E-Paper

পরিত্যক্ত পাতকুয়োয় পড়ে মৃত্যু শিশুর

পরিত্যক্ত পাতকুয়োর জল নড়তে দেখে সন্দেহ হয় মায়ের। সেখান থেকেই প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে উদ্ধার হল ওই শিশুর নিথর দেহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:১৪
উদ্ধারকাজে ব্যস্ত দমকল ও পুলিশ। বুধবার।

উদ্ধারকাজে ব্যস্ত দমকল ও পুলিশ। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।

বাড়ির পাশেই খেলছিল তিন বছরের শিশুটি। ঘর থেকে মাঝেমধ্যে ছেলের গলার আওয়াজও পাচ্ছিলেন মা। কিন্তু কিছু ক্ষণ পর থেকে আর কোনও সাড়াশব্দ না আসায় তাঁর সন্দেহ হয়। বাইরে গিয়ে ছেলেকে কোথাও দেখতে না পেয়ে অদূরে থাকা পাতকুয়োর সামনে গিয়ে মহিলা দেখেন, জল নড়ছে। পরিত্যক্ত পাতকুয়োর জল নড়তে দেখে সন্দেহ হয় মায়ের। সেখান থেকেই প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে উদ্ধার হল ওই শিশুর নিথর দেহ।

বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে বালির নিশ্চিন্দা থানার পূর্ব আনন্দনগর এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই শিশুর নাম মোহিত সিংহ। স্থানীয় সূত্রের খবর, এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে ভাড়া থাকেন কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী ধনরাজ সিংহ। তাঁরই ছোট ছেলে মোহিত। এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ সে বাড়ির পাশেই একা খেলছিল। বেলা ১২টা নাগাদ মা পূজা সিংহ খেয়াল করেন, ছেলের কোনও আওয়াজ শোনা যাচ্ছে না। প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন, ছেলে চুপচাপ রয়েছে। বেশ কিছু ক্ষণ পরে তাঁর সন্দেহ হয় বলে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন।

বাইরে এসে খুঁজতে শুরু করেন পূজা। তাঁদের বাড়ির অদূরে নির্মীয়মাণ একটি বাড়ির পাশে রয়েছে পরিত্যক্ত পাতকুয়োটি। তার সামনে ছেলের চটি পড়ে থাকতে দেখেন পূজা। এগিয়ে গিয়ে তিনি দেখেন, পাতকুয়োর জল নড়ছে। তখন তিনি প্রতিবেশীদের বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে আসেন সাঁপুইপাড়া-বসুকাঠি পঞ্চায়েতের প্রধান বাবু মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধারের ব্যবস্থা শুরু করি।’’ খবর পেয়ে নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ ও দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।

পুলিশ ও দমকল সূত্রের খবর, পাতকুয়োটির প্রায় পুরোটাই জলে ভর্তি ছিল। ফলে শিশুটি নীচে পড়ে রয়েছে কিনা, সেটা বোঝা যাচ্ছিল না। শেষে পাতকুয়ো থেকে জল কমানোর পরিকল্পনা করা হয়। বাবু জানান, প্রথমে ছোট পাম্প দিয়ে জল তোলা শুরু হয়। কিন্তু তাতে দেরি হওয়ায় বড় পাম্প দিয়ে জল তোলা হতে থাকে। অনেকটা জল তোলার পরে বোঝা যায়, পাতকুয়োর গভীরতা অনেক এবং সেখানে দুর্গন্ধ ও গ্যাস রয়েছে। এর পরেই বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন। এ দিকে, সময় যত গড়িয়েছে, ছেলের সন্ধান না মেলায় ততই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ধনরাজ ও পূজা।

শেষে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ডুবুরি ওই পাতকুয়োয় নামেন। উপর থেকে দড়ি ও অন্যান্য ব্যবস্থা করে সহযোগিতা করতে থাকেন দমকলকর্মীরা। দুপুর ২টো নাগাদ মোহিতকে উদ্ধার করে তুলে আনা হয়। তড়িঘড়ি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাবু বলেন, ‘‘এলাকায় খোলা পাতকুয়ো না রাখার জন্য পঞ্চায়েতের তরফে বার বার প্রচার করা হয়। কিন্তু কী ভাবে এখানে পরিত্যক্ত পাতকুয়োটি খোলা অবস্থায় ছিল, তার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

well Death Minor

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy