেল ( ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েতগুলিতে তিন মাসের বিদ্যুৎ বিল আসছিল গড়ে ৩৫-৪০ হাজার টাকা। সেই বিল অধিকাংশ সময়ে বকেয়া থেকে যাচ্ছিল। এ বার খরচ কমাতে এবং একই সঙ্গে পরিবেশবান্ধব হতে হুগলি জেলার পঞ্চায়েত ভবনগুলিতে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারে বিশেষ জোর দেওয়া হল জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে। দফতরের এক কর্তা বলেন, “এক দিকে দূষণ নিয়ন্ত্রণ, অন্য দিকে পঞ্চায়েতগুলিতে বিপুল বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। সম্প্রতি কেন্দ্রের পঞ্চদশ অর্থ কমিশন তহবিলে সেই বকেয়া বিল মেটানোর ব্যবস্থা হলেও স্থায়ী সমাধানে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারে পঞ্চায়েতগুলিকে বিশেষ সচেষ্ট হতে বলা হয়েছে।”
খানাকুল-১ ব্লকের ঘোষপুর পঞ্চায়েত ভবনে সোমবার থেকে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার শুরু হয়েছে। পঞ্চদশ অর্থ কমিশন তহবিলে (১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা) আপাতত ভবনের ছাদে বসেছে ৫টি সৌর প্যানেল। তা থেকে ২ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে পঞ্চায়েতের মোট ৮টি পাখা, ১৬টি আলো, ৪টি কম্পিউটাই ও জল পরিস্রুতকরণ মেশিন চলছে। পঞ্চায়েত প্রধান হায়দার আলি বলেন, “ত্রৈমাসিক বিদ্যুৎ বিল হয়ে যাচ্ছিল প্রায় ৪০ হাজার টাকা। সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারে তার অর্ধেক বাঁচানো সম্ভব হবে বলেই আশা।” তিনি জানান, পঞ্চায়েত এলাকার সমস্ত রাস্তার আলো, জলপ্রকল্প—সব ক্ষেত্রেই সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিকল্পনা হয়েছে। জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে বিশেষ উৎসাহিত করা হচ্ছে। খানাকুল-১ বিডিও শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, “ঘোষপুর পঞ্চায়েতের মতোই সব পঞ্চায়েত ভবনে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’’
সংশ্লিষ্ট ব্লক-সহ জেলার বিভিন্ন ব্লক এবং পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, অতীতে বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু পঞ্চায়েত এলাকায় পাম্প বা রাস্তার আলোর ক্ষেত্রে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হয়েছে। মাস কয়েক আগেই গোঘাট ১ ব্লকের বালি পঞ্চায়েতের ছোটডোঙ্গলে পঞ্চদশ অর্থ কমিশন তহবিলে সৌরবিদ্যুৎ চালিত গ্রামীণ জলসরবরাহ প্রকল্প রূপায়িত হয়। গোঘাট ২ ব্লকের কামারপুকুর পঞ্চায়েতের দড়িয়াপুর ইকোপার্ক সৌরবিদ্যুতেই আলোকিত করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যুৎ দফতরের হিসাব অনুযায়ী হুগলি জেলার ২০৭টি পঞ্চায়েত এবং ১৮টি পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ মিলিয়ে মোট ২৮ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা বিদ্যুৎ বিল বাকি। ওই টাকার সিংহভাগই পঞ্চায়েতগুলির কাছে বকেয়া। দফায় দফায় পঞ্চদশ অর্থ কমিশন তহবিল থেকে টাকা মেটানো হচ্ছে। পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির নিজস্ব তহবিল থেকেই বিদ্যুৎ বিল মেটানোর ব্যবস্থা থাকলেও ওই তহবিল ততটা বেশি না হওয়ায় মেটানো যাচ্ছিল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy