E-Paper

শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসে প্রশংসিত চন্দননগরের ছাত্র

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, ২০২৩ সালেই ওই উদ্ভাবনের জন্য মনীশ চন্দননগর মহকুমা এবং হুগলি জেলা স্তরে বিজ্ঞান কংগ্রেসে সুযোগ পায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:০১
নিজের তৈরি সামগ্রী হাতে মনীশ।

নিজের তৈরি সামগ্রী হাতে মনীশ। নিজস্ব চিত্র।

আকন্দ গাছের তন্তু থেকে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ, লাইফ জ্যাকেটের মডেল বানিয়ে জাতীয় শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসে প্রশংসিত হল চন্দননগরের খলিসানি বিদ্যামন্দিরের নবম শ্রেণির ছাত্র মনীশ নায়েক। ৩১তম জাতীয় শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেস সম্প্রতি হয় মধ্যপ্রদেশের ভোপালে।

মনীশ জানায়, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে স্কুলে আকন্দ গাছের ফল ফেটে তন্তু বেরোতে দেখে তার কৌতূহল হয়। এ থেকে সামগ্রী তৈরি করে পরিবেশকে দূষণমুক্ত করার ভাবনার কথা সে জানায় শিক্ষিকা মৃন্ময়ী ঘোষ ও চন্দ্রাণী রায়চৌধুরীকে। মনীশের কথায়, ‘‘তখন থেকে দিদিদের প্রশিক্ষণে কাজ শুরু করি। প্লাস্টিকের বিকল্প হিসাবে এটি উপযোগী হবে বলেই মনে হয়।’’

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, ২০২৩ সালেই ওই উদ্ভাবনের জন্য মনীশ চন্দননগর মহকুমা এবং হুগলি জেলা স্তরে বিজ্ঞান কংগ্রেসে সুযোগ পায়। বাংলার প্রতিনিধি হিসাবে জাতীয় স্তরেও যোগ্যতা অর্জন করে। প্রধান শিক্ষক শুভায়ন মিত্র বলেন, ‘‘জাতীয় শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসে কোনও স্থান অধিকার করতে না পারলেও
মনীশের উদ্ভাবনের প্রশংসা করেন সবাই।’’ ভারতের খুদে বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি সেখানে আমন্ত্রিত হিসাবে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, কুয়েত, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে পড়ুয়ারা এসেছিল।

মৃন্ময়ী ও চন্দ্রাণী জানান, তন্তু বিষয়ক বিভিন্ন সরকারি গবেষণা কেন্দ্রে মনীশকে নিয়ে গিয়ে তাঁরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের পরামর্শ অনুযায়ী আকন্দ গাছের তন্তুর বিভিন্ন বিশেষত্ব পরীক্ষা করেন। দেখা যায়, পাট ও তুলোর তুলনায় এই গাছ চাষে খরচ কম। অন্যান্য তন্তুর থেকে শক্তপোক্ত। বহন-ক্ষমতা বেশি। দেখতেও বেশ। রং করলে সহজে ওঠে না। তাঁদের ধারণা, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আকন্দ গাছ চাষ করে শিল্পে ব্যবহার করা গেলে আগামী দিনে এই তন্তুর গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে, প্লাস্টিক-নির্ভরতা কমবে। মনীশ জানায়, এ ব্যাপারে গবেষণা চালাতে চায় সে।

প্রধান শিক্ষক জানান, খেলাতেও পারদর্শী মনীশ। সম্প্রতি জাতীয় বিদ্যালয় ক্রীড়ায় অনূর্ধ্ব ১৪ কবাডিতে বাংলা দলের সদস্য ছিল সে। তাঁর কথায়, ‘‘পনেরো দিনের ব্যবধানে দু’টি বিপরীতধর্মী ইভেন্টে বাংলার প্রতিনিধিত্বের সুযোগ খুবই সম্মানের।’’

মনীশের বাবা অভিজিৎ নায়েক মোটরভ্যান চালান। মা কল্যাণী গৃহবধূ। দু’বছরের মেয়েকে নিয়ে তাঁরা সিঙ্গুরের উত্তর মামুদপুর গ্রামে থাকেন। মনীশ থাকে চন্দননগরে দাদুর বাড়িতে। দাদু মোহন দাস টোটোচালক। তিনি বলেন, ‘‘চাই, নাতি প্রতিষ্ঠিত হোক। কষ্ট করেই ওর খেলা এবং পড়াশোনা চালাচ্ছি। তবে কত দিন পারব, জানি না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Chandannagar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy