উদয়নারায়ণপুরে নামানো হল সেনা। ছবি: সুব্রত জানা।
ঘন নীল আকাশ জানান দিচ্ছে, উৎসব আসন্ন। কিন্তু মাটির মানুষগুলোর চোখ-মুখে উদ্বেগ, আতঙ্ক আর দিশাহীনতার ঘনঘটা। ধেয়ে আসছে ঘোলা জল। ডুবছে রাস্তাঘাট, খেতখামার, ঘরদোর। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে কেউ ছুটছেন ত্রাণ শিবিরে, কেউ পড়শির দোতলা পাকা বাড়িতে।
শুক্রবার দুপুরের এ ছবি উদয়নারায়ণপুরের। দামোদর দিয়ে আসা ডিভিসি-র ছাড়া জল বাঁধ উপচে বিকেলের মধ্যেই ভাসিয়ে দিল এই ব্লকের ১১টির মধ্যে ১০টি পঞ্চায়েত। ডুবল আমতা-উদয়নারায়ণপুর এবং উদয়নারায়ণপুর-হাওড়া ভায়া মুন্সিরহাট রাজ্য সড়ক। দুই রাস্তাতেই বন্ধ হয়ে গেল যান চলাচল। দু’মাসের ব্যবধানে ফের বানভাসি হলেন এই ব্লকের প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকাল থেকেই সেনা নামানো হয়। এ ছাড়াও উদ্ধারকাজে নেমেছে জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। আজ, শনিবার পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
এ দিন বানভাসি পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেয়েছে মাত্র একটি পঞ্চায়েত— খিলা। উদয়নারায়ণপুর ব্লক প্রশাসন কার্যালয়কে সেখানেই সাময়িক ভাবে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। রাত পর্যন্ত ১৬ হাজার মানুষকে মোট ৯২টি ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে এবং সেখানে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে বলে জানান বিডিও সুব্রত শীট।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, ডিভিসি ১ লক্ষ কিউসেকের উপরে জল ছাড়লেই উদয়নারায়ণপুর ভেসে যায়। অগস্টের প্রথম সপ্তাহে ডিভিসি ১ লক্ষ ৭০ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছিল। তাতেই ডুবে গিয়েছিল পুরো ব্লক। এই দফায়, বৃহস্পতিবার ডিভিসি জল ছাড়ে ২ লক্ষ ৩১ হাজার কিউসেক। শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অবশ্য জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়ে করা হয় ১ লক্ষ ৮০ হাজার কিউসেক। তাতে লাভ হয়নি।
সব জল এসে পৌঁছলে কী হবে, এটাই এখন চিন্তা প্রশাসনের কর্তাদের। পড়শি ব্লক আমতা-২ এ দিন ডোবেনি। আজ, শনিবারেই পরিস্থিতি টের পাওয়া যাবে বলে জানান তাঁরা। বন্যা মোকাবিলার প্রস্তুতিতে শুক্রবার দফায় দফায় বৈঠক করেন জেলাশাসক মুক্তা আর্য, আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল, বিডিও মাসিদুর রহমান-সহ প্রশাসনের কর্তারা। আমতাতেও অগস্টের প্রথম সপ্তাহে বন্যা হয়েছিল। এ বারও তার পুনরাবৃত্তি হবে বলে জেলা প্রশাসনের আশঙ্কা। সে ক্ষেত্রে, ব্লকের ১৪টি পঞ্চায়েতেই বন্যা পরিস্থিতি হতে পারে বলে
বিধায়ক সুকান্তবাবু জানান। এখানেও সেনা মোতায়েন রাখা হয়েছে। আনা হয়েছে জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy