এ ভাবেই সেজে উঠেছে অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্র। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
দেওয়ালে দেওয়ালে ফুটে উঠছেল ময়ূর, শেয়াল, হনুমানের ছবি। সঙ্গে অক্ষর, সংখ্যাও।
আর সেই ভাঙাচোরা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নয়। ভোল বদলাচ্ছে আরামবাগের ন’টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। শিশুর শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক ভিত তৈরি করার লক্ষ্যে গড়ে ওঠা ওই কেন্দ্রগুলি দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় ‘খিচুড়ি সেন্টার’ নামে পরিচিত। শিশুরা আসত না, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না করা খিচুড়ি পরিবারের লোকরা নিয়ে চলে যেতেন। এ বার কেন্দ্রগুলিকে আকর্ষণীয় করে প্রকৃত ‘শিশু আলয়’ হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে।
আরামবাগ ব্লক প্রশাসন থেকে গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিলে ইতিমধ্যে তিরোল পঞ্চায়েতের ভাবাপুরের ভগ্নদশা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি ১২ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা ব্যয়ে আমূল সংস্কার হয়েছে। সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের (আইসিডিএস) আওতায় আপাতত মোট ৯টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র সংস্কারের ছাড়পত্র মিলেছে।
আরামবাগের সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক (সিডিপিও) সায়ন্তন জোয়ারদার বলেন, “নতুন মডেলের এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি প্রকল্পের লক্ষ্যপূরণে নিশ্চিত ভাবে সফলতা আনবে।” বিডিও কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্রগুলিকে সাজানোর ভাবনা আমাদের। শিশুদের ভাল লাগবে, মনের আনন্দে খেলবে, বিভিন্ন জীবজন্তু, অক্ষর দেখে অভ্যস্ত হবে এবং সর্বোপরি কেন্দ্রে যেতে চাইবে এমনই সব ছবিতে সব ক’টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র সাজিয়ে তুলব আমরা।”
যে শিল্পীকে কাজটা করছেন, সেই সন্দীপ পাল বলেন, “বিডিও-র পরামর্শ মতোই শিশুদের যাতে পড়াশোনায় বা পরবর্তীতে স্কুলে যেতে আগ্রহ হয় সে রকম ভাবেই কেন্দ্রগুলি সাজানো হচ্ছে। পাশাপাশি রং চেনা, সংখ্যা ও অক্ষর চেনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তা ছাড়া, ছোটরা নিজেরা আঁকিবুঁকি করবে এ রকম জায়গাও দেওয়ালে রাখা হয়েছে।”
করোনা আবহে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি এখনও খোলেনি। ভাবাপুর অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী নীলমণি মুর্মু বলেন, “কেন্দ্রটি এতদিনে শিশুদের কাছে আকর্ষণীয় হল। আগে এক শতক জায়গার উপর পাঁচ ইঞ্চির গাঁথনি এবং টিনের ছাউনি ছিল। হনুমানের অত্যাচারে টিনের ছাউনি ফুটো হয়ে ভিতরে জল পড়ত। চাল-ডাল সবই নষ্ট হয়েছে বহুবার। কোভিডের আগেও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শিশুরা আসত না, পরিবারের লোকরা খাবার নিয়ে চলে যেতেন। এখন কিছুটা জায়গা বাড়িয়ে নতুন করে গড়া হয়েছে। এখনও কেন্দ্র খোলেনি। তবু শুধু ছবিতে সাজানো ঘর দেখতেই শিশুদের ভিড় হচ্ছে।”
সুজাতা মালিক নামে এক অভিভাবক বলেন, “আগে সেন্টারমুখী হতে চাইত না শিশুরা। এখন তাকে এখানে নিয়ে আসতে বলে বাড়িতে বায়না করে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy