E-Paper

গণনাকেন্দ্রের বাইরে পড়ে ২০০ ব্যালট পেপার, শোরগোল

প্রশাসন সূত্রের খবর, উদ্ধার হওয়া ব্যালট পেপারের বেশির ভাগই বৈঁচি-বাটিকার ৩৯ নম্বর বুথের পঞ্চায়েত সমিতি আসনের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৩ ০৯:৩৯
ballot paper recovered from bush at Pandua

বৈঁচিগ্রামে গণনাকেন্দ্রের পিছনের ঝোপ থেকে ব্যালট পেপার কুড়োচ্ছেন পান্ডুয়ার যুগ্ম বিডিও। ছবি: সুশান্ত সরকার Sourced by the ABP

ফের ব্যালট পেপার রহস্য!

গত ১১ জুলাই ভোট গণনা হয়েছে। তার পরে একাধিক জেলায় গণনাকেন্দ্রের বাইরে ব্যালট পেপার মিলেছে। সেই তালিকায় যুক্ত হল হুগলির পান্ডুয়াও। এই ব্লকের গণনা হয় বৈঁচিগ্রামে একটি বেসরকারি কলেজে। তার পাঁচ দিন পরে, সোমবার প্রায় ২০০টি ব্যালট পেপার মিলল ওই কলেজের পিছনের ঝোপে। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলের পাশাপাশি এলাকায় হইচই পড়েছে।

প্রশাসন সূত্রের খবর, উদ্ধার হওয়া ব্যালট পেপারের বেশির ভাগই বৈঁচি-বাটিকার ৩৯ নম্বর বুথের পঞ্চায়েত সমিতি আসনের। তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম— তিন দলেরই স্ট্যাম্প মারা ব্যালট পেপার মিলেছে। গণনায় কারচুপি করে তৃণমূল ভোটে জিতেছে বলে বিরোধীরা যে অভিযোগ করে আসছিলেন, এর ফলে সেই অভিযোগ জোরালো হয়েছে। অন্য দিকে, শাসকদলের নেতৃত্ব ঘটনার দায় ঝেড়ে ফেলে ব্লক প্রশাসনের ঘাড়ে চাপিয়েছে।

পান্ডুয়ার যুগ্ম বিডিও নব্যেন্দু সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘ব্যালট পেপারগুলি সংগ্রহ করেছি। পরীক্ষা করে দেখা হবে আসল না নকল।’’

সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ ঝোপে ওই ব্যালট পেপার পড়ে থাকতে দেখেন সাফাইকর্মীরা। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী আসে। প্রায় তিন ঘণ্টা পরে যুগ্ম বিডিও এসে সেগুলি সংগ্রহ করেন। সিপিএম ও বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে পুলিশ তাঁর গাড়ি বের করে।

বিজেপির কৃষক নেতা দেবপ্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সর্বত্র সন্ত্রাস, ভোট লুট করে তৃণমূল জিতেছে। প্রশাসন সঠিক তদন্ত করুক। নির্বাচন কমিশনকেও জানিয়েছি।’’ দলের জেলা সভাপতি তুষার মজুমদারের দাবি, ‘‘ওই ব্যালট পেপারের বেশির ভাগে বিজেপির প্রতীকে স্ট্যাম্প রয়েছে। এই ভাবেই প্রশাসনের সঙ্গে চক্রান্ত করে তৃণমূল আমাদের হারিয়েছে।’’ পান্ডুয়ার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘পুরোটাই তৃণমূলের কারসাজি। পূর্ণ তদন্ত চাই।’’

পান্ডুয়া থেকে জয়ী জেলা পরিষদের তৃণমূল প্রার্থী মানস মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘গণনাকেন্দ্রে সিসিক্যামেরা ছিল। কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল। এত ব্যালট পেপার কী ভাবে ওখানে গেল, আশ্চর্যের! রাজ্য সরকারের বদনাম করতে বিজেপি, সিপিএম মিলে এই পরিকল্পনা করেছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’ আর, তৃণমূলের পান্ডুয়া ব্লক সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘নির্বাচনে ব্লকের রিটার্নিং অফিসার ছিলেন বিডিও। গণনাকেন্দ্রের দায়িত্ব তাঁরই ছিল। ব্যালট পেপার বাইরে কী করে গেল, তিনিই জবাব দেবেন।’’

বিডিও স্বাতী চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপের উত্তরও দেননি।

প্রসঙ্গত, ৮ জুলাই, ভোটের দিন পান্ডুয়া পঞ্চায়েতের সাতঘড়িয়ায় পঞ্চায়েতের প্রার্থীদের নাম ভুল থাকায় ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময় বহিরাগত কিছু লোক বুথে ঢুকে ব্যালট পেপার ছিনতাই করে বলে থানায় অভিযোগ করেছিলেন বিডিও। পুলিশ তদন্তে নেমে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল। তারা হাজতে রয়েছে। ওই বুথে পুনর্নির্বাচন হয়।

এ বার ব্যালট পেপার উদ্ধারের পিছনে রহস্যভেদ হয় কি না, সেই প্রশ্নই উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal Panchayat Election 2023 Ballot Paper Pandua

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy